Alapon

মিজানুর রহমান আযহারীকে আল্লাহর জন্যই ভালোবাসি।


একটা সময় ভারতীয় নায়ক নায়িকাদের কনসার্ট হলে টিকিট নিয়ে মারামারিতে হতাহতের ঘটনা ঘটতো। আইপিএলের খেলা দেখার জন্য দোকানে দোকানে ভীড় লেগে থাকতো। মাঠের টিকিট পাওয়ার জন্য কাক ডাকা ভোর থেকে রাস্তায় তরুনদের সিরিয়াল লেগে যেত। মাঠে নায়িকাদের বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্লেকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে থাকতো এদেশে তরুনরা। মেয়েরা নায়কদের বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে কত কিছু লিখতো। কিন্তু এখন ট্রেন্ড পাল্টে গেছে।

এখন তরুনরা কাক ডাকা ভোরে আযহারীর মাহফিলের মাঠে স্টেজের কাছে বসা নিয়ে প্রতিযোগীতা করে। দোকানগুলোতে আযহারীর ওয়াজ বাজলে ভিড় লেগে যায়। ওয়াজের ময়দানে তরুনরা প্লেকার্ড নিয়ে হাজির হচ্ছে অনেকে । ‘আল্লাহর জন্য আপনাকে ভালোবাসি হে মিজানুর রহমান আযহারী' লিখিত প্লেকার্ড নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকে।

সেদিন দেখলাম এক বুড়া মিয়া দুপুরের খাবার মাঠে খাচ্ছেন। জিজ্ঞেস করা হলো, মিয়া কোত্থেকে আসছেন ? বুড়ো বললো, পাশের জেলা থেকে! তাকে নাকি তার বুড়ি দুপুরের খাবার দিয়ে আযহারীর ওয়াজ শুনার জন্য ফজরের পরেই বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। আযহারীর ওয়াজে কি পেলো আপনার বুড়ি। বললো, বিয়ের পঞ্চাশ বছরে আমাদের দাম্পত্য জীবনে এতো রোমাঞ্জ হয়নি যতটা তার ওয়াজের কারণে হয়েছে।

সামজিক অসঙ্গতি, দাম্পত্য জীবন সুখকর করা, যৌতুক মাদক সেবনের ভয়াবহতা সহ তরুনদের মুল্যবান জীবন সঠিক পথে চালানোর পরামর্শ দিয়েই মুলত আযহারী মানুষের মন জয় করেছেন। সারা দেশে যে ব্যাপক গণস্রোত তৈরি হয়েছে, কোরআনের প্রেম তৈরি হয়েছে তাতে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছিলো কতিপয় কারণে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। আযহারীর ভিন্ন মতের ওলামারাও এখন তার সম্পর্কে পজেটিব কথা বলছেন। সেদিন তাহেরী সাহেবও মুল্যবান কিছু কথা বলেছেন। তার প্রশংসা করেছেন, মানুষদের কে আলেমদের সমালোচনা না করার পরামর্শ দিয়েছেন।

আমার জন্য সুখকর হলো, তার প্রতি খোলা চিটি লিখে ফেসবুকেও স্টেটাস দিয়েছিলাম। তার কাছে থাকা আমার এক মুরিদ তাকে সেই লেখা হোয়াটএ্যাপসে দিয়েছিলো। সেখানে তাকে অনুরোধ করেছিলাম, দাঈর ভূমিকায় থাকা, দারোগার (আইনজীবি) ভূমিকায় অবর্তিন হওয়ার দরকার নেই। ফতোয়া, মতবিরোধপুর্ণ মাসয়ালা, ইখতেলাফ, মুসলিমদের বিভিন্ন মানহাজের মধ্যকার বিতর্ক নিয়ে তিনি যেন মাথা না ঘামান। ফতোয়া জানতে চাইলে সরাসরি স্থানীয় মুফতিদের দিকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আলহামদুল্লিাহ, তিনি সেটাই করছেন।

সেদিন এক মাহফিলে চিরকুট দিয়ে তার থেকে ফতোয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি বলে দেন, আমি বললে সমস্যা হতে পারে, আপনাদের স্থানীয় মুফতিদের কাছে জেনে নিন। এভাবে চলতে থাকলে ভিন্ন মতের ঐসব আলেমরাও তার জন্য দোয়া করবে যারা ফতোয়ার চোরা জালে পা না দেওয়ার জন্য তাকে অনুরোধ করেছিলেন। আলেম সমাজের প্রতি অনবরত শ্রদ্ধা দেখানো আযহারী হুজুর সেটাই করছেন। ভালোবাসি তাকে আল্লাহর জন্য।

Apu Ahmed

পঠিত : ৬৩৭ বার

মন্তব্য: ০