Alapon

সন্তানহীনতার জন্য কি কেবল আবহাওয়া আর খাদ্যাভাসই দায়ী...?



বর্তমান সময়ের একটি কমন সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে, বাচ্চা না হওয়া! আমি এমন একাধিক দম্পত্তিকে চিনি, যাদের দাম্পত্য জীবনের প্রায় ৫ বছরেরও বেশি হয়ে গেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত বাচ্চা হয়নি। আর এই বাচ্চা না হওয়ার পিছনে আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদিকে দ্বায়ী করতে দেখা যায়।

কিন্তু আসলেই কি আবহাওয়া আর খাদ্যাভ্যাসের কারণেই এই বাচ্চা হচ্ছে না, নাকি আমাদের নিজেদেরও সমস্যা রয়েছে?

এক দম্পত্তির গল্প বলি। তাদের দাম্পত্য জীবনের আজ প্রায় ১৬ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু তারা আজও নিঃসন্তান। মূলত তাদের বিয়ের প্রথম বছরই বাচ্চা কনসিভ করে। কিন্তু তারা দুজনেই ভাবে, বৈবাহিক জীবন এখনো ভালোমতো শুরুই করলাম না, আর এখনই যদি বাচ্চা হয়, তাহলে তো কিছুই করা হবে না। এই চিন্তা করে তারা সেই সময় বাচ্চাটা নষ্ট করে ফেলে। এরপর সেই মহিলা আরও একবছর জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খান। বিয়ের তৃতীয় বছর থেকে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা শুরু করলে তাদের আর বাচ্চা হয়নি।

আমি আর এক দম্পত্তিকে চিনি, যাদের দাম্পত্য জীবনের ৬ বছর হয়ে গেছে কিন্তু এখনো বাচ্চা হয়নি। যদিও তারা বিয়ের ৫ বছর পর থেকে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু দীর্ঘদিন পিল খাওয়ার কারণে সেই মহিলার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন তাকে বড়ো বড়ো ডাক্তারদের চেম্বারে দৌড়াতে হচ্ছে। কিন্তু এতোকিছুর পরও আদৌ বাচ্চা হবে কিনা, তা আল্লাহপাকই ভালো জানেন!

আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগের কথা যদি বলি তখন এই জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলটাকে মানুষ ‘মায়া বড়ি’ নামে চিনতো। তখনকার মানুষ এই ‘মায়া বড়ি’-কে হারাম হিসেবে জানতো এবং সচেতনভাবেই বর্জন করতো। ফলে সেই সময়ের নারীদের খুব একটা শারীরিক সমস্যা হতো না। আর শারীরিক সমস্যা ছাড়াই তারা নরমাল ডেলিভারিতেই একাধিক সন্তান জন্ম দিতে পারতেন। আর এখন টাকা দিয়ে পিল কিনে খেয়ে একদিকে নারীরা নিজেদের শারীরিক ক্ষতি করছে, অন্যদিকে সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে পড়ছে। এতোদিন টাকা খরচ করে শরীরের ডিম্বানু উৎপাদন ব্যাহত করেছে, তারপর আবার টাকা খরচ করে ওষুধ খেয়ে ডিম্বানু উৎপাদন করতে হচ্ছে! ভাগ্যভালো থাকলে শেষ পর্যন্ত সন্তানের মুখ দেখা সম্ভব হচ্ছে। আর যদি কপাল হয় মন্দ তাহলে তাদের কপালে সন্তান জুটছে না।

বর্তমান সময়ে নিঃসন্তান দম্পত্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেটার জন্য শুধু আবহাওয়া আর খাদ্যাভ্যাসই দায়ী নয়, আমরা নিজেরাও দায়ী।

পঠিত : ৮৪১ বার

মন্তব্য: ০