Alapon

জামায়াত ইসলাম কি ভ্রান্ত দল...?


দিন কয়েক আগে এক ভাই প্রশ্ন করল, জামায়াত ও ইখওয়ান কি প্রকৃত অর্থেই ইসলামি দল? অনেক আলেম-ওলামা জামায়াত ও ইখওয়ানের আক্বীদা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। জামায়াত ও ইখওয়ান ইসলামি দল তো নয়ই, ভ্রান্ত আক্বীদার দল!

আমি তাকে বললাম, জামায়াত ও ইখওয়ান প্রকৃত ইসলামি দল কিনা—তা জানতে তাদের বিরোধীদের দিকে একটা তাকানো যাক। জামায়াত ও ইখওয়ানের ব্যাপারে তাদের মন্তব্য কি—তা পর্যালোচনা করলে উত্তর পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

সে বহু বছর আগের কথা! একবার মিশরের এক পুলিশ এক ব্যক্তিকে ধাওয়া করছিল। কারণ, পুলিশের দাবি ছিল সেই ব্যক্তি ইখওয়ানুল মুসলিমিনের কর্মী। পুলিশ তার পিছনে ছুটছে তো ছুটছেই। আচমকা সেই পুলিশ তাকে ধাওয়া করা বন্ধ করে দিয়ে পিছন ফিরে হাটতে শুরু করল। তখন উৎসুক মানুষ প্রশ্ন করল, এতোক্ষণ সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার জন্য এমন প্রাণপনে ছুটলেন, এখন কী এমন হলো যে তাকে ধাওয়া করা বন্ধ করে দিলেন।

তখন সেই পুলিশ সদস্য বলল, আমি যাকে ধাওয়া করছিলাম, সে একবার মাথা ঘুরিয়ে এক বেপর্দা নারীর দিকে তাকিয়েছিল। কোনো ইখওয়ান সদস্য কোনো নারীর দিকে এভাবে তাকাতে পারে না। সে ইখওয়ান সদস্য না। তাই তাকে আর গ্রেফতার করছি না।

ইখওয়ানের ব্যাপারে এটাই ছিল বিরোধীদের মত!

আর জামায়াত?

এইতো বছর দুয়েক আগে পত্রিকায় একটা নিউজ প্রকাশ হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিয়মিত মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তো এবং তার আশেপাশের সবাইকে নামাজের জন্য আহব্বান করতো। তখন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সেই ছাত্রকে গেস্ট রুমে তুলি নিয়ে যায় শিবির সন্দেহে! অর্থাৎ বিরোধীদের ধারণা যারা নিয়মিত নামাজ পড়ে, তারা প্রত্যেকেই জামায়াত শিবির!

এইতো কিছুদিন আগের ঘটনা। চলচিত্র জগতের মানুষ মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের কথা নিশ্চয়ই আপনাদের জানা আছে। তারা চলচিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারি। দিন কয়েক আগে সরকারের কাছে কিছু চলচিত্র শিল্পি তাদের নামে অভিযোগ করে। তখন বিরোধীরা জায়েদ খানকে বিএনপির নেতা বলে দাবি করে আর মিশা সওদাগরকে জামায়াতের শূরা সদস্য বলে দাবি করে।

মিশা সওদাগরকে জামায়াতের শূরা সদস্য দাবি করার কারণ ছিল, এ কথা এফডিসির সবাই জানে মিশা নিয়মিত নামাজ আদায় করে। এমনকি সে বেশ কয়েকবার হজ্জও পালন করেছে। যেহেতু সে নামাজ পড়ে তাই বিরোধীরা তাকে জামায়াতের নেতা বানানোর চেষ্টা করার সুযোগ পেয়েছে! এখানে একটু কমনসেন্স খাটালেই বোঝা যাবে, জামায়াতের ব্যাপারে মানুষের ধারণা কেমন।

অতি সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দাবি করেছেন, বর্তমান সময়ে তরুণদের মাঝে শুদ্ধ উচ্চারণে সালাম দেওয়ার রেওয়াজ ও খোদা হাফেজের পরিবর্তে আল্লাহ হাফিজ বলার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এসব জামায়াত শিবিরের কাজ! জামায়াত শিবির তরুণদের এভাবে বিভ্রান্ত করছে!

একজন নাস্তিকের মুখে যখন শোনা যায়, ইসলাম পালনের ব্যাপারে জামায়াতই মুখ্য ভূমিকা পালন করছে, তখন জামায়াত ভ্রান্ত না সঠিক দল তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। যখনই ইসলামের প্রসঙ্গ চলে আসে, তখনই জামায়াতের নাম শোনা যায়। ইসলামের বিরোধীরা যখন জামায়াতকেই প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করছে, তখন এ কথা বোঝা কঠিন নয়, জামায়াত সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে!

পঠিত : ৪৭৩ বার

মন্তব্য: ০