Alapon

সমকামীদের আস্ফালন এবং কিছু কথা...


সমকামীদের প্রকাশ্য আস্ফালন ও উৎপাত আপাতত শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই কিছুটা কমে যেতে দেখা যাবে। (প্রকাশ্যে বলেছি গোপনে নয়) কারণটা হলো এখন হচ্ছে জুলাই মাস। জুন মাস ছিলো সমকামীদের বৈশ্বিক গনসংযোগ তথা সমর্থকবৃদ্ধির বিশেষ মাস। জুন মাসে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রকাশ্য রেলি (rally)সহ মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। করোনার কারণে এবার অবশ্য তাদের পক্ষে ঘটা করে আস্ফালন সম্ভব হয়নি। ১৯৬৯ সাল থেকেই তারা জুন মাসকে Pride Month হিসেবে পালন করে আসছে।

শামির মোন্তাজিদ কিংবা সাকিব বিন রশিদের কার্যক্রম থেকে বোঝা যায় তারা সচেতনভাবেই জুন মাসের সমকামীদের বৈশ্বিক কর্মসূচির অংশ হিসেবেই বিতর্কিত পোস্ট ও কমেন্ট করেছিলো। আর যা ছিলো দেশের কোন ওয়েলনোন পাবলিক ফিগারের পক্ষ থেকে প্রথম সমকামীদের পক্ষে প্রকাশ্য প্রচারণা। তারা হয়তো চেয়েছিলো তরুণ তরুণীদের মাঝে জঘন্য বিষয়টি ট্রেন্ড হিসেবে বিস্তার ঘটাতে। (এর আগে অবশ্য ২০১৬ সালে কিছু হিজড়া ও সমকামীদের নিয়ে বাংলাদেশে জুলহাসের নেতৃত্বে একটি সমকামি প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছিলো)

তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সচেতন আলেম ওলামা ও সর্বস্তরের মুসলিমরা ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ ও নিন্দায় মুখোর হওয়ায় এ যাত্রায় তারা কোনঠাসা হয়েছে। আপতত হয়তো যেকোনো পাবলিক ফিগার এ জাতীয় ধৃষ্টতা দেখানো থেকে বিরত থাকবে। এ প্রতিবাদ চলাকালীন সময়ে অবশ্য বাংলাদেশের আমেরিকান এম্বেসি সমকামী ও Pride Month সমর্থনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে। এটা মার্কিনীদের বর্তমান সময়ের অন্যতম এজেন্ডা বলা চলে। তবে আশা করা যায় এভাবে উপযুক্ত সময়ে মুসলিমরা সোচ্চার হলে এ জাতীয় জঘন্য বেহায়াপনা বৈধ করনের অপচেষ্টা এদেশে সফল হবে না।

তবে কিছু বিষয়ে বাস্তবতা অপেক্ষা করা যথাযথ হবে না। আমাদের তরুণ প্রজন্মের একটি বড় অংশ যে ইসলাম জ্ঞান ও মূল্যবোধ থেকে কতটা দূরে সরে গেছে তাও আমাদের স্বরণ রাখতে হবে। তাদের অনেকের কাছেই ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাচ্ছে না, তাদের মাঝে ইসলামের দাওয়াত কীভাবে পৌঁছানো যায় সে বিষয়েও আমাদের উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

বর্তমানে যারা ইনফ্লুয়েন্সিয়াল তরুণ সেলেব্রেটি আছে তাদেরকেও কীভাবে ইসলামের দিকে অগ্রসর করা যায় সে বিষয়েও আমাদের কাজ করা একান্ত জরুরি। তাদেরকে দাওয়াত দেয়ার জন্য আমাদের বিশেষ প্রজ্ঞাবান দায়ী টিম থাকা প্রয়োজন,(এরকম টিম আছে বলে জানা নেই)।

আমাদের বেশ ভালো মানসম্মত ইসলামী বই বের হচ্ছে কিন্তু তা আমরা সাধারণত ইসলামপন্থী সেলেব্রেটিদের বাইরে তেমন কাউকে হাদিয়া দেইনা। আইমান ভাইকেই বা কয়টি ইসলামী প্রকাশনী, লেখক বা পাঠকের পক্ষ থেকে সীরাহ বা ভালো কোন বই উপহার পাঠিনো হয়েছে! (আমি নিজেও অবশ্য কিছুই করতে পারিনি আল্লাহ তায়ালা আমাকে ক্ষমা করুন) ব্রিটিশ রাণী পর্যন্ত তাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে বা পুরস্কৃত করতে পারে নিদেনপক্ষে কাছে টেনে নিতে পারে। কিন্তু আমরা কোন দাওয়াতি সম্পর্ক রাখতে পারছি না, বিষয়টি দুঃখজনক।

Kingopoly খ্যাত তুষার ভাইয়ের মতো ট্যালেন্ট ইউটিউবার ইসলামের দিকে আসতে চেষ্টা করছেন। আলহামদুলিল্লাহ, এ জাতীয় মেধাবী ভাইদের কীভাবে গড়ে তুলে দাওয়াতি খেদমত নেয়া যায় সে বিষয়ে আমাদের ভাবনা ও সুষ্ঠ কর্মপরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন।

আরেকটি কাজ করা যেতে পারে, সেলেব্রেটিদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের ( বাবা-ভাই , বোনেরা দাওয়াত দিলে মা-বোন) উনাদের সাথেও দাওয়াতি সম্পর্ক গড়ে তোলাও আশাকরা যায় অপকারী হবে না। ইনশাআল্লাহ তা ভালো ইম্প্যাক্ট ফেলতে পারে।

প্রকৃতপক্ষে, দাওয়াত বর্জিত শুধুমাত্র প্রতিবাদ প্রতিরোধ প্রচেষ্টা যেমন ইসলামের শিক্ষা নয় আবার নেহি আনিল মুনকার ব্যতিত কেবল দাওয়াতও ইসলামের নির্দেশনা নয়। আমাদের দুইটাই সমান তালে সামর্থ্য অনুযায়ী জারি রাখতে হবে। ইনশাআল্লাহ সুদিন আসবেই, ইসলামের বিজয় অবিশ্যম্ভাবী।

- মনির

পঠিত : ৩৫২ বার

মন্তব্য: ০