Alapon

ওয়াজের প্রধান অবজেক্টিভ হচ্ছে তফসিরে কোরআন-হাদিস, অন্য কিছু নয়...


ওয়াজের প্রধান অবজেক্টিভ হচ্ছে তফসিরে কোরআন-হাদিস, সাধারন মানুষকে কোরআনের অর্থ বুঝানো, ইসলাম শেখানো। এখন এই বুঝাতে গিয়ে অনেকেই ট্যাঞ্জেনশিয়াল পথে গিয়ে সত্যকে এক্সটেন্ড করতে করতে ভিন্ন পথে চলে যান বলে আমার মনে হয়েছে। যেখানে টেকনিক্যালি কিছু পয়েন্ট মিথ্যা কিংবা বানোয়াট পর্যন্ত হয়ে যায়। মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে নিজের বিদ্যা জাহির করাটা আমাদের জাতীয় স্বভাব, যা থেকে অনেক ওয়াজকারিও মুক্ত নন।


সব ওয়াজকারির কোয়ালিটি সেইম না, যেমন সবার জানার পরিমাণও সমান না। একজন হার্ভার্ড প্রফেসর আর ভুরুঙ্গামারি কলেজের প্রফেসরের জ্ঞানের যেমন তুলনা যেমন করা যায় না, তেমন সব ওয়াজকারিকে এক পরিমাপে তুলনা করে সব ওয়াজকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা আর জোক্স করা কিংবা গালিমন্দ করাকেও আমার কাছে ইম্যাচ্যুওর মনে হচ্ছে। কিংবা কারো মনে হয়তো লুকিয়ে আছে সুপ্ত ইসলাম বিদ্বেষ।


ওয়াজ আমার কাছে শিক্ষার একটা মাধ্যম বলে মনে হয়েছে। যেখানে শিক্ষক হচ্ছেন ওয়াজকারি আর ছাত্র হচ্ছে শ্রোতা আর দর্শক। ওয়াজ অত্যন্ত শক্তিশালী উপায় যাতে সহজে দ্রুততার সাথে সাধারন মানুষের কাছে কোরআনের শিক্ষা পৌঁছে দেয়া যায়। কিন্তু সেই শিক্ষায় যদি ভুল থাকে, ঘৃণার বক্তব্য থাকে, ইন্টলারেন্স থাকে, সমাজের একাংশকে দমিয়ে রাখার মেসেজ থাকে, তাহলে তা মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে। সমাজে আর ঘরে ঘরে অশান্তি শুরু হওয়ার শিক্ষাটাও ভুল ওয়াজ থেকে আসতে পারে। ধর্মকে উপরে তুলতে গিয়ে এসব ভুলে ভরা ওয়াজ ইসলামকে নীচে নামায়।


তাই ওয়াজের কোয়ালিটি কন্ট্রোল করা অত্যন্ত জরুরী। আমার মতে ওয়াজের জন্য লাইসেন্স চালু করার সময় হয়েছে। এর জন্য একটা রেগ্যুলেটরি বোর্ড থাকা আবশ্যক, যারা ট্রেইনিং দিয়ে, পরিক্ষা নিয়ে লাইসেন্স দিলেই একজন ওয়াজকারি সাধারন মানুষের সামনে ওয়াজ করতে অনুমতি পাবে।


সাধারন মানুষের বুঝার জন্য ওয়াজ বাংলা ভাষায় দিলেই ভালো, তবে তাতে আরবি আর ইংরেজি যোগ করলে কোন ক্ষতি নাই। আমাদের দেশের মানুষের একটা স্টাইল হয়ে গেছে কাউকে ইংরেজিতে কথা বলতে দেখলে তাঁকে ঢং কিংবা শো অফ করছে বলে মনে করা। এটা খুব অন্যায়। যে যেই ভাষায় সাছন্দ্য বোধ করে, কিংবা মনের ভাব প্রকাশ করতে পছন্দ করে তাঁকে তা করতে দেয়া উচিৎ। আবার অনেক ফিলিংস কিংবা ইন্সট্রাকশান আছে যা ইংরেজতে যেমন সহজ হয় কিংবা বুঝানো যায় তা বাংলায় যায় না। তাই এই ইংরেজি মিশ্রিত ওয়াজের সমালোচনা আমার কাছে বালখিল্য মনে হয়েছে, কিংবা সমালচনাকারির চিন্তার শ্যালোনেস।


আমি ওয়াজকে এন্টারটেইনমেন্ট মনে করি না, বরং একে উন্মুক্ত শিক্ষালয় মনে করি। যেই শিক্ষালয়ের শিক্ষক নিয়োগে দেশের প্রধান প্রধান ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে সচেতন ভাবে অগ্রসর হয়ে বেশ কিছু সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে অনুরোধ করছি। যাতে মানুষ কোরআনের প্রকৃত শিক্ষার আলোকে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারে, কেবল আনোদিত নয়।

Sabina Ahmed

পঠিত : ৬০০ বার

মন্তব্য: ০