Alapon

||উসমানি খিলাফত বিলুপ্তি : খলনায়ক কামাল আতাতুর্ক||




১৯১৪ সালে উসমানিদের প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত একটি মারাত্মক ভুল হিসেবে প্রমাণিত হয়। মরণোন্মুখ উসমানি খিলাফত তখন পরিচালিত হতো তিন পাশা—জামাল পাশা, তালাত পাশা ও আনোয়ার পাশার ইচ্ছায়। এরা তিনজনই এককভাবে কেন্দ্রীয় শক্তি—ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও রাশিয়ার প্রতিপক্ষ মিত্রশক্তি জার্মানদের পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেন। ফলস্বরূপ উসমানি খিলাফত দক্ষিণ দিক থেকে ব্রিটিশ, পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ান আর পশ্চিম দিক থেকে গ্রিক আক্রমণের মুখে পড়ে এবং ১৯১৮ সালে যখন যুদ্ধ শেষ হয়, তখন শুধুমাত্র আনাতোলিয়ার মূল ভুমিটুকু ছাড়া বাকি পুরো সাম্রাজ্য বিজয়ী—কেন্দ্রীয় শক্তিগুলোর মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যায়।

দুনমে ইহুদি বংশোদ্ভূত—মুস্তফা কামাল পাশা উসমানি খিলাফতের একজন সেনানায়ক ছিলেন। ততদিনে উসমানি খিলাফতের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ—তিন পাশার দিন ফুরিয়ে গিয়েছিল আর ইহুদি বংশোদ্ভূত মুস্তফা কামাল পাশার পালে হাওয়া লেগেছিল। কামাল পাশার ভয়ে তিন পাশার জীবন তখন হুমকির মধ্যে ছিল। তরুণ তুর্কি দলের নেতৃত্ব দিয়ে সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদকে অপসারণ করার মধ্য দিয়ে তারা যে মূলত উসমানি খিলাফতকে টুটি টিপে মেরে কফিনে শুইয়ে দিয়েছিলেন—এ ব্যাপারটা তারা একটু পরে বোঝতে পারলেও সময়মতো বুঝতে পারেননি। ততদিনে মৃত উসমানি খিলাফতের কফিনে শেষ পেরেক এঁটে দেওয়ার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলেন মুস্তফা কামাল পাশা।

উসমানি খিলাফতের মরণকালের এমনই এক ক্রান্তিলগ্নে মধ্য আনাতোলিয়ায় মুস্তফা কামাল পাশা তুর্কিদের জাতীয় বীর-রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। কেন্দ্রীয় শক্তির দখলে থাকা—রাজধানী ইস্তাম্বুল দখলের জন্য ব্রিটিশ সেনাদের বিরুদ্ধে একজন উসমানি নেনানায়ক হিসেবে তিনি অসামান্য নেতৃত্বের পরিচয় দেন এবং ব্রিটিশদের রুখে দিতে সক্ষম হন। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর—কামাল পাশার আসল উদ্দেশ্য উন্মোচিত হয়। তার মূল লক্ষ্য ছিল—তুর্কি জনগণের একমাত্র পরিচয় হিসেবে তুর্কি জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটানো এবং বহুজাতিক উসমানি খিলাফতের পরিবর্তে শুধুমাত্র তুর্কি পরিচয়ের উপর ভিত্তি করে একটি সেক্যুলার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

মুস্তফা কামাল পাশা ছিলেন একজন নাস্তিক ও চরম ইসলামবিদ্বেষী। তার ভাষ্যমতে, ‘আরবদের ধর্ম—ইসলামগ্রহণ করার আগেও তুর্কিরা একটি মহান জাতি ছিল। আরবদের ধর্মগ্রহণ করার পর; এই ধর্ম আরব, পারসিক এবং মিসরীয়দের সাথে তুর্কিদের সমন্বয় তো করেইনি; বরঞ্চ তুর্কি জাতির ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে, তুর্কি জাতীয়তাবোধকে অসাড় করে দিয়েছে। আর এটিই স্বাভাবিক ছিল। কারণ, মুহাম্মাদ যে ধর্মের গোড়াপত্তন করেছিলেন, তার উদ্দেশ্যই ছিল—সকল জাতির ওপর আরব জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করা!’

