Alapon

বছরের পর বছর পেরিয়ে যায় কিন্তু বিচার হয় না!


২০১৩ সাল! বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি লজ্জাজনক সাল। এই সালটিতে সংগঠিত হয় একটি লজ্জাজনক এবং মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। দূর্ঘটনা বলা আদৌও ঠিক হবে কিনা বুঝতে পারছি না। সমস্ত সতর্কতা গ্রহণের পর যদি কোন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে তবে তাকে দূর্ঘটনা বলা যায়। কিন্তু কোন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন না করেই কোন ঘটনা ঘটার জন্য যদি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যায় তবে তাকে আর দূর্ঘটনা বলা যায় না। রানা প্লাজায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সেই ঘটনাটিকেও আর দূর্ঘটনা বলা যায় না। কারণ, একটি নড়বড়ে বিল্ডিংকে কোন ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পাঁচ তলা বিল্ডিং বানিয়ে সেখানে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী নির্মান করে হাজার শ্রমিককে বসিয়ে দিয়ে যে দূর্ঘটনা ঘটেছে তাকে হত্যাকান্ডই বলা যায়, দূর্ঘটনা নয়। গার্মেন্টস এর কলাপসিক্যাল গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে শ্রমকিরে কাজ করতে বাধ্য করে গার্মেন্টস এবং ঐ ভবন মালিক রানা। এরপরই ঘটে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্মম হত্যাকান্ড। যে ঘটনায় নিহত হয় প্রায় ১১ শ মানুষ এবং তার দ্বিগুন আহত হন। 



রানা প্লাজার সেই দিনের ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের হাহাকার আজও থামেনি। থামেনি আহতদের গোঙ্গানির স্বর। বরঞ্জ তাদের সেই আত্নচিৎকার আজ বাংলার আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই স্বর বাংলার পরিবেশকে ভারি করে দিয়েছে। আর এর রেশ বয়ে যায় শুধু শ্রমিক জনতার মাঝেই। আর বড়লোকরা অট্টালিকার চার দেয়ালে এসির বাতাসে বসে টিভির পর্দায় শুধু সেই হাহকার দেখে যায়।



পেরিয়ে গেছে চারটি বছর কিন্তু সেই পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের আজও কোন বিচার হয় নি। বিচার হয়নি সেই নরপিশাচ রানার। সেই রানাকে গ্রেফতার করার পর তার ভাগ্যে কি ঘটেছে তাও তো আজ অজানা। কিন্তু লোকমুখে শোনা যায় যুবলীগের এই ক্যাডারকে নাকি জেলখানায় বেশ জামাই আদরে রাখা হয়েছিল। হাজার মানুষের হত্যাকারী পায় জামাই আদর আর দেশের চাকা সচলকারী শ্রমিকদের পরিবার পায় ১০ হাজার টাকা। আমাদের এই বীরদের জীবনের মূল্য সরকারের কাছে ১০হাজার্ থেকে ১ লাখ টাকা মাত্র। আর খুনী রানাদের মূল্য অসীম। ভাবখানা এমন তাকে মাটিতে রাখলে পিপড়ায় খাবে। পাথরে রাখলে খয়ে যাবে। তাই বুকেই রেখে দেই।



পঠিত : ৩৯৬৫৪৩ বার

মন্তব্য: ০