Alapon

বিশ্বের যেসব দেশে দীর্ঘ সময় রোজা পালন করতে হয়...

চলছে পবিত্র রমজান মাস। এই মাস ঘিরে পুরো মুসলিম বিশ্বে আনন্দঘণ পরিবেশ বিরাজ করে। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার বাসিন্দা হিসেবে ১৪-১৫ ঘন্টা করে রোজা পালন করে থাকি। কখনো তা ১৬-১৭ ঘন্টায় পৌঁছায়। কিন্তু এর বাহিরে অনেক দেশই আছে যেখানে ২০-২২ ঘন্টা রোজা পালন করতে হয়। সেইসব দেশের অবস্থাটা এমন, ইফতারির পর মাগরিবের নামাজ। তারপর এশার নামাজ। এরপর তারাবীর নামাজ পড়তে পড়তে সেহরির সময় হয়ে যায়। এটা ভীষণ কষ্টস্বাদ্ধ ব্যাপার। সেকারণে সেসব দেশের কতক মুফতি  ফতোয়া দিয়েছেন, এসব দেশের বাসিন্দারা পবিত্র নগরী মক্কার সময়নুসারে সেহরি ও ইফতারি করতে পারবেন। এতে রোজার ঘন্টা দাড়াবে ১৪-১৫ ঘন্টা। তদুপরি সেসব দেশে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনরা এতো দির্ঘসময় ধরে রোজা পালন করে চলেছেন। আসুন সেইসব দেশের কথা জেনে নেই। 

আইসল্যান্ড:

ইউরোপ মহাদেশের দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ড। এই দেশে মোট মুসলিম বসবাসকারীর সংখ্যা মাত্র ৭৭০ জন। আর এখানে রোজা পালন করতে হয় প্রায় ২২ ঘন্টা। খুব সম্ভবত এই রমজানে আইসল্যান্ডের অধিবাসীরাই দির্ঘসময় ধরে রোজা পালন করছে। এই রমজানে আইসল্যান্ডে সেহরি খেতে হচ্ছে রাত ২ টায়। আর ইফতারি করতে হচ্ছে পরেরদিন রাত ১২টায়। প্রায় ২২ ঘন্টা সময়। আইসল্যান্ডের মুফতিরা ফতোয়া দিয়েছেন, কেউ যদি এতো দির্ঘসময় রোজা রাখতে অপরাগতা প্রকাশ করে তাহলে তারা পবিত্র মক্কা নগরীর সময়নুসারে রোজা রাখতে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের রোজার সময় হবে ১৫ ঘন্টা। প্রায় ৭ ঘন্টা কম। কিন্তু অধিকাংশ আইসল্যান্ডবাসীই তাদের নিজেদের সময়নুসারে রোজা পালন করে চলেছে বলে জানা যায়। 

সুইডেন:

শান্তির দেশে হিসেবে পরিচিত সুইডেন। এই দেশে প্রায় ৫ লক্ষ মুসলিম জনগোষ্ঠির বসবাস। দেশটি এমনিতে শীতপ্রধান দেশে হলেও গ্রীষ্মেও দারুণ তাপদাহ হয়। সেসময় গরমের কারণে ঘরের বাহিরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। ইউরোপ মহাদেশের এই দেশে মুসলিমদের প্রায় ২০ ঘন্টা রোজা পালন করতে হচ্ছে। এখানে ইফতারি করার মাত্র ৪ ঘন্টা পরেই সেহরি খেতে হয়। এরই মাঝে আবার তারাবীর নামাজ। তদুপরি সুইডেনে বসবাসরত মুসলিমরা পবিত্র রমজান মাস বেশ গাম্বীর্যের মাঝেই পালন করছে বলে জানা যায়।

আলাস্কা:

যুক্তরাষ্ট্রের উপদ্বীপ আলাস্কা। এই উপদ্বীপে ৩ হাজার মুসলমানের বসবাস। গ্রীষ্মের সময় এখানে প্রচন্ড গরম থাকে। আর এখানে রোজার সময় ১৯ ঘন্টা ৪৫ মিনিটের মত। যার কারণে গরমকালে এখানে রোজা পালন করা ভীষণ কষ্টস্বাদ্ধ ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। আর একারণে এখানকার অনেকেই পবিত্র মক্কা নগরীর সাথে সময় মিলিয়ে রোজা পালন করছেন। 

জার্মানি:

বিশ্ব মানচিত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ জার্মানি।  এই দেশে মুসলিম জনগোষ্ঠির বসবাস প্রায় ১০ লাখ। জার্মানির মুসলিমদের রোজা পালন করতে হয় প্রায় ১৯ ঘন্টা। এখানে সেহরি করতে হয় রাত ৩ টায় আর ইফতারি করতে হয় রাত ১০ টায়। এখানকার মুসলিস জনগোষ্ঠির জন্য এতো দির্ঘসময় ধরে রোজা রাখা সত্যিই চ্যালেঞ্জের বিষয়। 

ইংল্যান্ড:

ইংল্যান্ডে মুসলিম বসবাসকারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। আর এখানে রোজার সময় প্রায় ২০ ঘন্টা। এতো দির্ঘসময় ধরে রোজা পালন করা যা অনেকের পক্ষে অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাড়ায়। বিশেষ করে যারা ডায়বেটিকস বা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাদের জন্য ভীষণ কষ্টের। 

 

কিন্তু তদুপরি এইসব দেশের মুসলিমরা পবিত্র রমজান মাসের যথাযথ সম্মান ও ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে রমজান পালন করে চলেছে। রমজান বছরে আসে একবার। আর এই মাসটি মুসলিমদের তাকওয়া অর্জনের মধ্য দিয়ে এক নতুন দিগন্তে পৌঁছে দেওয়ার আহব্বান জানায়। 

পঠিত : ১১৫০ বার

মন্তব্য: ০