Alapon

ধর্ষণ ও পরকীয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ...

বিগত বেশ কয়েকবছর থেকে বাংলাদেশে ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু ধর্ষণই নয়, গণধর্ষণও হচ্ছে। গত নির্বাচনের সময় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অপরাধে কয়েকজন আওয়ামিলীগ নেতা এক নারীকে গণ ধর্ষণ করে। এরপর সুবর্ণচরে আরও কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পর্যায়ক্রমে প্রায় সারাদেশেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। চলতি সপ্তাহে কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে এক নার্সকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে এই ধর্ষণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ কি?

কারণ অনেককিছুই হতে পারে। তার মধ্যে অনেকে বলে থাকেন, ধর্ষণের পিছনে পোশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। কিন্তু আমার তা মনে হয় না। পোশাক একটা উপলক্ষ্য মাত্র, কিন্তু মূল কারণ নয়। খোলামেলা পোশাক পরিহিত নয়, বোরখা পরিধানকারীদের মধ্যে কতক মেয়েও ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। তাহলে এখানে ধর্ষণের প্রধান কারণ কী?

আমার স্বল্পজ্ঞানে যা মনে হয়, তা হল অপারধ কখনো প্রচার করতে হয় না। জনসচেতনতা তৈরীতে সেই অপরাধকে জনমানুষের সামনে প্রকাশ করা উচিত নয়। কিন্তু প্রকাশ তো হচ্ছেই সাথে সাথে সেই ঘটনাগুলোকে নাট্যরূপ দিয়ে টিভিতে প্রচার করা হচ্ছে। টেলিফিল্ম হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। আর বাংলা সিনেমায় কোনো না কোনো ধর্ষণের চিত্র থাকাটাই যেন বাধ্যতামূলক! কিন্তু আমি দেখেছি, গ্রামের টং দোকানগুলোতে ভিসিয়ারে যখন বাংলা ছবি দেখানো হয়, আর যেসময় এই ধর্ষণের চিত্র দেখানো হয়, তখন ছেলেবুড়ো সবাই দাত কেলিয়ে হাসে! আর কারও বা মুখ দিয়ে রস পড়ে!

এগুলো নাকি জনসচেতনতার জন্য দেখানো হয়। কিন্তু এই দৃশ্য দেখে, অধিকাংশেরই যৌন সুরসুরি শুরু হয়। কেউবা মুখে শব্দ করে বলে, ‘আরি শ্যালা, মালটাকে এমনে খাইয়্যা দিলো!’

তাদের এই প্রতিক্রিয়াই আজকের এই ধর্ষণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আমি মনে করি। বছর তিনেক আগে রাজশাহীর কাজলায় একটি আবাসিক হোটেলে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। সেই খুনের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের তিন বছর পরে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তারা বলেন, ‘ভারতীয় চ্যানেলের ক্রাইম পেট্রোল অনুষ্ঠান দেখে তারা হত্যার পরিকল্পনা আটে। সেই অনুষ্ঠান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রথমে তারা ধর্ষণ করে তারপর হত্যা করে।’

এরপর আসি পরকীয়ায়। পরকীয়া নতুন কিছু নয়। সভ্যতার শুরু থেকেই পরকীয়া চলে আসছে। কখনও এর সংখ্যা ছিল কম আর কখনও বেশি। বর্তমানে এর পরিমাণটা ঢের বেশিই মনে হচ্ছে।

বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে আমার মনে হয়, ‘আল্লাহর রাসূলের হাদীসকে অমান্যকরা। এক হিসেবে দেখা যায়, পরকীয়া বেশি হয় দেবর এবং ভাবির মধ্যে। আমাদের সুশীল সমাজের কাছে দেবর মানে দ্বিতীয় বর। যার কারণে, ভাবির সাথে দুস্টামো অবাধ মেলামেশা করার সুযোগ তৈরী হয়। যার ফলে বিশৃঙ্খলা হওয়ার সুযোগ তৈরী হয়। আর আল্লাহর রাসূল বলেছেন, ‘দেবর কে তেমনি করে ভয় করা উচিত যেমন করে মৃত্যুকে ভয় কর।’

কিন্তু আজকাল কেউ যদি ভাবির সাথে মনখুলে না মিশে তাহলে সেই হয়ে যায়, নোংরা ও ছোট মনের মানুষ। আর মানুষের এই সকল কথা থেকে বাচতে যখন অবাধ মেলামেশা করে তখনই পরকীয়ার সুযোগ তৈরী হয়ে যায়।

আমার কাছে ধর্ষণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ মনে হয়, এর অবাধ প্রচার। অন্যায় বা অপরাধের প্রচার করতে নেই। যে সমাজে অন্যায় বা অপরাধের প্রচার বেশি, সেই সমাজে অন্যায়টাও ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই আমার মনে হয়, ধর্ষণ নিয়ে প্রচার না করে ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। সেইসাথে পরকীয়ার ক্ষেত্রেও তাই। অপরাধ প্রকাশ করতে হয় না, নীরবে নির্মূল করতে হয়।

পঠিত : ৯৯১ বার

মন্তব্য: ০