Alapon

সুন্দরবনই কি উপকূলের মানুষদের ঝড় ‘আমপান’ থেকে রক্ষা করেছে...?


পত্রিকায় দেখলাম শিরোনাম করেছে, ‘সুন্দরবন আবারো বুক পেতে উপকূলের মানুষদের রক্ষা করল।’

মূলত এই শিরোনামের কারণ হল, গত রাতে বাংলাদেশের উপর দিয়ে যে প্রলয়ংকারী ঝড় আমপান বয়ে যায়, তা মূলত সুন্দরবন এলাকায় আঘাত হানে। প্রথমেই সুন্দরবনে আঘাত হানার কারণে যতটা তিব্রতা নিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ততটা গতিতে পড়তে পারে না। মূল ক্ষয়ক্ষতি সুন্দরবনের উপর দিয়েই যায়। তারপর দুর্বল হওয়া ঝড় উপকূলে আঘাত হানে। ফলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হয়।

আর একারণে পত্র-পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে, ‘সুন্দরবন উপকূলের মানুষের জীবন রক্ষা করেছে।’

ইসলাম ধর্মের দৃষ্টিতে আদৌত এ ধরণের কথা শিরকের পর্যায়ে পড়ে। অর্থাৎ মানুষ ত্রানকর্তা বলছে সুন্দরবনকে; সুন্দরবনের মালিককে নয়। সুন্দরবনের মালিক কে?
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের।

মনে করুন, আমি একটি রোবট বানিয়েছি। সেটাতে অনেকগুলো প্রোগ্রাম ইনস্টল দিয়েছি। অনেকগুলো প্রোগ্রামের মধ্যে একটি হল সারভাইবাল কাজে সহায়তা করা। অর্থাৎ কেউ ঝড়ের কবলে পড়ে গাছের নিচে পড়েছে, তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করাই হল রোবটের কাজ। তো রোবট ইনস্টল দেওয়া প্রোগ্রামনুসারেই কাজ করে যাচ্ছে এবং বহু মানুষের জীবন রক্ষা হচ্ছে। তাহলে কাজের প্রশংসা ও কৃতিত্ত্ব পাওয়ার দাবিদার কে; রোবট নাকি আমি?

নিশ্চয়ই আমি। কারণ, রোবটটা বানিয়েছি আমি। প্রোগ্রাম বানিয়েছি আমি। তারপর সেটার ভিতরে প্রোগ্রাম ইনস্টল দিয়েছি আমি। আর রোবট শুধু সেই নির্দেশনা অনুসারে কাজ করে যাচ্ছে। অতএব রোবট যেসব কাজ করছে, সেসব কাজের প্রশংসা ও কৃতিত্ত্ব পাওয়ার অধিকার আমিই রাখি; রোবট নয়।

ঠিক তেমনই সুন্দরবনের সৃষ্টিকর্তা হলেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। মহান আল্লাহপাকের ঘোষণাতেই সুন্দরবনের সৃষ্টি হয়েছে। তারপর সুন্দরবনের অনেকগুলো কাজের মধ্যে একটি কাজ দিয়েছে, প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় প্রতিরোধ করা। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দূযোর্গ যখন আঘাত হানে তখন সুন্দরবনের গাছগুলো দূর্বোধ্য সেনার মত প্রতিরোধ তৈরি করে দাঁড়িয়ে থাকে। আর তাদের এই দাঁড়িয়ে থাকাটা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হুকুম। সুন্দরবন শুধু হুকুম তালিম করে যাচ্ছে।

তাহলে এই সুন্দরবন যে আমপান ঝড়কে মোকাবেলা করে দুর্বল করে দিল, এই কৃতিত্ত্ব ও প্রশংসা কার?
অবশ্যই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের। কারণ, তিনিই সুন্দরবনের সৃষ্টিকর্তা। আর এটাই চিরন্তন সত্য।

কিন্তু এই চিরন্তন সত্যটাই উপেক্ষা করতে চায়, বস্তুবাদি বিশ্বাসে বিশ্বাসী কিছু অকৃতজ্ঞ মানুষ। তারা যে কোনো ভালো কাজের কৃতিত্ত্ব বস্তুকে প্রদান করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কারণ, এতে ধর্মকে অস্বীকার করা যায় এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করার মওকা পাওয়া যায়। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এটি মওকা নয়; বরঞ্জ ফাঁদ। তারা আল্লাহর কৃতিত্ত্ব অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে শিরকে লিপ্ত হয়েছে। তারা যেমন শিরকে লিপ্ত হয়েছে, তেমনি সাধারণ মানুষকেও শিরকে লিপ্ত করতে চাচ্ছে। যার কারণে তারা জেনে বুঝেই এমন একটি অন্তঃসার শূণ্য শিরোনাম করেছে।

তবে জেনে রাখুন, এসব বস্তুবাদি চেতনার মানুষদের দ্বারা মহান আল্লাহর কৃতিত্ত্ব স্বীকার করা না করায় কিছু যায় আসে না। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, আমরা সাধারণ মানুষরা যেন বিভ্রান্ত না হই। আমরাও যেন এটা বিশ্বাস না করি যে, সুন্দরবন আমাদের রক্ষা করেছে। আমাদের রক্ষা করেছে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। আর এটাই চিরন্তন সত্য।

পঠিত : ৩৪৮ বার

মন্তব্য: ০