Alapon

আমার আব্বু আম্মু আপনার জন্য উৎসর্গিত: فِدَاكَ أبِي وأُمِّي، يَا رَسُولَ الله ============================================

সাহাবীদের যুগে না আসতে পারলেও তাঁদের পথ ধরে চলতে আমি কোন বাঁধা দেখিনা। আমার প্রিয়তম রাসূল (সা)কে ভালোবাসতে যেয়ে আমার জান ও কুরবান করতে পশ্চাদপদ নই আমি। আমার অর্থ বিত্ত সব যেতে পারে, মান সম্মান সব বিলিয়ে দিতে পারি, সমাজ সংসারে পদাঘাত করতে পারি, যদি দেখি এই সব বিষয় আশয় আমার নবীর (সা) বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। আমি বিশ্বাস করেছি, আমাদের জানের চেয়েও আমার নবী আমার অত্যন্ত কাছের। আমি ঈমান এনেছি, তাঁকে আমার বাবা মা, ছেলে মেয়ে, সারা দুনিয়ার তামাম আদম সন্তানের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারায় ঈমানের পূর্ণতা পায়।

কেও তাঁকে মারতে এলে আমার শরীরে ৭০ বার বেয়োনেটের খোঁচা খাবো, তবুও তাঁর গায়ে একটা কাঁটার দাগ লাগতে দেবোনা। কেও তার বিরুদ্ধে কথা বললে আমার জিহবাকে নির্বাক করে রাখায় নিফাকির আলামাত মনে করবো। তাকে কেও অবমাননা করলে তার বিরুদ্ধে নিরব হয়ে থাকাকে আমি শয়তানের বোবামি মনে করে নেবো। তার বিরুদ্ধে কেও লিখলে আমার কলম আগুন ঝরায়, আমার চোখের হুতাসনে খাক হয় তার অপবিত্র কায়া, আমার জীবন আমার কাছে তুচ্ছ মনে হয় তখন। মৃত্য হয়ে যায় আমার জন্য অত্যন্ত প্রিয় সে সময়।

শার্লি হেব্দুর নোংরামিকে যারা সহায়তা দিয়েছে, নবীজীর (সা) কল্পিত সন্ত্রাসী ছবি আঁকাকে শিল্পকর্ম ভেবেছে, বিল বোর্ডে নবীজির (সা) ব্যঙ্গ চিত্র টাঙিয়ে দেশবাসীকে দেখায়ে মুসলিম অন্তর গুলো তাবাহ করে দেয়া যারা আধুনিক কালে সভ্যতার নিদর্শন মনে করেছে, কোমলমতি বাচ্চাদের সামনে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের কাছে সম্মানিত নবীকে যারা কলুষিত করে তুলে ধরতে চেয়েছে, তাদের প্রতি কোন প্রকার সৌজন্য দেখানো কোন দিন ঈমান ইয়াক্বীন নিয়ে কথা বলা লোকদের সাজেনা বলে মনে করি। তাদের বিরুদ্ধে কথা না বলে আপনি কাপুরুষতার পরিচয় দিতে যান দেন, কিন্তু কোন মুসলিম সন্তান ইম্যানুয়েলের বিরুদ্ধে কথা বললে সেই মুসলিমযুবাকে আপনি সমর্থন করুন। তাতে আপনার কাপুরুষতা কিছুটা হলেও কমবে।

আমি বাংলাভাষায় কিছু চিৎকার শুনেছি। সেখানে তারা ফ্রান্সের ঘটনায় ইউরোপের অলিতে গলিতে আগুন লাগানোর হুংকার দিয়েছে। আমি এই হুংকারে কুরআন হাদীসের আলো দেখিনি। একজনের অপরাধে নিরপরাধ জনপদ ধ্বংশ হবে কেন?

আমি কিছু আলোচনা শুনেছি, যেখানে ফ্রান্সের সমস্ত মানুষকে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ বানিয়ে সবাইকে তছনছ করার ঘোষণা আছে, আমি এটাতেও ইনসাফের সুর শুনিনি। কোন জাতির অপরাধ দেখে তাদের উপর থেকে ইনসাফের ছাতা উঠিয়ে নেয়া যাবে না। ঐখানেও ইনসাফ করা তাক্বওয়ার কাছাকাছি বলা হয়েছে।

আমি কিছু লোককে বলতে শুনছি, তার রেগেছেন, কিন্তু বলছেন ফ্রান্স আমাদের ও দেশ। সেখানে লক্ষ লক্ষ মুসলিম বাস করে। তাদের পাশে যেয়ে দাঁড়াতে হবে।

