Alapon

মুসলিম বিশ্ব তথ্য সন্ত্রাসের স্বীকার!





‘লন্ডনে এক ইমামের নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ। মসজিদে ধর্ম বিষয়ক শিক্ষা নিতে আসা মুসলিম তরুনীরা এমন অভিযোগ করেছে।’


কয়েকদিন আগে বিবিসি বাংলায় এই শিরোনামের একটি সংবাদ দেখলাম। বিস্তারিত জানতে বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইডে ঢুকে নিউজটির আগা থেকে মাথা পর্যন্ত তিনবার পড়লাম। নিউজে লেখা ছিল, ‘উক্ত মসজিদে নিয়মিত ইসলাম শিক্ষা প্রদান করা। আর মসজিদের ইমাম সাহেবই এই শিক্ষা প্রদানের কাজটি করে থাকেন। স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা এখানে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ঠিকমত পড়া দিতে না পারলে ইমাম তাদের শাস্তি প্রদান করেন। এমনকি কিশোর-কিশোরীদেরও তিনি শাস্তি প্রদান করেন।’



নিউজটি এমনই ছিল। কিন্তু শিরোনামে তো দেখলাম যৌন হয়রানির কথা। কিন্তু নিউজের ভিতরে কোত্থাও যৌন হয়রানির কথা নেই।


এতো গেল যৌন হয়রানি। অতি সম্প্রতি আমেরিকায় বিভিন্ন রাজ্য বন্যায় প্লাবিত হয়ে যায়। বন্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে থাকেন। এসময় তারা একটি মসজিদে আশ্রয় নিতে চাইলে, মসজিদের ইমাম নাকি তাদেরকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেন নি। ইমাম নাকি বলেছেন, ‘এখানে কোন কাফের প্রবেশ করতে পারবে না’।


আর যায় কোথায়! আমেরিকার প্রথম সারির পত্রিকা এবং সংবাদ চ্যানেলগুলো এই ঘটনাটিকে শিরোনাম বানিয়ে ফেলল। সেই মসজিদের ইমামের সাথে কথা না বলেই তারা ঘটনাটি ব্যাপক হারে প্রচার করতে শুরু করল। আর টুইটারে চলতে লাগ সমালোচনার ঝড়। ভাগ্যক্রমে উক্ত ঘটনা নিয়ে সমালোচনা মূলক একটি পোষ্ট সেই ইমামের চোখে পড়ে। যার নামেই কিনা এত্তোসব অভিযোগ।


তখন সেই ইমাম টুইট করে বলেন, ‘এই ঘটনার সাথে আমার দূরতমও সম্পর্ক নেই। কারণ এই মুহুর্তে আমি হজ্ব পালন করার জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছি। অতএব এটি একটি বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রসূত সংবাদ।’


মিথ্যাচারের জনক কাকে বলা হয়, জানেন?
গোয়েবলস কে। এই গোয়েবলস সাহেব ছিলেন হিটলার দ্য ফুয়েরারের তথ্যমন্ত্রী। এই গোয়েবলসই হিটলারকে শিখিয়েছিলেন কিভাবে মিথ্যা কে সত্য বলে প্রমাণিত করতে হয়। যার কারণে গোয়েবলসকে সবচে নিকৃষ্ট মানুষ বলে গণ্য করা হয়। আর আজকের মিডিয়াগুলোই প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে তাকে নিকৃষ্ট মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অথচ আজকের প্রায় প্রতিটি মিডিয়াই গোয়েবলসীয় তত্বের অনুসারী। তারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে গোয়েবলস এর নীতিকেই অনুসরন করে চলেছে। তারা গোয়েবলসের ভাবশিষ্য। আর গোয়েবলস এর তত্বনুসারে, মুসলিমদের নামে মিথ্যা অভিযোগগুলো বারবার প্রচার করে সত্য প্রমাণ করবার চেষ্টা করছে!


মিডিয়া যে কত্তোগুরুত্বপূর্ণ তা আজও মুসলিম দুনিয়ার কতক গাধা শাসকরা বুঝল না। এগুলো হচ্ছে তথ্য সন্ত্রাস। তথ্য সন্ত্রাসের মোকাবেলা তথ্য দিয়েই করতে হয়। আর সেজন্য আমাদের প্রত্যেক মুসলিমকেই এক একটি তথ্য ভান্ডার হওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেক মুসলিমকেই এক একজন মিডিয়ার ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।





 

 


 

পঠিত : ৫৬৮ বার

মন্তব্য: ০