Alapon

জীবন্ত ইতিহাসের মৃত্যু . . .

আমার নাম মাহমুদ হাসান আলম। যদি আমার আসল নাম বাদ দিয়ে কেউ রাখতো “মাহালম”। তবে আমাকে কি কেউ চিনতে পারতো? চেনার কথা নয়। আর কয়েক পুরুষ পরে তো চেনার প্রশ্নই আসেনা। যদি আসলেই এমনটি হয়? তাহলে কেমন হবে? ইতিহাস বিকৃতি নতুন কিছু নয়। বলা হয়ে থাকে বিজয়ীরাই সবসময় ইতিহাস লিখে থাকে। আসলেই কি তাই ?

আকবর দ্যা গ্রেট বলে আমরা অনেকেই আকবরকে ভালভাবেই জানি। কিন্তু সম্রাট বাবরকে কিভাবে জানি? কেন ইতিহাসে বাবরকে চেপে রেখে আকবরকি গ্রেট হিসেবে দেখানো হয়েছে? আকবরের সত্য ইতিহাস জানলে যে কারো গায়ের লোম খাড়া দিয়ে উঠবে। তার রক্ষিতা ছিল কত জন? শুধু ক্ষমতার লোভে “দিন ই ইলাহী” চালু করে ইসলামের চরম বিকৃতি করেছে, এ ইতিহাস কজনেই জানে? যে ভারত শাষন করেছে মুসলিমরা শত শত বছর। আজ ভারতের ইতিহাসে তাদের নেই। যা কিছু আছে সত্য ইতিহাস প্রায় মৃত্যু।

আমাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামের ইতিহাসে যা পড়ান হয় তার অধিকাংশ নেয়া হয়েছে পি কে হিট্টি, উইলিয়াম ম্যুর, টমাস কার্লাইল, ঐতিহাসিক গীবনের বই থেকে। যারা ইসলামিক লেখক বলে স্বীকৃত নয়। এমনকি তার কোন ইসলামিক স্কলারও নয়। ইসলামের ইতিহাসে পড়ান হয় যাদের লেখা অথচ তারা কেউ ইসলামিক স্কলার এবং ইসলামিক ব্যক্তিত্ব নয়। অনেকে আবার খৃস্টানদের গোয়েন্দা ছিল যার প্রমান ভরি ভরি আছে। তাদের কাছে থেকে আমরা ইসলামের কি শিখবো? এগুলো কি ইচ্ছাকৃত ইতিহাস বিকৃত? নাকি ইসলামের বিপক্ষে সুক্ষ কোন চক্রান্ত?

ইতিহাস বিকৃতির জোয়ারে আমরা এখন প্রায় অস্বিত্বহীন! ধিকৃত মানবাত্মা প্রতিনিয়ত কাঁদে কিন্তু দেখার যে  কেউ নাই। একটু দেখার চেষ্টা করি কোথায় সেই বিভৎস বিকৃতি ঘটেছে? কোথায় আছে সেই রাঘব বোয়ালেরা? কারা সেই ইতিহাস লুন্ঠনকারী?

সময়টা ১২শ শতাব্দি থেকে ১৭শ শতাব্দি। ত্রিতীয় ক্রসেডে মুসলিমদের পরাজয়ের পর। হাজার মুসলিম জনপদ জালিয়ে দেয় খৃস্টানরা। বাগদাদসহ বিভীন্ন জায়গায় হাজার হাজার লাইব্রেরী জালিয়ে দেয় তারা। মুসলিম জনপদ থেকে নিয়ে যায় বইয়ের হাজার হাজার কপি। তারপর শুরু হয় বিকৃতি। একটু লক্ষ করলে দেখবো ১৩৩০ কবি ল্যাঙ্গল্যান্ডের জন্ম, মহাকবি চসার তার সমসাময়ীক, ১৬শ শতাব্দিতে শেক্সপিয়ার ও মিল্টনদের জন্ম, ১৭শ কবি ওয়ার্ডস ওয়ার্থ, বায়রন ও শেলীর জন্ম, ম্যাকেলের জন্ম ১৮শ। তার আগে পাশ্চাত্য ছিল অন্ধকার জগতে। অথচ তার আগে তারা সভ্যতার সংশ্পর্শেই আসেনি। ক্রসেডারদের বিজয়ের পরে তারা মুসলিমদের সভ্যতার কাছে আসার সুগোগ পায়। তারপর শুরু হয় তাদের উত্থান। যাদের কাছ থেকে তার অ,আ,ক,খ শিখেছে তাদেরকে তারা অবজ্ঞা করতে শুরু করলো। প্রতিযোগিতায় নামে মুসলিম বিজ্ঞানিদের ইতিহাস বিকৃত করার। যার বাস্তব কিছু চিত্র নিচে দেওয়া হল:

আল বাত্তানিকে রেথেন,রোয়েথেন, আল বাতেজনিয়াস ইত্যাদি নাম দিয়েছে কারা? ইউসুফ আল  সময়ঘুরিকে জোসেফ টি প্রিজড,আল রাজিকে রাজম,আল খাসিবকে আল বুযাথের, আল কায়াবিসকে ক্যাবিটিয়াস, আল খাওয়ারিজমকে গরিটাস,গরিজম নাম দেওয়া হয়েছে কেন?। ইবনে সিনাকে এভিনিস, ইবনুল হাইসামকে আলোজেন, মারকালিকে মারজাকেল, ইবনে আবির রিজালকে আল বোরাছেন, জাবির ইবনে হাইয়ানকে জিবাব, ইবনে বাজ্জাকে এডেমগেন্স, ইবনে রুশদকে এভেরুশ, এভ্রুন, আল বিতরুজিকে পিট্রিজিয়ান, ইবনে ত্যফায়েলকে বাথর, আবুল মাশারকে বুঝশের, আল কিন্দিকে কিন্দাস, ফারগানিকে ফাগানেস, হোসাইন ইবনে ইশাককে জোহাস নিউটন নামে পর্দার নিচে ঢেকে দিয়েছে কেন? এসব নাম দেখলে কেউ আজ অনুমানও করতে পারবেনা যে এগুলো মুসলিমদের নাম।  

কেন তারা মুসলিমদের নাম বিকৃত করে এভাবে দিয়েছে? অনেক ক্ষেত্রে মুসলিমদের আবিষ্কার নিজেদের নামে চলিয়ে দিয়েছে। অথচ যদি একটু পিছে ফিরে তাকাই। আর্কিমিডিস, টলেমি, ইউক্লিড, এরিস্টটলদের নাম আমরা কি কিভাবে পেয়েছি???

কাদের হাত ঘুরে এগুলো আধুনিক সমাজে এসে পৌছেছে? একটু কি দেখার চেষ্ঠা করবো না? পশ্চিমা অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতার বিকাশে মুসলমানদের সবচেয়ে বড়ো অবদান হচ্ছে এসবের রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং গ্রিক যুগ থেকে রেনেসাসেঁর যুগে এই জ্ঞানকে স্থানান্তর করার মধ্যে। কিন্তু আমাদেরকে বুঝতে হবে মুসলমানরা কেবল মানব জ্ঞানের সম্পদকে রক্ষাই করেনি বরং এসবের পাশাপাশি নতুন নতুন অনেক কিছু উদ্ভাবনও করেছেন, এগুলোকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌছিয়েঁও দিয়েছেন। অন্তত ছয় শতাব্দি ধরে মুসলিম মনীষীরা ছিলেন জ্ঞান ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে স্বণোর্জ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আলো বিকিরণকারী। অথচ সেই সময় ইউরোপে জ্ঞানীদের কণ্ঠ রোধ করে ফেলা হতো। মধ্যযুগে গীর্যাগুলো চিন্তাশীল মনীষী, জ্ঞানী-গুণী, বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছিল। তারা এইসব মহান ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বিচারালয়ও স্থাপন করেছিল। এভাবেই গির্যাপন্থীরা জ্ঞান বিকাশের পথে এবং জ্ঞানের জগতে নতুন নতুন উদ্ভাবনীর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সেইসাথে দার্শনিক এবং পণ্ডিতজনদের ধর্মীয় সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার করে অপমান অপদস্থ পর্যন্ত করেছিল। কিন্তু শ্বাশ্বত ও পবিত্র ধর্ম ইসলাম সেই সূচনা লগ্ন থেকেই মুসলমানদেরকে জ্ঞান অর্জনের জন্যে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে এসেছে।

