Alapon

আল-মুসতাসফা ---- ইমাম গাজ্জালী



বিশ্বমানবতার প্রতি ইসলামী সভ্যতার অন্যতম একটি উপহার হল উসূলে ফিকহ। কোন জাতি, কোন উম্মাহ এবং কোন কওমের কাছে উসূলে ফিকহের মত কোন জ্ঞানতত্ত্ব তাদের জ্ঞানের ইতিহাসে নেই।
মানবতার ইতিহাসে ইলমূল উসূল হল অনন্য সাধারণ এক জ্ঞানের নাম। এই জন্য আমরা মুসলমান হিসেবে এই জ্ঞান নিয়ে গর্ব করতে পারি। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালীর লেখা ' আল-মুসতাসফা' নামক বইটিকে উসূলের উপর লিখিত সবচেয়ে সেরা বই হিসেবে ধরা হয়।
ইমাম গাজ্জালী এই বইয়ের ভূমিকা লিখতে গিয়ে বলেন, এই ভূমিকা শুধু এই বইয়ের জন্য লিখিত ভূমিকা নয়। এই ভূমিকা জ্ঞানের সকল শাখার জন্য। অর্থাৎ যারা জ্ঞান গবেষণা করতে চায় তাদের উচিত হবে এই ভূমিকা পড়া।
ইমাম গাজ্জালী ও মুসতাসফা নিয়ে গবেষণাকারী উস্তাজগণ বলেন যে, এই বইটির ভূমিকা এই বইয়ের চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ। (উল্লেখ্য যে, এই ভূমিকাটি ১০৯ পৃষ্ঠা)
এই বইয়ে তিনি হুকুম আহকাম সমূহকে ثمرات (ছামারাত) নামে, দলীল সমূহকে المثمر (মুছমির) নামে, ইজতিহাদ ও ইস্তিনবাতের পন্থাকে طريق الاستثمار (তারিকুল ইসতিসমার) নামে এবং মুজতাহিদকে المستثمر (আল-মুসতাসমির) নামে নামকরণ করেছেন।
ইমাম গাজ্জালীর প্রশংসা করতে গিয়ে W. Montgomery Watt বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর পরে সবচেয়ে বড় মুসলমান হলেন ইমাম গাজ্জালী। তিনি তার পূর্বের চারশত বছরকে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেন এবং তার পরে আগত সকল চিন্তাবিদকে তিনি যে কোন ভাবেই হোক প্রভাবিত করেছেন।
আহমেদ মাহমুদ সুবহী বলেন, প্রতিটি সভ্যতারই একজন করে ব্যক্তি রয়েছেন যারা একাই সেই সভ্যতাকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। গ্রীক সভ্যতার প্রতিনিধি হিসেবে যেমন এরিস্টটলকে ধরা হয়, আধুনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার প্রতিনিধি হিসেবে যেমন দেকার্ত কিংবা কান্টকে ধরা হয়, তেমনি ভাবে ইসলামী সভ্যতার প্রতিনিধি হিসেবে ইমাম গাজ্জালীকে ধরা হয়।

পঠিত : ৬৭৪ বার

মন্তব্য: ০