Alapon

কেমন ছিলেন দেখতে আমাদের প্রিয় নবী (সা.)



কাতাদা (র) বলেন— আল্লাহ্‌ যত নবী পাঠিয়েছেন সবার চেহারা ছিল সুন্দর এবং কণ্ঠও ছিল সুন্দর। রাসূল (স) এর ক্ষেত্রে, তারা তাঁর মত সুন্দর কোনো কিছু বা কাউকে কখনো দেখেনি, ইসলামের পূর্বে বা পরে।

কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, বাহির থেকে তাকে সুন্দর দেখালেও ভেতরটা কুৎসিত। কিন্তু, রাসূল (স) এর ক্ষেত্রে, তিনি দেখতে যেমন অত্যাশ্চর্য সুন্দর ছিলেন, তাঁর চরিত্র—আল্লাহ্‌ যার প্রশংসা করেছেন— ছিল তার চেয়েও অধিক সুন্দর।
আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা) রাসূল (স) এর উপস্থিতির কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন— যদি রাসূল (স) শুধু উপস্থিত থাকতেন... তিনি কোনো কিছু তিলাওয়াত না করে বা কোনো কথা না বলে চুপ করে থাকতেন, আপনি তাঁর দিকে তাকালেই বুঝতে পারতেন তাঁর মাঝে স্বর্গীয় সৌন্দর্যের কোনো ব্যাপার আছে।

এই জন্যই আমরা এমন বহু ঘটনার কথা জেনেছি যেখানে মানুষ শুধু রাসূল (স) এর মুখায়বের দিকে তাকিয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা) যিনি রাসূল (স) এর আগমনের পূর্বে মদিনার প্রধান ইহুদি পণ্ডিত ছিলেন, যখন তিনি রাসূল (স) কে দেখতে গেলেন, রাসূল (স) কোনো শব্দ উচ্চারণ করার পূর্বেই...তিনি বলেন, আমি তাঁর চেহারার দিকে তাকালাম আর আমি বুঝলাম এই চেহারা "লাইসা বি ওয়াজহি কাজ্জাব" এই চেহারা কোনো মিথ্যাবাদীর চেহারা হতে পারে না।
রাসূল (স) এর বর্ণনা দেয়া হয়েছে শামায়েল তথা বর্ণনার বইগুলোতে পা থেকে মাথা পর্যন্ত। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। একভাবে প্রায়শ তাঁর বর্ণনা দেয়া হতো— তিনি ছিলেন চাঁদের চেয়ে সুন্দর।

রাসূল (স) এর অনুপ্রেরণামূলক চেহারা দেখে মানুষ তাজ্জব হয়ে যেতো। তাঁর চেহারা ছিল গভীর রাতের পূর্ণ চাঁদের চেয়েও সমুজ্জ্বল সুন্দর। আপনি যদি মরুভূমির কথা চিন্তা করেন...কেমন আশ্চর্যজনক অসম্ভব সুন্দর এবং বিস্ময়কর দেখাতো পূর্ণিমার চাঁদকে। এ কথা মাথায় রেখে আনাস ইবনে মালিক (রা) এর এই বর্ণনাটি শুনুন। তিনি বলেন— এক রাতে আমি সত্যিই তুলনা করতে চেয়েছি। আমি পূর্ণ চাঁদের দিকে তাকালাম এরপর আমি রাসূল (স) এর চেহারার দিকে তাকালাম। আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম, কোনটি বেশি উজ্জ্বল। আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম, রাসূল (স) এর চেহারা ছিল অধিক উজ্জ্বল, অধিক সুন্দর মরুভূমির পূর্ণ চাঁদের চেয়েও। আর পূর্ণ চাঁদ শুধুই যে সুন্দর তা নয়, এটা এতোই মনোমুগ্ধকর যে আপনার পক্ষে অন্য কিছুর দিকে তাকানো সম্ভব নয়।