মুসলমানরা গ্রিকবিজ্ঞানের চর্চা করেছিল প্রায় পাঁচশত বছর ধরে। লিখেছেন হাজার হাজার গ্রন্থ অনুবাদও করেছেন হাজার হাজার বই। কিন্তু গ্রীক বিজ্ঞানিদের নাম এমনভাবে বিক্রিত করেননি যার কারনে গ্রীক সত্তা হারিয়ে যায়। এজন্যই আর্কিমিডিস, টলেমি, ইউক্লিড, এরিস্টটলদের নাম এখনও অক্ষত আছে। ইউরোপের জ্ঞানগুরু ছিল মুসলিমরাই। নিউপোল্ড উইস তার “ইসলাম এট দা ক্রস রোড” গ্রন্থে লিখেছেন, নিশ্চয় রেঁনেসা বা বিজ্ঞান ইউরোপিয় শিল্পের পুনর্জাগারন ইসলাম ও আরব উতসের কাছে চরমভাবে রিনি। বাস্তবিকই ইউরোপ ইসলামি বিশ্বের কাছে ব্যাপক উপকৃত হয়েছিল কিন্তু তারা কখনো এই উপকারের কথা স্মরন রাখেনি কিংবা স্বীকৃতিও দেয়নি। কৃতজ্ঞতার পরিবর্তে ঘৃনার মাত্রা গভীর ও তীব্র করেছে।

১১৪১ ও ৪৩ সালে সেন্ট পিটার ও রবার্ট অব কেটন ল্যাতিন ভাষায় কুর আন অনুবাদ করে। যেখানেও রেখেগেছে বিদ্বেসের স্বাক্ষর।

বিজয়ীরা নাকি সবসময় ইতিহাস লেখে? তাই সত্য ইতিহাস সবসময় ধামাচাপা পড়ে যায়। কথাটা হয়তো ঠিক কিন্তু মুসলিমদের জন্য একদমই ঠিক নয়। প্লেটো-সক্রেটিস- এরিস্টোটলদের ইতিহাস আধুনিক বিশ্ব পেয়েছে মুসলিমদের মাধ্যমে। এগুলো শতকের কথা। কিন্তু কোথাও কারো নাম এমনকি কারো আবিষ্কার মুসলিমরা নষ্ট করেনি। কারন প্রকৃত মুসলিম এটা করতে পারেনা। কারন কোরান বলছে... তোমরা সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত কর না।

আমরা মনে করি যে, বিজ্ঞানে ব্যবহৃত সূত্রগুলো ইউরোপ বা পাশ্চাত্য  আবিষ্কার করেছে! আর ইতিহাস বিকৃতির কারনে সেটাই জানা স্বাভাবিক। সত্যিই কি তাই?  কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইতিহাস বলে এগুলি আবিষ্কার করেছে মুসলিমরাই।

আল বাত্তানিই প্রথম প্রমান করেন সূর্য তার একই অবস্থানে ফিরে আসতে ৩৬৫ দিন ৫ ঘন্টা ৪৬ মিনিট ২২ সেকেন্ড লাগে।

খলিফা মামুনের সময় ভুমধ্যসাগরের গভীরতা মাপার জন্য sin, cosine আবিষ্কার করা হয়। একটু গভিরে গেলে যে কেউ দেখতে পারবে যে, আগে ত্রিকোনমিতি পড়ার সময় sin, cosine এর জায়গায় zeyp down, zeyp, above শব্দ ব্যবহার করা হত। আরবিতে zeyp শব্দের ল্যাটিন হল sin. পরে তারা এগুলো ইচ্ছামত পাল্টে যে নাম দিয়েছে আমরা সেই নামেই চিনি। মুসলিম শিক্ষকরাও জানেনা এ আবিষ্কার মুসলিমরাই করেছে।

sinus table এর আবিষ্কার ও আমরাই করেছি। ভুমধ্যসাগরের কেন্দ্র থেকে দুরত্ব ১১১০০০ কিলোমিটার সেটাও মুসলিমদের আবিষ্কার। পাই থেটার মান যে ৩.১৪১৫৯২৬৩৫৫৮৯৭৪৩ সেটা আবিষ্কার করে গিয়াসউদ্দিন জামসেদ। তার রিসালাতুল মুতিহিয়া গ্রন্থে এর উল্যেখ পাওয়া যায়।

