Alapon

আধুনিক সময়ের অত্যাধুনিক মার্কিন সভ্যতা।

বাগদাদ শহরের একটি বাড়িতে মার্কিন সেনারা হানা দিয়েছে। সেই বাড়িতে সব তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালানো হল। কিন্তু কিছুই পাওয়া গেল না। এমন সময় বাড়িতে হাজির হল আবীর আল জানাবি। ঐ বাড়ির মালিকের একমাত্র মেয়ে সন্তান। আবীর আল জানাবিকে দেখা মাত্রই মার্কিন সৈন্যরা তাকে জাপটে ধরল।


এই দৃশ্য দেখে, আবীর আল জানাবির মা এবং দাদি তার সাহায্যে এগিয়ে আসল। ঐ মুহুর্তে কমান্ডার তার উরুতে ঝুলে থাকা রিভালবারটি কাজে লাগাল। মাত্র দু’টি গুলি দিয়ে আবীর আল জানাবির মা এবং দাদির জীবন সাঙ্গ করে দিল। এবার বিনা বাধায় আবীর আল জানাবীকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে রুমের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।


ঠিক ঐ মুহুর্তে এফবিআই এজেন্ট জর্জ পিয়েরু ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে সেফ হোমে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। জর্জ পিয়েরুর জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ এই কাজের উপর নির্ভর করছে তাদের পদোন্নতি। জর্জ পিয়েরু সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে সাইকোলজিক্যাল খেলা খেলতে থাকে। সে সাদ্দাম হোসেনের আস্থাভাজন হবার জন্য দির্ঘ সময় ধরে সময় কাটাতে থাকে।


এক সময় জর্জ পিয়েরু বুঝতে পারে, সে সাদ্দাম হোসেনের ব্যক্তিত্বের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পড়ছে। কিন্তু প্রভাবিত হলে চলবে না, তাকে তার কাজ করতে হবে। কাজ একটাই সাদ্দাম হোসেন সেই মরনাস্ত্রগুলো কোথায় রেখেছে? 
এভাবেই ৫ মাস কেটে গেল। এরপর একদিন জর্জ পিয়েরু তাকে একটি ভিডিও দেখাল। যে ভিডিওতে সাদ্দাম হোসেন জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। আর সেই ভিডিওতে তিনি ইরানকে হুমকি প্রদান করেন।


জর্জ পিয়েরু তাকে বলে, ‘আপনি এই হুমকি কেন দিয়েছিলেন? আপনার কাছে কি ইরানকে প্রতিহত করার মত অস্ত্র ছিল’? সাদ্দাম হোসেন হেসে বলেন, ‘এটা আমার একটি চালাকি ছিল। এমন হুমকি না দিলে তো ইরান আমাকে ভয় করতো না। বরঞ্জ আমার দেশে হামলা করে বসত।’ তখন জর্জ পিয়েরু বলে, ‘তার মানে আপনার কাছে আসলেই কোন অস্ত্র নেই’! সাদ্দাম হোসেন বলেন ‘না! আমার কাছে কখনোই এমন অস্ত্র ছিল না’। 
এজেন্ট জর্জ পিয়েরু তার উত্তর পেয়ে গেছেন। তিনি এফবিআই অফিসে রিপোর্ট জমা দিলেন। ‘ইরাকে কোন বিধ্বংসী মরনাস্ত্র নেই’।


এদিকে বাগদাদের সেই বাড়িতে নেমে এসেছে জাহান্নামের ভয়াবহতা। নিজেদেরকে সবচেয়ে সভ্য দাবীকারি আমেরিকান সৈন্যরা ৫ জন মিলে আবীর আল জানাবিকে ধর্ষণ করল। ধর্ষণের পরে তার কপালে গুলি করে দিয়ে তাদের সভ্যতার নজির স্থাপন করল।


আগামীকাল নতুন বছর। টিভিতে সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসির ছবি দেখানো হচ্ছে। জর্জ পিয়েরুও সেই ভিডিও টিভিতে দেখলেন। কিন্তু পিয়েরু আনন্দ অনুভব করলেন না। তার চোখের কোনায় কোথায় যেন কষ্ট জমা হতে লাগল। কিন্তু এসব আবেগকে মূল্য দিলে চলবে না। আমেরিকার একজন শত্রুকে আজ ফাঁসি দেওয়া হল। এটাই সবচেয়ে মূলবান কথা।


তারপর এজেন্ট জর্জ পিয়েরু নিউ ইয়ারকে বরণ করতে চলে গেল নাইট ক্লাবের দিকে। আর সত্য উদঘাটনের পরও মার্কিন সৈন্যরা অস্ত্রের খোঁজে ইরাকের উপর একের পর এক বোমা বর্ষণ করেই চলেছে। এটাই হল আধুনিক সময়ের সবচেয়ে আধুনিক সভ্যতা।

পঠিত : ৫৪৫ বার

মন্তব্য: ০