রাসূলুল্লাহ (স) এর অন্য সবকিছু ছিল নিখুঁতভাবে ভারসাম্যপূর্ণ। মনে আছে? আল্লাহ্‌ আজ্জা ওয়া জাল্লা জিব্রিল (আ) এর বর্ণনা দিয়ছেন- যখন তিনি মারিয়াম সালামুন আলাইহার নিকট আগমন করেন- একজন নিখুঁত অবয়বের মানুষ হিসেবে। বাশারান সাওইয়্যা। রাসূল (স) এর ক্ষেত্রেও সবকিছুই ছিল নিখুঁতভাবে গঠিত। তিনি অতিরিক্ত লম্বা ছিলেন না। আবার তিনি খাটোও ছিলেন না। তাঁর শরীরের রং অতিরিক্ত সাদা বা কালো ছিল না। তিনি ছিলেন আজহার আল-লাউন। তাঁর চামড়া ছিল উজ্জ্বল আকৃতির। আবার একই সাথে রাসূল (স) ফ্যাকাশে সাদাও ছিলেন না। তাঁর মুখমণ্ডল বেশি গোলাকার বা অপ্রশস্ত ছিল না। কিন্তু গোলাকারের কাছাকাছি ছিল। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আপনি যদি রাসূল (স) এর দিকে তাকিয়ে থাকেন...আমি চাই, কল্পনা করুন যে আপনি তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। সবার আগে আপনি তাঁর চোখের দিকে তাকাবেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

উম্মে মা'বাদ (রা) বলেন, রাসূল (স) এর চোখের কালার কন্ট্রাস্ট ছিল নিখুঁত। তাঁর চোখের কালো অংশ ছিল অতিশয় কালো। আর শুভ্র অংশ ছিল অতিশয় শুভ্র। তাঁর চোখের পাতার পশমগুলো ছিল এতোই লম্বা যে মনে হয় যেন প্রাকৃতিকভাবেই তাতে 'কুহুল' বা আইলাইনার দেওয়া আছে। তাঁর কান্নার কারণে এগুলো সবসময় সিক্ত থাকতো। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর চোখের ভ্রুগুলো ছিল লম্বা আকৃতির বাঁকানো। সেগুলো পরিপূর্ণ ছিল। উভয় ভ্রু প্রায় সংযুক্ত ছিল। মাঝখানে দারুণ সুন্দর একটি বিভাজন ছিল যেখানে আলোর দ্যুতি ছড়াত। আজিইমাল হামা। বর্ণনা করা হয়েছে যে, রাসূল (স) এর ছিল উন্নত কপাল। তাঁর কপালে একটি রেখা ছিল। তিনি কোনো কিছুতে বিরক্ত হলে শুধু তা দৃশ্যমান হতো। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আর তাঁর নাকের বর্ণনায়...তাঁর নাক চ্যাপ্টা ছিল না, আবার তা অতিরিক্ত চোখাও ছিল না। কিন্তু রাসূল (স) এর ছিল চমৎকার ঢালু নাক। তারা বর্ণনা করেছেন- এর মাঝে অনুপম ক্ষীণ আলোর একটি ঝলক ছিল। এটি এমনভাবে দ্যুতি ছড়াত, আপনি যখন তাঁর থেকে দূরে থাকতেন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আপনার মনে হতো এটি তাঁর আসল আকৃতির চেয়ে বড়। কিন্তু কাছে এলে বুঝতেন এটি শুধু তাঁর নাকের দ্যুতি যা এটিকে উন্নত করে তুলেছিল।

তিনি যখন তাঁর মুখ খুলতেন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তাঁর দাঁত আপনার দৃষ্টিগোচর হতো। আর সেগুলো নিখুঁতভাবে সাজানো ছিল। স্মরণে আছে তো? তিনি দৈনিক কমপক্ষে পাঁচ বার মিসওয়াক ব্যবহার করতেন। বর্ণনা করা হয়েছে তাঁর (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) দাঁতগুলো ছিল শিলাবৃষ্টির মত সাদা। আর সেগুলো একত্রে গুচ্ছবদ্ধ ছিল না। দাঁতগুলো এমনভাবে সাজানো ছিল যে প্রতিটি দাঁতের মাঝে চমৎকার একটি লাইন ছিল। তাঁর মুখ (আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম) ছিল প্রশস্ত। বর্ণনা করা হয়েছে, তাঁর উচ্চারণ ছিল নিখুঁত। তাঁর শব্দগুলো ছিল ঝরঝরে। আপনি তাঁর সবকিছুই শুনতে পেতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর তাঁর কণ্ঠ ছিল সুমধুর। এতে ছিল এক ধরণের প্রাকৃতিক প্রতিধ্বনি। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
তাঁর চুল ঠিক অন্য সবকিছুর মতই নিখুঁতভাবে মাঝামাঝি ধরণের ছিল। খুব বেশি সোজা বা কোঁকড়া ছিল না। বরং চুলগুলো ছিল ঢেউয়ের মত। কখনো কখনো তিনি তাঁর চুলগুলোকে কানের লতি পর্যন্ত বড় হতে দিতেন। আবার মাঝে মাঝে তিনি সেগুলোকে কাঁধ পর্যন্ত বড় করতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর অবশ্যই হজ্ব এবং উমরার সময় তিনি তাঁর মাথা কামিয়ে ফেলতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