আজকের গনিতের ০ শুন্য আবিষ্কার করে মুসলমানরাই। শুন্য আবিষ্কার না হলে কি হত তা আমরা সহজেই বুঝতে পারি। এছাড়া প্রাচীন মিশরিয়রা যে শুধু যোগ বিয়োগ করার জন্য কাঠি ব্যবহার কিরতো। মুসলিমরা এগুলো বিশ্লেষন করে দশক সংখ্যার আবিষ্কার করে যোগ,বিয়োগ,গুন,ভাগ করা আবিষ্কার করে। যা মানবজাতির জন্য অনেক বড় খেদমত। অথচ তারা বলে ইসলাম মধ্যযুগীয় ধারনা। আশ্চার্য।

আল জেবরা বা বীজগনিতের আবিষ্কারকও মুসলিমরা। জেবির অর্থাৎ বীজ গনিত বলতে কি বুঝায়? জেবির শব্দটি মুসলিম গনিতবীদ আল জাবির এর নাম থেকে নেওয়া। এখানেও তারা নামকে বিকৃত করে সকল জায়গায় আল জেব্রা নামে অভিহিত করেছে। আল জাবির দিঘাত ও ত্রিঘাত সমিকরনের সমাধানও দিয়েছেন। লগারিদগমের সকল সুত্র সর্ব প্রথম আবিষ্কার করেন  আল হারজেম। এমনকি limit এর আবিষ্কারও মুসলিমরা করেছে।

এজন্যই তো রাসুল সা বলেছেন তোমরা মুমিনের দুরদৃষ্টিকে ভয় কর, কেননা সে আল্লাহ তায়ালার নূরের মাধ্যমে দেখে।

আরো বলা যায়, পদার্থ বিজ্ঞানের জনক কে? atom বা পরমানু, অনুর সর্বপ্রথম ধারনা দেয় কে? আলোর প্রতিসরন  এর সুত্র আবিষ্কার করেন কে? তাহলে হয়তো আমাদের কে ইবনে হেইশামের নামটি পর্যন্ত জানতে পারবো না। gay lussac এর সুত্র কে আবিষ্কার করেছে?

আজকে জার্মানিতে জাবির ইবনে হাইয়ানকে নিয়ে ডক্টরেট করা হচ্ছে। অথচ আমরা....কিন্তু আশ্চার্য হলেও সত্য পশ্চিমারা আমাদের বিজ্ঞানিদের বইগুলো নিয়ে তাদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। অথবা এমনভাবে বিকৃতি করছে যা জঘন্য মিথ্যাচার।

ভূগোল আবিষ্কার করেছে মুসলিমরাই। ইবনে খালদুনই সর্বপ্রথম ভূগোলকে ইতিহাসের ধারা থেকে বের করে জ্ঞানের অন্যতম শাখা হিসেবে প্রকাশ করেছে। আমেরিকা আবিষ্কার কারা করেছে?  ইতিহাসের কাছে যদি যান্তে চাওয়া হয়, ইতিহাস আমাদের বলবে ক্রিস্টেফার কলম্বাস। কারন হল আমরা সকল তথ্য ও উপাত্ত ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকে আমদানি করি। ক্রিস্টেফার কলম্বাস যখন মাসের পর মাস পশ্চিম দিকে যেতে থাকে কিন্তু কোন স্থপত্যভুমি খুজে পায়না। তখন জাহাজের সাথিরা তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে। তারা বলতে থাকে আমরা ফিরে যাব। কলম্বাস তখন বলেন,

দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়োনা। আমি যদি সঠিকভাবে পশ্চিম দিকে যাই তাহলে যে নতুন ভুমির সন্ধান পাব। এই চিন্তা ও তথ্য মুসলিমদের রচিত বই থেকে জানতে পেরেছি। সে ভুমিতে আমরা অবশ্যই যাবই। কারন মুসলিমরা কখোন মিথ্যা বলতে পারে না।

জিব্রালটার প্রনালির নাম হয়তো আমরা অনেকেই শুনিছি। কিন্তু এটার সাথে জড়িয়ে আছে একজন মুসলিম সেনাপতির নাম। যার নামে নামকরন করা হয়েছে জিব্রালটার প্রনালি। হ্যাঁ তারিক বিন জিয়াদের কথাই বলছি। ৭১১ সাল থেকে ৭১৮ সালের দিকে তারেক বিন যিয়াদ স্পেন বিজয় করলে তিনি প্রথম জনমানবহীন ঐ পাহাড়ে যেতে সক্ষম হন। আর তার নামেই নামকর করা হয়েছিল “জাবালে তারেক বা তারেকের পাহাড়”। অথচ আজ কে জানে জাবালে তারেক কে বিক্রিত করে রাখা হয়েছে জিব্রালটার প্রনালি ? কেন ইতিহাসের এই জঘন্য মিথ্যাচার ?