আমি বলেছি, মুসলিম দেশ সমূহে যারা মুসলিমদের আমীরুল মুমিনিন বা খালিফাতুল মুসলিমিন হয়ে পাশ্চত্যরে দাসত্ব করে যাচ্ছে, তারা দাঁড়াবে না। তারা ভয় পায়। অল্প কিছু সাহসী রাজা বাদশাহ আজ হুমকি দিচ্ছে, মুহাম্মাদের (সা) প্রতি তাদের ভালোবাসায় উমারীয় সুগন্ধি আছে। বাকিরা মুখে কুলুপ দিয়েছে।

আমি বলেছি, ঐ ঘুরে ফিরে সাধারণ মুসলিমরা আজ মুখ খুলেছে, নবীর মহিমায় তার সদা ততপর। তারা চোখ খুলেছে, সেখানে তাদের বেদনার আঁসু। তারা বুকের কপাট খুলে দিয়েছে, যেখানে দেখা যায় ঈমানের সোজা রাজপথ।

আজ যদি এই মুসলিম পাল গুলো এক হয়ে যেতো, আজ যদি বয়কটের পথে সবাই একট্টা হয়ে দাঁড়াতো, আজ যদি প্রতিটি কর্ণার থেকে হুঙ্কার আসতো তাহলে ফ্রান্স এতদিন নরম হয়ে যেতো। আমাদের ঐক্য গেছে, আমাদের ভ্রাতৃত্ব গেছে, তাই আজ এই গিদ্দড়্গুলো এত সব করতে সাহস পাচ্ছে।

আমি হতাশবাদী নই। আমি তো দেখেছি, যারা নবীর (সা) সারা শরীর দিয়ে রক্ত বইয়ে দিয়ে তায়েফের রাস্তা লাল করেছিলো, তারাই একদিন ইসলামের জন্য মক্কা মদীনার চেয়েও দূর্ভেদ্য শক্তিতে পরিবর্তিত হয়ে ছিলো।

আমি তো দেখেছি, যারা নবীকে (সা) মেরে ফেলেছে বলে দাম্ভিকতায় আকাশ ফেড়ে উঁচুতে যেতে চাচ্ছিলো, মক্কা বিজয়ের পরে কাবার চত্তরে তারাই নবীর (সা) সামনে মাথা নিচু করে থরথর করে কেঁপেছিলো।

আমি দেখছি যারা নবীর (সা) কার্টুন বানায়, মসজিদে নব্বীর মেহরাবের সামনে ইসলাম গ্রহন করে হাওমাও করে কেঁদে ওঠে।

আমি দেখেছি, নবীর (সা) অপমান যে ই করে, তার বংশ সাবাড় হয়, আবতার হয়, তার কলিজা কাবাব হয়, তার মাথা নষ্ট হয়, তার রাজত্ব শেষ হয়, তার দেহ তার ছেলের হাতে টুকরো টুকরো হয়, তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে আল্লাহর পাঠানো কুকুর।

আমি দেখেছি নবীর (সা) এর উপর আঘাত এলে মিনারগুলো থেকে মুয়াযযিনদের কণ্ঠে বেলালের মত নবী (সা) হারা মুহুর্তের ক্রন্দন, হাজারো যুবকের হাতে হাতে সীরতুন নবীর নতুন নতুন সংস্করণ, তা পড়ে তাদের বয়ে যায় দজলা এবং ফোরাত, কখনো পদ্মা ও মেঘনা। আমি তো দেখেছি মায়েরা নবীর (সা) গল্প দিয়ে ছেলে মেয়ের মাথা ভরে দেয়, তাঁর সুন্নাত নিয়ে মুসলিমরা আবার উজ্জীবীত হয়, তাঁর শিক্ষা ছড়াতে শপথে বলীয়ান হয় লক্ষ কোটি যুবক, যুবতী।

আমি তো দেখেছি, নবীর (সা) কুৎসা হলে হাজারো অমুসলিম নতুন করে পথ পায় মদীনার দিকে, লক্ষ পাপী জেগে ওঠে ঈমানের শপথে ও তাওবার আবেশে।

আজ আমরাও জেগে উঠি, নবীময় হই, অরাসাতুল আম্বিয়ার দ্বায়িত্ব পালন করি। এটাই হবে ইম্যানুয়েলের মুখে একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে সভ্য চপেটাঘাত। আর সিদ্ধান্ত নেই, ফেদাকা আবী ওয়া উম্মি ইয়া রাসুলাল্লাহ। সাল্লাল্লাহু আলাইকা ওয়া সাল্লামা তাসলীমান কাসীরান, কাসীরান।

পঠিত : ২৯৩ বার

মন্তব্য: ০