তাঁর আরও ছিল পরিপূর্ণ ঘন দাঁড়ি। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। রাসূল (স) তাঁর চুল আঁচড়াতেন এবং দাঁড়িও আঁচড়াতেন। আর সেগুলো ছিল নিকষ কালো। সাহাবারা ১৪ থেকে ২০ টি ধূসর চুল এবং দাঁড়ি গণনা করেছেন, তাঁর মৃত্যুর সময়। তো, ৬৩ বছর বয়সে তাঁর মাত্র কয়েকটি ধূসর চুল এবং দাঁড়ি ছিল। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
উনারা বর্ণনা করেছেন, তিনি যখন তেল প্রয়োগ করতেন তখন এগুলো আর দেখা যেতো না। আর যদি দেখতে পেতেন, সেগুলো ছিল তাঁর ঠোঁটের ঠিক নিচে এবং তাঁর ঝুলপিতে। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম।

এরপর আপনি তাঁর ঘাড়ের দিকে তাকাবেন। রাসূলুল্লাহ (স) এর ছিল অভিজাত লম্বা ঘাড়। তারা বলেন, উনার ঘাড় ছিল হরিণের ঘাড়ের মত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এরপর আপনি তাঁর দুই কাঁধের দিকে লক্ষ্য করবেন। তাঁর ছিল প্রশস্ত কাঁধ। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি ছিলেন খুবই শক্তিশালী। তাঁর বাহুদ্বয় ছিল শক্তিশালী। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। তাঁর ছিল শক্ত বুক, এমনকি তাঁর ইন্তেকালের সময় পর্যন্ত তাঁর পেট কখনো বুকের সমান্তরাল অতিক্রম করেনি। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তো, তিনি তাঁর ওজন ঠিক রেখেছিলেন। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। এবং তিনি তাঁর ফিটনেস ঠিক রেখেছিলেন।
রাসূলুল্লাহ (স) লোমে আবৃত মানুষ ছিলেন না। তাঁর মাথার চুল এবং দাঁড়ি ব্যতীত রাসূল (স) এর শরীরের বাকি অংশে তেমন লোম ছিল না। সামান্য কিছু পশম ছিল তাঁর বুকে, ছোট্ট একটি রেখা যা বুক থেকে একেবারে নাভি পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

এরপর আপনি তাঁর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিকে দৃষ্টি দিবেন। রাসূলুল্লাহ (স) কে বর্ণনা করা হয় তাঁর ছিল সুন্দর আকৃতির বড় বড় অঙ্গ। তো, তাঁর ছিল বড় বড় অস্থি, বড় বড় হাত, বড় বড় পা। তাঁর পায়ের মাংসপেশী ছিল বৃহৎ আকৃতির। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তারা বলে, তাঁর হাঁটুর নিচের মাংসপেশী ছিল গোলাকার। আর তাঁর পায়ের গোড়ালিতে একেবারেই কোনো ওজন ছিল না। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম।
তাঁর শরীরের নিম্নাংশ এতোই শক্তিশালী ছিল যে, (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি ঘোড়া এবং উটের পিঠে লাফ দিয়ে উঠে যেতে পারতেন এবং কোনো জিন ছাড়াই বসে যেতে পারতেন। তাঁর শরীরের নিম্নাংশের শক্তিমত্তার কারণে।