নাউজুবিল্লাহ! ইসলামের ইতিহাসের প্রতি মুস্তফা কামালের এই বিকৃত, ঘৃণ্য ও তির্যক দৃষ্টিভঙ্গিই তার জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে তাকে উদ্বুদ্ধ করে। তুর্কি জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করে, ১৯২০ সালের তুর্কি স্বাধীনতাযুদ্ধে তিনি উসমানি সামরিক অফিসারদেরকে তার অধীনে একত্রিত করে গ্রিক, ব্রিটিশ ও ফরাসি দখলদার বাহিনীকে আনাতোলিয়া থেকে বিতাড়িত করেন। ১৯২২ সালের মধ্যে বিদেশি আগ্রাসন থেকে তুর্কিদের সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করতে সক্ষম হন। এভাবেই ‘জিরো’ থেকে ‘হিরো’ হয়ে যাওয়া ছদ্মবেশি ইহুদি এই মুস্তফা কামাল পাশা সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আধুনিক প্রজাতান্ত্রিক তুরস্কের সূচনা করেন।

নবগঠিত তুরস্কের ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় আংকারায় অবস্থিত গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি বা সংক্ষেপে ‘জিএনএ’র হাতে। নবগঠিত তুর্কি সরকারের প্রধান হবেন গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি নির্বাচিত একজন প্রেসিডেন্ট। স্বাভাবিকভাবেই নামটি ছিল আনাতোলিয়ার স্বাধীনতাযুদ্ধের খলনায়ক—মুস্তফা কামাল পাশা। সে হিসেবে তিনি ‘আতাতুর্ক’ বা ‘তুর্কিদের পিতা’ উপাধি গ্রহণ করে প্রজাতান্ত্রিক তুরস্কের প্রথম প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন।

উসমানি খিলাফতকে তখনও বিলুপ্ত করা হয়নি। সুযোগসন্ধানী কামাল আতাতুর্ক তখনও সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন। প্রথমদিকে তার অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিল—নতুন তুর্কি সরকার বোধহয় উসমানি খিলাফতের পরিবর্তে ইসলামের নতুন বাহক হিসেবেই কাজ করছে। গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে—যাতে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করা হয় এবং এটাও বলা হয় যে, প্রত্যেকটি আইনই ইসলামিক আইন বিশারদদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্যানেল কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে, যাতে কোন আইন শরিআর সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।

আংকারা-কেন্দ্রিক যখন কামাল আতাতুর্কের প্রজাতন্ত্রী তুরস্ক গঠিত হয়, তখনও শেষ উসমানি খলিফা—দ্বিতীয় আবদুল মজিদ (১৯২২-২৪) ইস্তাম্বুলে উসমানি খিলাফতের গদিতে বহাল তবিয়তে ছিলেন। কিন্তু ইস্তাম্বুলে যতদিন একজন উসমানি সুলতানের অধীনে আরেকটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকারের অস্তিত্ব আছে, ততদিন এই নতুন সরকার স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছিল না। আংকারা ও ইস্তাম্বুলের উভয় সরকারই তুরস্কের সার্বভৌম ক্ষমতা নিজেদের দাবি করতে থাকে এবং দুটি সরকারের লক্ষ্যও ছিল বিপরীতধর্মী। এজন্য ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে চলে আসা ছয় শতাধিক বছরের উসমানি খিলাফতকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে ১৯২২ সালের ১লা নভেম্বর আতাতুর্ক তার মতলব হাসিল করেন!

