Alapon

আসুন জেনে নেই, কুরআন হিফজ করার সহজ তিনটি উপায়...


যারা কুরআন হিফজ করতে চান, এক আয়াত, এক পেইজ বা এক সূরা যাই হোক। পুরা কুরআন না হোক, হিফজের তিনটা পদ্ধতি বলে দেই-

১, বিগিনার- প্রথম প্রথম যারা শুরু করতে চায় তাদের বলব কিভাবে এক পৃষ্ঠা হিফজ করবেন। প্রথমে এক আয়াত বা প্রথম লাইন দেখে ১০ বার পড়বেন এরপর সেটা মুখস্ত একবার। এরপর পরের আয়াত বা পরের লাইন আবার ১০ বার দেখে পড়ার পর সেটা আবার মুখস্ত পড়বেন। এখন দুই লাইন বা দুই আয়াত একসাথে তিনবার পড়বেন। হয়ে গেল দুই লাইন বা দুই আয়াত মুখস্ত।

এরপর তৃতীয় লাইন বা তৃতীয় আয়াত পুনরায় ১০ বার দেখে পড়বেন। একবার না দেখে। এখন মোট তিন আয়াত বা তিন লাইন দেখে তিনবার পড়বেন আর তিন বার না দেখে। এভাবে পুরো এক পৃষ্ঠা শেষ করবেন। সব শেষে সেই পৃষ্ঠা আবার ২০ বার পড়বেন।

এরপর পছন্দের কারীর তিলাওয়াত ছেড়ে তার সাথে তিলাওয়াত করে যাবেন।
(অর্থ দেখে পড়লে আরো সহজ হবে, আর নিয়ম টা উসমানি মুসহাফের ক্ষেত্রে বললাম। কারন সেখানে আয়াত, হিজব,পৃষ্ঠা সুবিধাজনকভাবে রাখা থাকে। কোনো শব্দ কঠিন হলে সেই শব্দের আগের ও পরের শব্দ মোট তিন শব্দ একসাথে কয়েকবার পড়বেন যতক্ষন না ফ্লুয়েন্সি চলে আসে)

২, ইন্টারমিডিয়েট- এখানে দুইটা নিয়ম বলব উপরের থেকে সময় কম আবার খুব সহজ।

ক, যেই পৃষ্ঠা বা সূরা পড়া হবে আগে আরবি তে সেটুকু পড়ার পর পুরোটার অর্থ পড়ে যাবেন।
এরপর প্রত্যেক আয়াতের শব্দার্থ, তাফসীর দেখে নিবেন। যারা আরবি একটু আধটু বুঝেন তাদের জন্য সহজ হবে। এরপর প্রত্যেক আয়াত মনে মনে বাংলা থেকে আরবি করবেন।

যেমন- "নিশ্চই কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে" আয়াতে প্রত্যেক শব্দ إنا ، مع ،عسر، يسرا এভাবে পড়বেন+ বাক্য إنا مع العسر يسرا। শব্দ পড়লে লাভ হল আপনার ভুল হবার সম্ভাবনা কম।

আর যদি আরবি মোটামুটু ধারনা থাকেই তাহলে নাহু-সরফের দিক খেয়াল রেখে পড়ে যাবেন। এই নিয়মে সুবিধা হল আপনি উপরের নিয়মে এক আয়াত ২০ বার পড়ার চাইতে এই নিয়মে দুই-পাচবার দেখলেই মনে মনে একটা আয়াতের কাঠামো, ধারনা পেয়ে যাবেন।আবার অর্থ দেখলে বড় আয়াত কিভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া যায় সেটারও আইডিয়া পাবেন

খ, এই নিয়মটা আগের মতই, তবে সেটা বলার আগে কিছু কথা বলি। ছোটবেলা পড়ায় ফাকিবাজির জন্য শার্লক হোমসের মোটা বই ঢাকার জন্য তিন চারটা খাতা খুলে রাখতাম, আর আব্বুকে দেখাতাম নোট করি। পড়ার সময় কাটানোর জন্য বাসায় হোমওয়ার্ক না দিলেও খাতায় প্যারাগ্রাফ, ভাব সম্প্রসারণ লিখে যেতাম। লিখার পর দেখলাম প্রায় অনেকটাই মুখস্ত হয়ে গেছে।

সেইম ক নাম্বারের মত করার পর নিজে নিজে যতটুক মুখস্ত করেছেন তা লিখে যাবেন, যারা আরবি পারে তারা মুখস্ত লিখতে পারবে, যারা পারেন না তারা দেখেই লিখবেন। লিখতে না পারলে যেমনই হোক দেখে দেখে লিখে যাবেন। মুখস্ত লিখলে সুবিধা হলো এক শব্দ বা এক আয়াত লেখার অবস্থাতেই পরের শব্দ বা আয়াত মনে পড়বে যেটা বলতে গেলে আটকায় যায়।ইন শা আল্লাহ এই কাজ টা করে দেখবেন কুরআন কত সহজে মুখস্ত হয়ে যাচ্ছে।

বিদ্রঃ আমি সামান্য কিছু সূরার হাফেজ মাত্র। তবে পড়ানো আর নিজে পড়ার মাঝে এই অভিজ্ঞতা পেলাম। ভালো কাজে দিবে ইন শা আল্লাহ। তবে অবশ্যই মাদ্ব, গুন্নাহ, মাখরাজ সম্বন্ধে আইডিয়া থাকতে হবে এতে। যারা বাংলা লিখা দেখে কুরআন মুখস্ত করেন তাদের বলব এখনই আজকেই থেমে যান। আরবি দেখে পড়ুন। কারন আপনি জানেন না আল্লাহর কালামকে আপনি কি না কি বানিয়ে দিচ্ছেন আর কি কি গুনাহ কামাচ্ছেন। ওস্তাদ দেখে সরাসরি শিখে ফেলুন। এক দেড় মাসেই ঠিক হয়ে যাবে।

সংগৃহিত...

পঠিত : ৮৩৬৭ বার

মন্তব্য: ০