Alapon

আমরা সেরা দেশ, তাই এসব র‌্যাংকিং আমাদের জন্য কিছুই না!

একটা পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত টাইমস ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং নিয়ে দেশের প্রধান তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সহ কয়েকজন সিনিয়র অধ্যাপক এর সাক্ষাতকার ভিত্তিক একটি প্রতিবেদন পড়লাম। এই র‌্যাংকিং এ বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম না আসা বিষয়ে প্রায় সবাই ইনিয়ে বিনিয়ে যেই কারনগুলি বলেছেন তা হল
১. এই র‌্যাংকিং এর জন্য তথ্যগুলি অনলাইন থেকে নেওয়া হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আপডেটেড তথ্য অনলাইনে থাকেনা।
২. এই র‌্যাংকিং এ গবেষনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের দেশে গবেষনার জন্য ফান্ডিং নাই।
৩. আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অবশ্যই বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি হয়। তারা পরবর্তিতে সাফল্য লাভ করে। কিন্তু র‌্যাংকিং যারা করেছে তারা তাকে গুরত্ব দেয়নি!!!

প্রতিবেদন এর সিনপসিস যা বুঝলাম আমাদের দেশের চা-চপ ভিসি সাহেবরা এটাই বুঝাতে চাচ্ছেন যে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অবশ্যই এগিয়ে আছে তবে র‌্যাংকিং এর গবেষনা যারা করেছে তারা হয় ভুল করে বা ঈর্ষান্বিত হয়ে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় কে জায়গা দেননি!

এই র‌্যাংকিং এ ভারতের অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে এগুলি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এর বেশির ভাগই ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউ অফ টেকনলজি বা ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট নামে পরিচিত। বাংলাদেশে একসময় বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি নামে চারটি প্রকৌশল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। ২০০৩/০৪ সালের দিকে এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিশ্ববিদ্যালয় নামকরন করা হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য এই প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষার্থীরা যখন কঠোর আন্দোলন করছে তখন একজন কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এই নামকরন এর ফলে তাদের কি লাভ হবে? বেশ কড়া কন্ঠে সেই বন্ধু ভাষন দিয়েছিলেন যে ই্নউভার্সিটি নাম করন করলে শিক্ষার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বে নাকি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়েল ডিগ্রির কদর আছে। এই সব ইন্সটিটিউ কে কেউ চিনেওনা!

তখনও ্েটা অবশ্য জানা ছিল যে ভারতে আইঅইটি গুলি বিশ্বমানের ইন্‌সটিটিউট হিসেবে স্বিকৃত। কিন্তু বলি নাই কারন তাতে উত্তেজিত ছাত্রটি ক কিছুই মানতনা কারন তার শিক্ষকরা তাকে এই শিক্ষায় দিয়েছেন যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলে মান বাড়বে।বিশেষ জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি আন্দোলন করে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে ডিগ্রি নেওয়া ছাত্রটি বর্তমানে অষ্ট্রেলিয়াতে ট্যাক্সি চালানর কাজ করেন!!!

ভারতের আরেকটা বিখ্যাত ইন্সটিটিউট হল হায়দারাবাদ এর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনলজি। এই প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিকবার প্রশিক্ষন নেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এর যে ল্যাব গুলি আছে তাতে একটা আস্ত মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা যায়। এই প্রতিষ্টানটি সরকারী। কিন্তু ল্যাবগুলি স্থাপিত হয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিকম কোম্পিানির সাহাজ্যে। শর্ত হচ্ছে এই ল্যাবগুলি শুধু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থিরাই নয় বরং বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত সাধারন টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষন এর জন্যও ব্যবহার করতে পারবে। আমাদের দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়কি এমন সুযোগ দেবে? আমি জানি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বলে বিখ্যাত ইন্সটিটিউটের ল্যাব এর জন্য অর্থ দিয়েছিল একিটি বহুজাতিক কোম্পানি। পরে সেই ল্যাব এ তাদের বেতনভুক্ত কর্মচারিদের জন্য একটি প্রশিক্ষন এর েোয়াজন করতে চাইলে তারা বাধা পায়। বলা হয় যে তাদের অনেক কর্মচারিই শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে তাই তাদের কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব এ প্রশিক্ষন নিতে দেওয়া উচিত হবেনা!!!!

আমরা আসলেই সেরা দেশ তাই এসব র‌্যাংকিং আমাদের জন্য কিছুই না!!!!

পঠিত : ১০১০ বার

মন্তব্য: ০