কামাল আতাতুর্ক কিন্তু সাথে সাথেই খিলাফতের বিলুপ্ত ঘটাননি। উসমানি খলিফাকে কোনো ক্ষমতা ছাড়া প্রতীকীরূপে তিনি বহাল রাখেন। এই পরিবর্তন যে তুর্কি জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করবে, তা বোঝতে পেরে আতাতুর্ক এই বলে সাফাই গাইতে থাকেন—তিনি আসলে চিরাচরিত ইসলামিক সরকার ব্যাবস্থাতেই ফিরে যাচ্ছেন! নবম থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত, অধিকাংশ আব্বাসি খলিফারই নিজস্ব কোনো ক্ষমতা ছিল না। মূল কর্তৃত্ব ছিল উজির আর সেনাপতিদের হাতে। আতাতুর্ক ক্ষমতাহীন খিলাফতের পক্ষে এই ব্যাখ্যা প্রচার করতে থাকেন।

তুরস্কের বাইরে বসবাসরত মুসলিম উম্মাহ আতাতুর্কের এসব কার্যকলাপকে সেই খিলাফতের উপরই আঘাত হিসেবে বিবেচনা করতে থাকে। বিশেষত ভারতে বসবাসরত মুসলিমরা তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং খিলাফত আন্দোলনের সূচনা করে। তারা খিলাফতরক্ষায় তুর্কি সরকারের পদক্ষেপ দাবি করে এবং এ বিষয়ে বহির্বিশ্বের সহায়তা কামনা করে। আতাতুর্ক খিলাফতের পক্ষে মুসলিমদের এই সমর্থনকে তুরস্কের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বহির্বিশ্বের হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং এই অভিযোগে ১৯২৪ সালের ৩রা মার্চ, আতাতুর্ক ও গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি খোদ খিলাফতকেই বিলুপ্ত ঘোষণা করে! এমনকী খলিফাসহ উসমানি রাজপরিবারের সব সদস্যদের নির্বাসনে পাঠিয়ে দেয়!

সুযোগ পেয়ে পশ্চিমা শক্তিগুলো তাকে ব্যবহার করে। চরম ইসলামবিদ্বেষী এই নাস্তিক কামাল আতাতুর্ক তার পশ্চিমা প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কোমর বেঁধে মাঠে নামেন। পশ্চিমাদের মতো কথিত উন্নতি ও অগ্রগতির নামে তিনি উসমানি খিলাফতের স্বর্গরাজ্য—তুরস্ক থেকে ইসলামের শিকড় কেটে ফেলতে শুরু করেন। ‘রাজনীতিকে ইসলাম-মুক্তকরণ’-এর নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাতারাতি সম্পূর্ণ বদলে ফেলা হয়। সেক্যুলার স্কুলগুলোর প্রসারের সুবিধার্থে ইসলামি-শিক্ষা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। ধর্মীয় অবকাঠামোগুলোও ধ্বংস করা হয়। মাত্র দুবছর আগে গঠিত শরিআ কাউন্সিল বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ধর্মীয় বৃত্তিপ্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়। সুফি-দরবেশদের খানকাগুলো জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হয়। শরিআ আদালত অবৈধ ঘোষণা করে দেশের সকল কাজিকে বরখাস্ত করা হয়।

ইসলামের ওপর মুস্তফা কামাল আতাতুর্কের আক্রমণ শুধুমাত্র সরকারি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তুর্কিদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকেও আতাতুর্কের সেক্যুলার-নীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এগুলোর মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয়ের আলোকপাত করা হচ্ছে—

