Alapon

বস্তির সেই ছেলেটি যখন বুয়েট গ্রাজুয়েট!!!!

বুয়েটের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে গিয়ে এক ছাত্র খুব গর্ব করে বলেছিল, "আমার মতো ছাত্র বুয়েট আর ২য়টি পাবে না, আর আসবেও না, আমিই শেষ। আমি আজ বেরিয়ে যাচ্ছি,আর কোনো দিন এই বুয়েটে আমার মতো কোনো ছাত্র ভর্তি হতে পারবে না। আজ আমি গর্বিত যে,এতো বড় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আমি ছাত্র ছিলাম।"সে কাঁদছিল আর কথাগুলো বলতেছিল।


তার এক স্যার এই গর্বিত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তখন সে বলেছিল, "কমলাপুরের রেলওয়ে স্টেশনের কাছে এক বস্তির ঘরে আমার জন্ম হয়েছে, আমি বস্তির ছেলে। ছোট বেলায় বাবা মারা যায়। মা দিনের বেলায় ভিক্ষাবৃত্তি করত আর রাতে এক বাসায় কাজ করত। আমি বস্তির এক স্কুলে পড়তাম।



ছোট থেকেই লেখা-পড়ায় চৌকস ছিলাম। স্কুলের ফাঁকে ফাঁকে আমি স্টেশনে বাদাম বিক্রি করতাম,স্টেশনে পড়ে থাকা ইংলিশ পত্রিকার টুকরা টুকরা কাগজ কুড়িয়ে পড়তাম। আমি যখন ক্লাস থ্রিতে উত্তীর্ণ হলাম, ঐ বস্তির স্কুলের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে।


আমার পড়া লেখার প্রতি আগ্রহ দেখে এক ভদ্রলোক আমার দিকে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে ছিল। সেই ভদ্রলোকটির জন্য আজ আমি এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছি। 
আজ মা বেঁচে নেই, থাকলে দৌড়ে গিয়ে জোর গলায় বলতাম, "মা! তোমার এই বস্তির ছেলে, বাদাম বিক্রিওয়ালা ছেলেটি আজ ইঞ্জিনিয়ার।" কিন্তু ভাগ্যর নির্মম পরিহাস, তিনি আজ নেই। আজ আমার একটাই পরিচয়, আমি বস্তির ছেলে। যা বলতে আমার এতটুকু দ্বিধাবোধ হয় না...


" এই রকম মন মানসিকতার অধিকারী আমরা কয়জন হতে পেরেছি? শতকরা একজনকেও পাওয়া যাবে না। আমরা নিজেকে কৃষকের ছেলে বা মেয়ে বলে পরিচয় দিতে হীনমন্যতায় ভুগি।যেখানে, বাংলাদেশ নিজেই একটি কৃষিপ্রধান দেশ.....অনেককেই ভাবতে দেখি, ধুর! আমিতো মধ্যবিত্ত, আমার দ্বারা বোধ হয় এটা হবে না.......
.
আরে, হবে কিভাবে!!! তুমি তো চেষ্টাই করনি!!! আমরা ভুলে যাই যে, আমরা বাংলাদেশী, আমাদের মধ্যে সামাজিকতা আছে, যা সারা বিশ্বের কোনো জাতির মধ্যে নেই। আমরা ইচ্ছা করলে সব পারি, "পারতেই হবে" কথাটা যে আমাদের রক্তে মিশে আছে....।।।


পঠিত : ১৪৫০ বার

মন্তব্য: ০