Alapon

আমি শাহাদাতের প্রতিক্ষা করছি...

২০০৪ সালের ২২ মার্চ, ভোর ৫ টা! ফিলিস্তিনের পূব আকাশে মাত্র সূর্যের আভা দেখা যাচ্ছে। মসজিদ থেকে বেরিয়ে আসছেন ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলন হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমাদ ইয়াসিন।

ঠিক এমন সময় ফিলিস্তিনের আকাশে দেখা গেল ইসরাইলি বিমান। সেই বিমান থেকে শেখ আহমাদ ইয়াসিনকে লক্ষ্যকে তিনটি রকেট ছোড়া হল। মুহুর্তের মধ্যেই সবশেষ!

শেখ আহমাদ ইয়াসিন মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। শাহাদাতের অমীয়পিয়ালা পান করেন। শেখ আহমাদ ইয়াসিনের উপর এমনভাবে হামলা করা হয়, তাঁর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। তাঁকে দেখে চেনার উপায় ছিল না। কিন্তু তারপরও ফিলিস্তিনের আপামর জনতা তাদের নেতার রক্তমাখা কপালে শেষবারের মত চুমু দিতে ভুলে যায়নি!

শেখ আহমাদ ইয়াসিনের শেষ দিন সম্পর্কে তাঁর স্ত্রী উম্মে মুহাম্মাদ বলেন, ‘শহীদ হওয়ার আগের দিন শেখ আহমাদ ইয়াসিন তাঁর সন্তানদের ডেকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে, খুব শীঘ্রই আমি শহীদ হতে যাচ্ছি! শাহাদাতই আমার কাম্য। আমি আখিরাতে কল্যাণ কামনা করি, দুনিয়া চাই না।’

শহীদ আহমাদ ইয়াসিনের স্ত্রী আরও বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী বিগত বেশ কয়েক বছর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল। যার কারণে, গত দু’বছর ধরে তিনি অজ্ঞাত স্থানে রাত্রি যাপন করতেন। কিন্তু শহীদ হওয়ার দিন রাতে তিনি মসজিদে অবস্থান করেন। ফজরের নামায শেষে বের হওয়ার পথে, মসজিদের গেটেই শাহাদাত বরণ করেন।’

শাহাদাতের তিন ঘন্টা পূর্বে শেখ আহমাদ ইয়াসিনের ছেলে তার বাবাকে ইসরাইলি বাহিনীর তৎপরতার কথা জানান। সেই সাথে বলেন, ‘ফিলিস্তিনের আকাশে ইসরাইলি বিমান চক্কর দিচ্ছে।’
জবাবে শেখ আহমাদ ইয়াসিন বলেন, ‘আমি শাহাদাতের প্রতিক্ষা করছি। আমি এবং আমরা সকলেই আল্লাহর। আর আমাদের আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’

আলী আহমাদ মাবরুর ভাই রচিত ‘মুক্তির লড়াইয়ে হামাস’ বইটি সম্পাদনা করতে গিয়ে উপরোক্ত ঘটনাটি পড়লাম। ঘটনাটি পড়ে পুরো শরীর যেন শিঁউরে উঠছে! চোখ দুটি বারবার ভিজে যাচ্ছে। আল্লাহু আকবার!

আল্লাহর প্রিয় বান্দারা সম্ভবত এমনই হয়! তাঁরা সবসময় মহান রবের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য মুখিয়ে থাকেন। আল্লাহ শেখ আহমাদ ইয়াসিনের শাহাদাত কবুল করুন। তাঁকে শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। আমিন।

পঠিত : ১৫৪৪ বার

মন্তব্য: ০