~পাগড়ি বা টুপি পরা নিষিদ্ধ করা হয়। পরিবর্তে পশ্চিমা অনুকরণে হ্যাট পরিধান করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
~হিজাবকে হাস্যকর পোশাক বর্ণনা করে সরকারি ভবনগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
~হিজরি ক্যালেন্ডারের পরিবর্তে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করা হয়।
~আরবিতে আজান দেয়া নিষিদ্ধ করে তুর্কি ভাষায় আজান চালু করা হয় এবং দেশের হাজার হাজার মসজিদে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়।
~জুমাবারের পরিবর্তে শনিবার এবং রবিবারকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।
~ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বর্ণনা করা ধারাটি সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া হয়। আতাতুর্কের ধর্মনিরপেক্ষ নীতিমালা সেই স্থান দখল করে নেয়।
~আরবি ভাষার পরিবর্তে ল্যাটিন বর্ণ চালু করা হয়।
~হাজার হাজার আলেমকে হত্যা করা হয়।
~অফিস-আদালতে নামাজ পড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
~মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
~আরবিতে নাম রাখা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
~ইসলামি আচার-অনুষ্ঠান পালনের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
~সরকারি নির্দেশে অনেক মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, তুর্কিভাষায় আরবি হরফের পরিবর্তে ল্যাটিন অক্ষর চালু করার কারণ হলো—সে সময় তুর্কিদের শিক্ষার হার খুবই কম ছিল। শিক্ষার হার বাড়ানোর অজুহাত দেখিয়ে কামাল আতাতুর্ক আরবি বর্ণমালার পরিবর্তে ল্যাটিন অক্ষর চালু করলেন। নবম শতাব্দীতে ইসলামে প্রবেশ করার সময় থেকে, পারসিকদের মতোই তুর্কিভাষা লেখা হতো আরবি বর্ণে। যেহেতু তুর্কিদের লিখিত সব বইপত্রই আরবি বর্ণে লেখা ছিল, তারা কুরআন ও ইসলামি সাহিত্য বা আইনকানুন খুব সহজেই পড়তে পারত। ইসলামের সাথে তুর্কিদের এই সম্পর্ককে আতাতুর্ক হুমকি মনে করলেন। ল্যাটিন বর্ণ চালুর সাথে সাথে আতাতুর্ক আরবি শব্দগুলোর তুর্কি প্রতিশব্দ খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠন করলেন। তার জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নে আতাতুর্ক এমন একটা ভাষা চাচ্ছিলেন, যা হবে—বিশুদ্ধ তুর্কিভাষা। অর্থাৎ উসমানি সময়কালীন হারিয়ে যাওয়া বা অপ্রচলিত হয়ে যাওয়া পুরোনো তুর্কি শব্দগুলো তিনি ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেন।

আতাতুর্কের পরিকল্পনানুযায়ী, ভাষা-সংস্কার খুবই সফল হয়েছিল। কয়েক দশকের ভিতর উসমানি তুর্কিভাষা কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। নতুন প্রজন্মের সাথে পুরোনো প্রজন্মের দূরত্ব সৃষ্টি হয়। কারণ, তাদের মধ্যকার দৈনন্দিন কথাবার্তাও কঠিন হয়ে যায়। যেহেতু নতুন প্রজন্ম অতীত সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল। তুর্কি সরকার আতাতুর্কের তুর্কি জাতীয়তাবাদের সহায়ক পছন্দমতো ইতিহাস গিলিয়ে দিতে সফল হয়। ধর্মনিরপেক্ষ তুরস্ক তুর্কিদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা থেকে ইসলামকে মুছে দিতে এসব সংস্কার কার্যকর ভূমিকা পালন করে। নিজেদের ঐতিহ্য, ভাষা আর ধর্ম সংরক্ষণে ধর্মীয় মানসিকতাসম্পন্ন তুর্কিদের সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও সরকার সেক্যুলার নীতিগ্রহণে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে।

এক কথায়—১৯২৪ সালের ৩ মার্চ তুরস্কের মুসলিম ঐতিহ্য ও উসমানি খিলাফতকে ধ্বংস করে প্রায় ৬০০ বছরের অধিককাল ধরে একটি শাসক জাতিকে পাশ্চাত্যের অনুসারী করার চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেননি নাস্তিক মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক।


-আইনুল হক কাসেমী

পঠিত : ৯৪৭ বার

মন্তব্য: ০