“মানব দেহে রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা কে আবিস্কার করেছিলেন?” “ফুসফুসের নির্মাণ কৌশল কে সভ্যতাকে সর্ব প্রথম অবগত করিয়েছিলেন?” “শ্বাসনালির অভ্যন্তরীন অবস্থা কেমন?” “মানবদেহে বায়ু ও রক্ত প্রবাহের মধ্যে ক্রিয়া-প্রক্রিয়ার ব্যাপারটা কী?” এসব প্রশ্নের উত্তরে যাঁর নাম এককভাবে উচ্চারিত হয় তিনি হলেন আলাউদ্দীন আবুল হাসান আলী ইবনে আবুল হাজম ইবনুন নাফিস আল কোরায়েশি (১২০৮-১২৮৮)। এয়োদশ শতাব্দীর চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিপ্লবের সূচনাকারী “ইবনুন নাফিস” ছিলেন অতি বিশিষ্ট দক্ষ এক ইমাম ও অতি উচ্চশিক্ষিত বিজ্ঞ হাকিম। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বহু গ্রন্থের প্রনেতা হিসাবে মৃত্যুরপূর্ব পর্যন্ত চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাঁর অবদান সর্বাধিক। হৃদপিণ্ডের এনাটমি নিয়ে পূর্বের মতবাদকে খন্ডন করে তাঁর দেওয়া মতবাদ বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানে সম্পূর্ণ বিজ্ঞান সম্মত বলে গৃহীত হলেও বিজ্ঞান জগতে তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় নি। কেন দেওয়া হয়নি ? তার কারন তিনি একজন মুসলিম।

জ্ঞানার্জনের চুড়ান্ত উন্নতি ঘটেছিল মুসলিমদের হাতেই আর সেটা সপ্তম শতাব্দিতে। আর এর ধারা অব্যাহত ছিল ১৪শ  থেকে ১৫শ শতাব্দি পর্যন্ত। পরবর্তিতে ইউরোপিয়ানরা মুসলিমদের কাছ থেকে ১৫ শতাব্দিতে দখল করা শুরু করে। এটা শুরু হয় ইউরোপের রেনেসার মাধ্যমে এবং ক্রুসেডের পর থেকে এটা পুরাপুরি তাদের হাতে চলে যায়। পরে তারা অবদান রাখতে শুরু করে। আজকে মানুষের কাছে যে জ্ঞান আছে তার ৬০-৭০% এসেছে মুসলিমদের কাছ থেকে। কিন্তু আমরা ক্ষুনাক্ষরেও টের পাইনা। কারন এগুলো আজ চরমভাবে বিকৃতির ক্ষপ্পরে পড়ে আহত হয়েছে।

আমরা ভুলে যাই পাই থেটা,টেন থেটা,শুন্যের আবিষ্কারক যে আমরাই।।পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র যে আমাদের হাতেরই আবিষ্কারক। তাহলে কেন আজ আমরা এতো পিছিয়ে? কেন শুনতে হয় আমার বোনের ধর্ষিতা চিৎকার? কেন আমি গর্ব করতে পারিনা আমার ইতিহাস নিয়ে। আমি কেন আজ নিস্তেজ নির্জব মৃতপ্রায় এক জাতি?

কারন জ্ঞান আহরনে আমাদের পিছিয়ে পড়া। আমাদেরকে আমাদের ইতিহাস না জানেতে দেয়া্। ধীরে ধীরে ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়া। ইসলামের মূল স্পীরিট থেকে আমাদের সরে আসা। ।

সত্য ইতিহাস জানতে যে বইগুলো পড়া যেতে পারে:
১. ইতিহাসের ইতিহাস বা চেপে রাখা ইতিহাস, লেখক: গোলাম মোহাম্মদা মর্তুজা
২. দাওয়াম, লেখক: নাজিমুদ্দিন এরবাকান
৩. প্রাচ্যবিদদের দাতের দাগ, লেখক: মুসা আল হাফিজ

পঠিত : ১০১৬ বার

মন্তব্য: ০