এই জন্যই আপনারা পাবেন—সুবহানাল্লাহ— হাসান (রা) ক্ষেত্রে বলা হয় তাঁর শরীরের উপরের অংশ ছিল রাসূল (স) এর মত। অর্থাৎ, তাঁর সৌন্দর্য। আর হুসাইন (রা) এর ক্ষেত্রে বলা হয় তাঁর শরীরের নিম্নাংশ ছিল রাসূল (স) এর মত। অর্থাৎ, তাঁর শক্তিমত্তা। কারণ, তিনি ছিলেন একজন যোদ্ধা। রাদিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু। তাঁর নানার মত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এসব সত্ত্বেও, আনাস ইবনে মালিক (রা) বর্ণনা করেন— তাঁর হাত এবং পায়ের পাতা ছিল সিল্কের চেয়েও মসৃণ। তাই, খুব সহজেই তাঁর হাত এবং পা থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে যেতো। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আর তাঁর নিকট থেকে খুব সুন্দর একটি সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়তো। আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম। তাঁর শরীর থেকে পারফিউমের ঘাম নির্গত হতো। ঘামের গন্ধ ছিল সুমিষ্ট। যদি তাঁর সাথে করমর্দন করতেন তাহলে তাঁর হাতের সুঘ্রাণ আপনার হাতে লেগে থাকতো কয়েক দিন যাবত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর নিঃশ্বাস ছিল শ্রেষ্ঠ। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আপনি যদি দূর থেকে তাঁকে দেখতেন তাঁর উপস্থিতি আপনাকে বিমুগ্ধ করে দিতো। আর যখন তিনি নিকটে আসতেন তাঁর সৌন্দর্য আপনাকে এতোটাই অভিভূত করে ফেলত যে, আপনার পক্ষে তাঁর দিকে দৃষ্টি তুলে তাকানো সম্ভব হতো না।
আল বারা (রা) বলেন— আল্লাহর শপথ! এক রাতে আমি তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলাম। আমি রাসূল (স) কে লাল রঙয়ের একটি পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখতে পেলাম। এটি ছিল ইয়েমেনী এক লাল হুল্লা। বিভিন্ন উপলক্ষে পরিধান করার জন্য এটি ছিল তাঁর সবচেয়ে পছন্দের পোশাক। তিনি বলেন— সেই রাতের রাসূলুল্লাহ (স) এর চেয়ে সুন্দর কোনো দৃশ্য আমি আর কখনো অবলোকন করিনি। আবু হুরাইরা (রা) বলেন, আমি যখন রাসূল (স) কে দেখলাম তাঁর গঠন প্রকৃতি এতোটাই নিখুঁত ছিল যে মনে হয় যেন তাঁকে খাঁটি রুপোর ছাঁচে গড়া হয়েছে। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আর রাসূল (স) এর সবচেয়ে বিখ্যাত জিনিস ছিল তাঁর মুচকি হাসি। তিনি সবসময় মুচকি হাসতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! দুঃখে, সুখে সবসময় তাঁর মুখে হাসি লেগে থাকতো। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কা'ব ইবনে মালিক (রা) বলেন— ইজা সূররা, যখন তিনি খুশি থাকতেন তাঁর মুখমণ্ডল এমনকি আরও বেশি দীপ্তিমান হয়ে উঠত। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আমি চাই আপনারা এই ব্যাপারটা এক মুহূর্তের জন্য ভাবুন, কীভাবে রাসূল (স) এতোটা হাসতে পারেন, যখন তাঁর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তিনি ছিলেন 'মুতাওয়াসিলাল আহযান'—যিনি সর্বদা গভীর মর্মপীড়ায় থাকতেন, 'আজদা-ইমাল ফিকরা'—যিনি সর্বদা গভীর চিন্তায় ডুবে থাকতেন? 'লাইসা লাহু রা-হা —তাঁর কোনো বিরতি ছিল না। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি সবসময় এতো বেশি বোঝা বহন করতেন! এটি তাঁর চরিত্র নিরূপণ করে। এমন একটি চরিত্র যার কথা আল্লাহ্‌ কুরআনে উল্লেখ করেছেন। কিছু মানুষ, যাদের দেখে আপনার মনে হবে তারা হলেন 'আগনিয়া'— তাদের জীবনে কোনো সমস্যাই নেই। মানুষের সাথে তাদের আচার-আচরণ করার পদ্ধতি দেখে আপনার এমনটি মনে হতে পারে। কিন্তু, মুচকি হাসি একটি সাদাকা। এটি একটি বদান্যতা।

আর রাসূল (স) এর ক্ষেত্রে— পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যিনি তাঁর উম্মাহর প্রতি রাসূল (স) এর চেয়ে বেশি হেসেছেন। আবার ঠিক একই সাথে, পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যিনি তাঁর উম্মাহর জন্য রাসূল (স) এর চেয়ে বেশি কেঁদেছেন। তো, দিনের বেলা মানুষের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি হাসতেন। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর এটি ছিল তাঁর অনুপম উদারতার বহিঃপ্রকাশ। আর রাতের বেলা তাঁর রবের সামনে তাঁর চেয়ে বেশি ক্রন্দন করার মানুষও ছিল না। সেটাও তাঁর আশীর্বাদপুষ্ট উম্মাহর জন্য সুখ, আনন্দ এবং মুক্তি নিয়ে আসার জন্য।

- ওমর সোলাইমান

পঠিত : ৪৬৬ বার

মন্তব্য: ০