Alapon

ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন; এবার কি সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকারটাও ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছেন?

পাশের রুমের কয়েকজনকে দেখলাম, মশারি কিনেছে! অথচ এতোদিন মশারি ঝুলানো তো দূরের কথা, মশারিই ছিল না। অন্যদিকে মশারির দোকানির মুখে হাসি। বেচা-কেনা মাশা আল্লাহ, ভালোই চলছে। এই অবস্থা দেখে বুঝা যায়, কারো পৌষ মাস আর কারও বা সর্বনাশ!

সর্বনাশটা বরাবরই আম পাবলিকদেরই হয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০ জন মৃত্যু বরণ করেছে। তাদের মধ্যে আছেন ডাক্তার, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। গতকাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী মৃত্যু বরণ করেছে। আজ পত্রিকার পাতায় দেখলাম ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের প্রায় হাজার খানিক পুলিশ সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।

তারপরও বিগত কয়েকদিন ঢাকা সিটির মেয়রদ্বয়ের বক্তব্য শুনলে মনে হবে, ডেঙ্গু আতঙ্ক সব মিডিয়ার সৃষ্টি এবং বিএনপির অপপ্রচার।

একটি দেশের নাগরিক তার সরকারের কাছ থেকে ৫ টি মৌলিক অধিকার পাওয়ার অধিকার রাখে। তার মধ্যে অন্যতম সুচিকিৎসা। বাংলাদেশের আপামর জনতা বিগত কয়েকবছর থেকে যেমন ভোটাধিকার থেকে বঞ্জিত হচ্ছে, এবারের ডেঙ্গু প্রকপ থেকে এটা স্পষ্ট হল জনগন তার সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকারটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। যার দরুন মেয়র মহোদয় বলছেন, ‘ডেঙ্গু’ একটি গুজব। ডেঙ্গু পরিস্থিতি এমন কোনো পর্যায়ে পৌছায়নি, যাতে আতঙ্কিত হওয়া যায়! এসবই অপপ্রচার। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের সুরে বলতে চাই,ডেঙ্গু আতঙ্ক সেই সুদূরে লন্ডন থেকে তারেক রহমান পাঠিয়েছেন নিশ্চয়ই!

সরকার এবং দুই মেয়র বলছেন, এসব আতঙ্ক তখন পত্রিকা বলছে ভিন্ন কথা। বিগত কয়েকদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০ হাজারেরও বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসব নিয়েও সরকারের রাজনীতির শেষ নাই। সরকার বলছে, প্রয়োজন না থাকা স্বত্ত্বেও মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাদের কথা শুনে মনে হয়, বাংলাদেশের হাসপাতালগুলো যেন এক একটা ফাইভ স্টার হোটেল! মানুষ মনের আনন্দে নাচতে নাচতে সেখানে থাকার জন্য ভর্তি হচ্ছে।

সরকারের উদাসিনতার সুযোগে ডেঙ্গু এখন আর শুধু ঢাকাতেই নয়, ঢাকার বাহিরেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও নতুন নয়টি জেলায় ডেঙ্গু রোগীর খবর দিয়েছে। জেলাগুলো: ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ; চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী; খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ। এ নিয়ে মোট ১৯টি জেলায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলো। এর আগে গাজীপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, খুলনা, যশোর, বগুড়া, বরিশাল, ফরিদপুর ও রাজশাহী জেলার তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ভোটাধিকার না দেন, কিন্তু চিকিৎসাটা নিশ্চিত করুন! ডেঙ্গু নিয়ে বহু হাসি তামাশা করেছেন। আর আপনাদের হাসি তামাশার বলি হয়ে ইতোমধ্যে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাই এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। নচেৎ আপনাদের উদানিসতার বলি হয়ে অনেক মানুষকে প্রাণ হারাতে হবে। অন্তত জনসাধারণের সুচিকিৎসা পাওয়ার অধিকারটুকু নিশ্চিত করুন!

পঠিত : ৫৯৬ বার

মন্তব্য: ০