Alapon

||সমস্যার মূলে হাত দিন||


সুরা তাওবাহ'র ১৯৩ নাম্বার আয়াতে কারিমায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেন, "তোমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয়ে না যায় এবং দ্বীন (জীবন চলার সকল ব্যবস্থা) আল্লাহর জন্যই (পুরোপুরি) নির্দিষ্ট হয়ে যায়।......

খেয়াল করুন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এখানে কী বলেছেন, বলেছেন ফিতনা নির্মূল না-হওয়া অবধি লড়াই চালিয়ে যেতে। সমস্যার উৎসমূলে হাত দিতে।

অথচ, আমাদের কয়েকটা বড়োরকমের দুর্বলতার মধ্যে একটা হচ্ছে আমরা সমস্যার মূলে হাত দেই না। সমস্যার মূলোৎপাটন করতে চাই না। মনে করুন আমরা ধর্ষকের ফাঁসি চাই, ধর্ষণ বন্ধ হোক তা চাই।

কিন্তু ক্যানো ধর্ষণ হয়? শুধু বিকৃত মস্তিষ্কের জন্যে? না, চূড়ান্তভাবে মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটলে অনেক কিছুই বলা যায় করা যায়। কিন্তু ক্যানো মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটছে সে কারণগুলো চিহ্নিত করতে চাই না। করি না। মস্তিষ্ক বিকৃত করে এমন উপকরণগুলো বন্ধ করতে চাই না। যেমন: অশ্লীল সাহিত্য অশ্লীল সিনেমা অশ্লীল পোশাক আবেদনময়ী অঙ্গভঙ্গী, এরপর ধর্মীয় মূল্যবোধ লালন না করা সামাজিক শিষ্টাচার বজায় না রাখা ইত্যাদি...

খোলামেলা পোশাক পরে পোজ দিলে তাকে বলা হয়ে থাকে সাহসী নারী। অশ্লীল সাহিত্য রচিত করা হলে বলি প্রগতিশীল সাহিত্যিক। মেয়েদের কলমে অশ্লীলতার আনাগোনা আসলে, প্রচলিত ট্রেন্ড ফলো করে পুরোপুরি সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করলে, ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানলে বলি তাকে সাহসী নারী!

বড্ড আশ্চর্য তো আপনার সাহস ভাই! আপনার সব সাহস এসবের মধ্যেই যে ক্যানো নিহিত, বুঝতে আইনস্টাইন হওয়া জরুরী নয়৷ তবুও বুঝতে মগজ খাটাই না।

আচ্ছা একদিকে আমি ধর্ষণ বন্ধ করার কথা বলে চিৎকার করবো আরেকদিকে মানুষের সুপ্ত যৌনাকাঙ্ক্ষা জাগ্রত করবো আমার কলমের দ্বারা আমার সাহিত্যের দ্বারা আমার সিনেমার দ্বারা আমার ক্যামেরা, আমার আচরণ দ্বারা আমার আমার সংস্কৃতি দ্বারা; তাহলে তো আলটিমেটলি আমি ভন্ডামি করছি। আমিই ধর্ষণ বা যৌনপরাধকে উস্কে দিচ্ছি।

আমি মানসিকতা ঠিক করতে বলি, তবে মানসিকতার বিকার ঘটায় ত্যামন বিষয়ের বিনাশ করার কথা বলি না। পর্ণগ্রাফি চটি সাইটগুলো বন্ধ হোক, সেসবের সত্ত্বাধিকারীদের ধরে ধরে শায়েস্তা করা হোক, ধর্ষকের ফাঁসির দাবির পাশাপাশি এসবের হোতাদের পারতপক্ষে জেলে পুরো দেয়া হোক সে আবেদন আমার তরফ থেকে নেই। করি না। করা হয় না। তা হলে কি আমি নৌকার ফুটো রেখে তা থেকে অযথা পানি সিঞ্চনের কথা বলছি না?

আমি ইসলামের বিধিমালার কথা বলি, অবশ্যই ভালো এবং উত্তম একটা কাজ করছি। কথা বলছি। কিন্তু ইসলাম যে নারীদের আগেই পুরুষদের চক্ষু অবনতির বয়ান করেছে আমার জন্য আমার ওয়াজে সে বিষয়টা থাকে না। মনে হয় তাবৎ দুনিয়ার সকল বিধান মেয়েদের জন্য।

কেউ প্রগতিশীলতা কিংবা পুরুষের চোখের পর্দার দোহাই দিয়ে নিজেদের অশ্লীলতা, অশালীনতার বৈধতা দিচ্ছি! কী আজিব গো আমরা!

আমাদের আগাগোড়া সবটাই হিপোক্রেসিতে ভরা! বিমুক্ত নয় আমিও! আমাদের সবখানেই আমার নফসের দাসত্ব! এভাবেই আমরা অপরাধ অন্যায়ের বিস্তার ঘটাচ্ছি হরদম। ভাবার কেউ নেই। সববিবেচনায় সঠিক বলার কেউ নেই। বললেই বিপুল বিপদের বিমান হাজির হবে। আফসোস! আসোলে এই ক্যাটক্যাটে মানসিকতা রাখলে কোনো কিছুর সমস্যা আদৌ সমাধান করা সম্ভব নয়...


||সমস্যার মূলে হাত দিন||
~রেদওয়ান রাওয়াহা —

পঠিত : ৬৮৫ বার

মন্তব্য: ০