Alapon

জামায়াতের কারণেই শিবির বিপদে?



একজন আল্লাহর বান্দা, চরম বুদ্ধিমান শ্রদ্ধেয় ভাই দাবি করেছেন বাংলাদেশে জামায়াত নিয়ে আরেকটা শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠবে। এক্ষেত্রে করণীয় ছিলো ছাত্র শিবিরকে টোটালি জামায়াতে ইসলামী থেকে পৃথক রাখা। এই পৃথক না রাখাটার কারণেই আজকে ইসলামি ছাত্র শিবিরও বিপদে। তারা স্বাধীন থাকলে একাত্তরের একটা ভূখণ্ড আলাদা করার দায়ে বা দেশভাঙার দায়ে অভিযুক্ত হবার সুযোগ-সম্ভবনা ছিলোই না। তারা নির্বিঘ্নে ছাত্র-জনতার মাঝে তালিম তরবিয়াত ও ইসলাহের কাজ চালিয়ে যেতে পারতো। মানুষকে দ্বীনের পথে আনাটা আরো সহজ হতো। এইরকমই কিছু তিনি বুঝিয়েছেন। আমি যদি সঠিক বিষয়টি বুঝে থাকি আরকি।

তো এই প্রসঙ্গে আমার কথা হোলো আরেকটা শাহবাগ না। আরো অগণিত-অসংখ্য শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠতে পারে বাংলাদেশে। জামায়াত শুধু দুর্বলতর থেকে দুর্বলতর না, বরং দুর্বল হয়ে পরে ভেনিশ হয়ে গেলেও যদি কোনো ইসলামি গ্রুপ কার্যত শক্ত একটা আন্দোলন এবং সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে পারে। রাম-বাম-সেক্যুলারদের সাথে পাল্লা দিতে পারে, চ্যালেঞ্জ করতে পারে তাদের শক্তির ভিত্তিকে, তাদের বস্তাপঁচা জগাখিচুড়ি মার্কা বাতিল আদর্শকে —তখন সেই আন্দোলন, সেই গ্রুপকে নিয়েও, মানে সেই গ্রুপ বা সংগঠনের বিরুদ্ধেও হাজারো শাহবাগ আন্দোলন গড়ে ওঠবে। একটা চিরন্তন সত্য বিষয় তা। চ্যালেঞ্জ দিলাম আমি!

এই যে মনে করুন আফগান তা-লি-বা-ন, তারা তো স্বাধীনতা বিরোধী কোনো ধরনের অপশক্তি না। সেই দেশ স্বাধীন করতে সেখানে জামায়াতে ইসলামী, তা লি বা ন -সহ সকলেরই ভূমিকা ছিলো। যদ্দুর জানি আমি। মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমিন। তারাও তো কোনো ধরনের যুদ্ধাপরাধী বা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলো না। কিন্তু তবুও তাদের ওপর এই জুলুম কী কারণে?

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলেই সে দেশের সেক্যুলার গোষ্ঠীর নানাধরণের উৎপীড়ন চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এরদোয়ান তো সে দেশে ইসলামি খিলাফাহ বিনির্মাণ করবার ঘোষণাও দেয় নি। কাগুজে কলমের কোনো ইসলামি সংগঠনও নয় তাঁর দল । তবুও কী কারণে প্রায়শই পশ্চিমা মিডিয়া এবং তাঁর দেশীয় কথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা তাঁর বিরুদ্ধে শত্রুতার নীতি পোষণ করে?

এতোসব বিষয়াদি আমাদের সম্মুখে স্পষ্ট হয়ে থাকার পরেও আমরা কিন্তু জাস্ট একটা দায় দিয়ে কীভাবে যেনো পথ অতিক্রম করতে চাই। এটা আসোলে নিরেট পরাজিত মানসিকতার প্রকাশ বলেই মনে করি আমি। কারণ, পৃথিবীর সব দল-মত, তন্ত্রমন্ত্রের প্রধান টার্গেটই হচ্ছে ইসলাম। এই যে হাবিজাবি কতো বিষয়-আশয়ের অভিযোগ অনুযোগ আমরা করতে দেখি , তা স্রেফ অযুহাত কেবল। আপনার আমার দ্বীন-আদর্শের ওপর বিদ্বেষবশত তারা এমনটা করে থাকে হরহামেশা। তাদের টার্গেট আমাদের জীবন-বিধান আল ইসলাম। সে ইসলামকে সামনের কাতারে নিয়ে যেতে যেই গোষ্ঠী, যেই দলটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে সেই দলকেই তারা তাদের শিকারে পরিণত করবে। বিষয়টি সোজা হওয়া সত্ত্বেও আমরা কেনো যেনো বুঝতে পারি না। আফসোস!

তারমানে কী জামায়াতে ইসলামীর কোনো ভুল ডিসিশন নেই? ছাত্রশিবিরেরও কি কোনো ত্রুটি নেই ? সোজাসাপ্টা মন্তব্য — আছে। অসংখ্য। অগণিত। কিন্তু তাদের ভালোগুলোও কম নয়। দ্বীনের জন্যে, সত্যের জন্যে তাদের ডেডিকেশানও কম নয়। অসংখ্য জাহিলিয়াতের ঘোরে নিমজ্জিত প্রাণকে তারা পরম মমতায় আগলে নিয়ে এসেছে দ্বীনের পথে। সত্যের দিকে। নিজের প্রাণটার মায়াও কখনো কখনো তাদের তুচ্ছতম হয়ে গেছে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধানকে প্রতিষ্ঠার উদগ্র আকাঙ্খা থেকে !

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এই সংগঠনসহ সব মুসলিম প্লাটফর্মকে কবুল করুন। তাদের ভুলগুলো শুধরে সম্মুখপানে মুক্তির পতাকা ধারণ করে এগিয়ে যাবার তাওফিক দান করুন। আর যারা পরাজিত মানসিকতার পরিচয় দিয়ে হাবিজাবি দোষ দিয়ে দায় এড়িয়ে মুখ গুঁজে আড়ালে পড়ে উটপাখির জীবন বেছে নিতে চায়, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তাদেরকেও হেদায়েতের আলো নাসীব করুন। আ-মী-ন!

পঠিত : ৪৮৭ বার

মন্তব্য: ০