Alapon

মনুষকে কিভাবে টেকনিক্যালি 'না' বলা যায়?



মানুষ কোন কাজ করতে চাইলে একদিনে করে উঠতে পারে না। আমি দিনের পর দিন অনুভব করেছি, মানুষকে আরও শক্ত ভাবে "না" বলা উচিত। পেরে উঠছিলাম না, বলতে গিয়ে পারতাম না, হয়ত বা যাওয়ার আগে ভেবে গিয়েছি তারপর দেখা গেছে, গিয়ে "হ্যাঁ" বলে দিয়েছে। তারপর নিজকে মনে মনে বকা-ঝকা করা।

এসব করতে করতে আমি এখন অনায়াসেই না বলতে পারি। না বলতে পারা একটা শিল্প। মনে আঘাত না দিয়ে না বলতে পারা আরও বড় শৈল্পিক ব্যপার।

সব জিনিসের পিছনে একটা সায়েন্স আছে। সায়েন্স মানে নিয়ম, কলা-কৌশল!

একজন অতি সেন্সেটিভ ও মানসিক ভাবে নরম মানুষের ক্ষেত্রে না বলা খুব কষ্টকর। এমন অনেক মানুষ দেখেছি যারা নিজের ক্ষতি সহ্য করে "হ্যাঁ" বলে দেয়। কারণ তারা না বলতে পারে না। নানা কারনে হ্যাঁ বলে প্যারা খায়।

আমি যখন বুঝতে শিখলাম, এইটা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে, আমি তখন নানা ভাবে নিজকে বুঝাতে থাকলাম কিভাবে না বলা যায়।

তারপর বুঝতে শিখলাম, না বলার জন্য দরকার শক্ত লজিক। আপনি যদি না বলার পর লজিক দিয়ে সে না বলাটাকে ল্যাজিট করতে পারেন তখন দেখবেন আপনার পাশের মানুষটি তা মেনে নেবে। না বলার জন্য দরকার শক্ত লজিক সেই ব্যপারে। আপনি কেন না বলবেন, না বললে কি লাভ, কি ক্ষতি আপনার! যদি মনে করেন কেউ না বলার পর মন খারাপ করবে, না বলার পর তাকে লজিক গুলো বলে দেন, যাতে সে বুঝতে পারে। পৃথিবীর সব মানুষ লজিকে পরাজিত হয়। যদি আপনি সেই ব্যপারে ঠিকঠাক লজিক দিতে পারেন।

দ্বিতীয় কথা, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, হলো, " ইমোশনাল ইন্টিলেজেন্স" বৃদ্ধি করা।

মানুষ হিসাবে ইমোশান, প্রেম-ভালবাসা, আনন্দ-দুঃখ, পাওয়া- না পাওয়ার মতো একটা অনুভুতি। আপনি যদি আপনার অনুভুতিকে নিয়ন্ত্রণ করে কোন ব্যপারে সিধান্ত নিয়ে পারেন, তবেই দেখবে আপনি ঠিক সিধান্ত নিয়েছেন। আপনি তখন আর না-হ্যা বলে হারবেন না।

কারণ, আপনি যখন ইমোশানলি এটাচ হয়ে যাবেন তখন নিজের ভাল-মন্দ-লাভ-ক্ষতির হিসাব করতে পারবেন না। যদি ধীরে ধীরে আপনার ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স বৃদ্ধি করেন তবেই পারবেন ।

এখন প্রশ্ন হলো, ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স কি? কিভাবে বৃদ্ধি করতে হয়, হবে?

বিংশ শতাব্দীতে, ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স এখন বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় স্কিলড। কোন ঘটনায় নিজে আক্রান্ত না হয়ে জাজমেন্টলে না হয়ে ঐ ঘটনার বিচার করতে পারাই হলো, ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স ।

ইমোশনাল ইনটেলিজেন্স নিয়ে বেশ কিছু বই আছে বাজারে। ইংরেজি লেখকেদের। আপনি চাইলে পিডিএফ নামিয়ে নিতে পারেন, চাইলে হার্ড কপিও কিনে নিতে পারেন। নীলক্ষেতও পাওয়া যায় সেগুলো।


ছবির উৎসঃ গুগুল

এই বইটা আপনি কিনে পড়তে পারে। টেড-টকে অনেক ভিডিও আছে ইমোশন্যাল ইনটেলিজেন্স নিয়ে।

সবশেষে কথা হলো, আপনাকে সবার আগে বুঝতে হবে নিজের লাভ-ক্ষতি কি? সেই অনুসারে আপনাকে সাজতে হবে, উত্তর। চোখ- নাক-মুখ বন্ধ করে আপানাকে বলে ফেলতে হবে সেই উত্তর। একদিনে পারবেন না, ২ দিনে পারবেন না, ৩ দিনে ও পারবেন না। কিন্তু দেখবেন, ৪র্থ দিনে পেরে যাবেন। এভাবে চেষ্টা করুন, একদিন পেরে যাবেন।

কারণ চেষ্টা করার চেয়ে বড় কোন মন্ত্র নাই পৃথিবীতে।

বই পড়লে এ সম্পর্কিত আরও অনেক ডেটা পাবেন। নিজের উন্নতি নিজকেই করতে হয়। তাই লেগে পড়ুন। নিজের উন্নয়নের কাজে।

নিজের জীবনের বোঝা কেউ বয়ে দেয় না, নিজের জীবন নিজকেই বইতে হয়। তাই নিজকে সমৃদ্ধ করুন। উন্নত জীবনের জন্য।

পড়ার জন্য, ধন্যবাদ।

জীবন সুন্দর, উপভোগ করুন, আনন্দ করুন।

পঠিত : ৪০৫ বার

মন্তব্য: ০