Alapon

বাল্য বিবাহ!

কয়েক বছর আগের কথা। সম্ভবত, তখন শীতকাল চলছিল। আব্বার ব্যবসার কাজে প্রত্যন্ত এক গ্রামে গিয়েছিলাম। কাজ শেষ করতে করতে রাত ৮টা বেজে গেছে। এইবার বিদায় হবার পালা। বাইক ষ্টার্ট করতে যাবো, এমন সময় পাশ্ববর্তি এক বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হল।


আমার সঙ্গে থাকা স্থানীয় লোকটিসহ সেই বাড়িতে গেলাম। গিয়ে দেখি আঙ্গিনার মাঝখানে বেশ কিছু ভদ্রগোছের মানুষ বসে আছে। তাদের সাথে একজন মহিলাও আছে।


তাদের চিৎকার চেঁচামেচির মাঝখান থেকে যতোটুকু বুঝলাম তা হল, ‘এই বাড়ির মালিক তার মেয়েকে বিবাহ দিতে যাচ্ছিলেন। মেয়ে ক্লাস টেনে পড়ে। আর এই সংবাদ কে বা কারা ব্রাক এনজিওকে জানিয়ে দেয়। ব্রাক প্রয়োজনীয় লোকজনসহ প্রায় পাগলা কুকুরের মত হাঁফাতে হাঁফাতে হাজির হল। এবং বলল, এই বিবাহ বাল্য বিবাহ। বাল্য বিবাহ বন্ধ করেন। না হলে আপনাদের সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।’



ঘটনা ইন্টারেস্টিং! ইন্টারেস্টিং ঘটনা দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন মেয়ের বাবা এসে বললেন, ‘আপনাদের আমি একটা কথা কই। আমার মেয়ে যখন মানুষের ছেলের সঙ্গে প্রেম করে বেড়াচ্ছিল, তখন আপনারা কই আছিলেন। মাইনষের ছেলের সঙ্গে যখন নোংরা কাজ করছে, তখন আপনারা কই ছিলেন। যখন সে আমার মান সম্মান সব শেষ করে ফেলছে, তখন আপনারা কই আছিলেন।’
এই কথা শোনার পর স্থানীয় মেম্বার ব্রাকের লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘উনি যেগুলো বলেছে, ওগুলো ফিরিয়ে দিতে পারলে আপনারা বিবাহ করতে পারবেন। আমি আপনাদের সহযোগিতা করব। আর যদি ফিরিয়ে দিতে না পারেন, তবে দয়া করে বিদায় হোন।’


ব্রাকের লোকজন সুরসুর করে বিদায় হয়ে গেল।


গত কয়েকদিন থেকে দেখছি, প্রথম হাগু পত্রিকাসহ বেশ কিছু পত্রিকা বাল্য বিবাহের পিছনে লেগেছে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন। আবার ভিন্নদিকে তারাই প্রকাশ করছে ‘আপনি প্রেমে পড়েছেন, তা কিভাবে বুঝবেন’ এই শিরোনামের ফিচার।


প্রথম হাগু বলতে চায়, বালিকারা গন্ডায় গন্ডায় প্রেম করুক। নিয়মিত রুম ডেট করুম। রুম ডেটের ফলাফল স্বরূপ, ভ্রুন হত্যা করুক। ভ্রুন হত্যা করতে না পারলে, জন্ম হবার সাথে সাথে বাচ্চাকে ডাষ্টবিনে ফেলে দিক। কিন্তু তারা বিবাহ না করুক।


প্রেমের বীজ ছড়িয়ে দিয়ে এবং বিবাহ বন্ধ করে প্রথম হাগু প্রমাণ করতে চায়, ‘বাল্য বয়সে প্রেম অতি আধুনিকতা আর সম্মতিতে বিবাহ করা অতি প্রাচীনতা’।


পঠিত : ৫৪৯ বার

মন্তব্য: ০