Alapon

রমাদান রহমত না গজব?

অসংখ্য কল্যাণ, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের হাতছানি দিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। মাসটির অফুরন্ত কল্যাণ বুঝাতে গিয়ে চমৎকার দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন মুজাদ্দিদে আলফেছানি রহ.। তিনি বলেন, একটি বিশাল সমুদ্র। ওই সমুদ্র থেকে আঙ্গুলের ডগায় করে যদি এগার বারে এগার ফোঁটা পানি তোলা হয়। তাহলে এগার মাসের দৃষ্টান্ত হল, এগার ফোঁটা পানি। আর গোটা সমুদ্রটাই হচ্ছে রমজানের দৃষ্টান্ত। সুতরাং আমরা কল্পনাও করতে পারব না যে, এই মাসে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কী পরিমাণ কল্যাণ দিতে চান!

আবার রমজান কিন্তু গজবেরও। কারণ এই রমজানকে কেন্দ্র করেই জিবরাইল আলাইহিসসালামের একটা বদদোয়া আছে, যে বদদোয়ার সঙ্গে নবীজি ﷺ-এর ‘আমীন’ আছে। স্থানটা ছিল মসজিদে নববি। নবীজি ﷺ ছিলেন মিম্ববের প্রথম ধাপে। 

জিবরাইল আলাইহিসসালাম বদদোয়া করে বসলেন, بَعُدَ مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ ، فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ ‘যে ব্যক্তি রমজান পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না, সে আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে দূরে সরে যাক।’ আর আল্লাহর তাআলার রহমত-বঞ্চিত হওয়াটাকেই পরিভাষায় ‘গজব’ বা লানত বলা হয়। প্রতি উত্তরে নবীজি ﷺ বললেন, ‘আমীন’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! কবুল করে নিন! 
(বাইহাকি, শুয়াবুল ঈমান ১৬৬৮)

অপর বর্ণনায় এসেছে, জিবরাইল আলাইহিসসালাম বলেছিলেন,
رَغِمَ أَنْفُ عَبْدٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ لَمْ يُغْفَرْ لَهُ 
ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক, যে রমযান পেয়েও নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না। নবীজি ﷺ বলেন, তখন আমি বললাম, আমীন। 
(আলআদাবুল মুফরাদ ৬৪৬)

একটু অন্তরটাকে নাড়া দিন। অনুভতিকে জাগ্রত করুন যে, যে বিষয়ে জিবরাইল আলাইহিসসালামের মত ফেরেশতা বদদোয়া করেছেন, নবীজি ﷺ ‘আমীন’ বলেছেন। তাও আবার মসজিদে নববিতে! সে বিষয়টা কতটা নাজুক ও হৃদয়স্পর্শী হতে পারে। এমনিতে নবীজি ﷺ-এর নেকদোয়া কিংবা বদদোয়া আল্লাহ তাআলার কাছে মকবুল, সেখানে আবার যুক্ত হয়েছে মসজিদে নববি–যা দোয়া কবুলের অন্যতম স্থান হিসেবে আমরা সকলেই জানি। সুতরাং রমজান পাওয়ার পরেও যে ব্যক্তি গুনাহ মাফ করতে পারবে না; না জানি সে কত বড় বদ নসিব!


সংগৃহিত

পঠিত : ৯৫৪ বার

মন্তব্য: ০