Alapon

মনে রাখবেন, আল্লাহর আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটে না।



আলোচিত আজহারুল হত্যাকান্ডে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান এবং আজহারুলের স্ত্রী গ্রেফতার হয়েছে। মূলত আজহারুলকে পরকীয়ার বলি হতে হলো। ইমাম আব্দুর রহমান এবং আজহারুলের স্ত্রীর মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। তাদের সেই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আজহারুল। তখন ইমাম আব্দুর রহমান আর আজহারুলের স্ত্রী মিলে আজহারুলকে সরিয়ে দেয়।

ইমাম আব্দুর রহমান আজহারুলকে হত্যা করে ছয় টুকরো করে মসজিদের সেপটি ট্যাংকে ফেলে দেয়। তারপর মসজিদের সিড়িতে রক্ত দেখে মুসল্লিরা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ রক্তের খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারে মসজিদের পাশের বাসিন্দা আজহারুল গত কয়েকদিন থেকে নিখোঁজ। এরপর সন্দেহ হয় মসজিদের ইমামকে। পুলিশ ইমামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা মাত্রই তিনি সব স্বীকার করে নেন। ইমাম আব্দুর রহমান এই হত্যাকান্ড ঘটানোর পর আরও চারদিন নামাজ পড়ান। আর চারদিনই তিনি নামাজে ভুল করেন।

এখন অনেকেই প্রশ্ন করবেন, মসজিদের ইমামরাও যদি পরকীয়ার মতো কাজে জড়িয়ে পড়ে, তবে আমরা বিশ্বাস করবো কাকে?

সত্যি কথা বলতে মহান আল্লাহ মানুষের ক্ষেত্রে যেসব মৌলিক বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন, সেগুলো লঙ্ঘন করলে যে কেউই এমন ঘৃণ্য পাপে জড়িয়ে পড়তে পারে; সে মসজিদের ইমামই হোক আর গার্মেন্টের শ্রমিকই হোক। মহান আল্লাহর মৌলিক বিধি-নিষেধের মধ্যে একটি হলো, পর্দা করা। অর্থাৎ মাহরাম এবং গায়রে মাহরাম মেনে চলা। যে নারী বা পুরুষের সাথে কথা বলা, দেখা করা জায়েজ আছে কেবল তাদের সাথেই দেখা বা কথা বলা যাবে।

এমন ঘটনা যে শুধু ইমাম আবদুর রহমানের ক্ষেত্রেই ঘটেছে ব্যাপারটা তেমন নয়। এই ঘটনা হাজার বছর পূর্বেও ঘটেছিলো। সেই ঘটনা ঘটেছিলো সেই সময়ের সবচেয়ে দ্বীনদার ও আমলদ্বার ব্যক্তি বারসিসার সাথে।

বারসিসা ছিলেন বনি ইসরাইলের বাসিন্দা। সেই সময় তিনি ছিলেন সেই অঞ্চলের সবচেয়ে ভালো দ্বীনদার ও আমলদ্বার ব্যক্তি। তো সেই অঞ্চলে তিন ভাই ছিলো-যারা আল্লাহর পথে জিহাদে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সমস্যা হলো তাদের ছোট বোনটাকে নিয়ে। তারা জিহাদে গেলে তাদের ছোট বোনটাকে দেখবে কে! তখন গ্রামের মানুষজন পরামর্শ দিলো, ‘তোমরা তোমাদের বোনকে বারসিসার কাছে রেখে যেতে পারো। বারসিসার কাছে তোমাদের বোন নিরাপদেই থাকবে।’

বারসিসা প্রথমে আপত্তি করলেও পরে তাদের বোনকে রাখতে রাজি হয়ে যায়। বারসিসা থাকতো উপাসনালয়ে। আর সেই মেয়েকে উপাসনালয় থেকে কিছুটা দূরে একটি ঘরে রাখা হয়। বারসিসা প্রতিদিন সেই মেয়েকে গিয়ে খাবার দিয়ে আসতো। একদিন শয়তান বারসিসাকে মনে মনে মন্ত্রণা দেয়, ‘মেয়েটা ওই ঘরে একা একা থাকে, খাবার দিয়ে আসার সময় তো তুমি তার সাথে দু চারটা কথা বলতে পারে। তাতে ওই মেয়ের মন ভালো থাকবে।’

এরপর থেকে বারসিসা খাবার দিয়ে আসার সময় তার সাথে কথাবার্তা বলতো। কথাবার্তা বলতে বলতে তাদের মাঝে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সেই ঘনিষ্ঠতা থেকে বারসিসা তার ঘরের ভিতরে বসে গল্প করতে থাকে। এরপর একদিন তারা জিনায় লিপ্ত হয়ে পড়ে।

আর আল্লাহ বলেছেন, তোমরা পর নারীর কাছেও যেও না। আর আমরা যখনই আল্লাহর আদেশ অমান্য করে পরনারীর কাছে যাবো, তখনই পরকীয়ার মতো ঘৃন্য কাজে জড়িয়ে পড়বো; সে ইমামই হোক আর গাড়ির ড্রাইভারই হোক। আল্লাহর আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটে না।

পঠিত : ৫২২ বার

মন্তব্য: ০