Alapon

বাংলাদেশ যেভাবে গুমের দেশে পরিণত হচ্ছে...



৮ দিন নিখোঁজ থাকার পর গতকাল তরুণ ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা আদনানকে ফিরিয়ে দিয়েছে। কারা ফিরিয়ে দিয়েছে?
এই প্রশ্নের উত্তর আমি-আপনি দেশের আপামর সকল মানুষই জানে। কিন্তু ভাসুরের নাম মুখে নেওয়া নাকি পাপ। তাই ডিজিএফআই-এর নাম মুখে আনলাম না!

পুলিশের ভাস্যনুসারে আবু ত্বহা আদনান ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে ছিলেন। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্ক্রিপ্ট রাইটিং এ বরাবরই দুর্বল। কিন্তু এতোটা দুর্বল তা জানা ছিলো না। ব্যক্তিগত কারণে যে কেউ আত্মগোপনে যেতেই পারে, কিন্তু সেই ব্যক্তিকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য তার বন্ধু এবং ড্রাইভারও আত্মগোপনে যায়- এমন তরো ঘটনা জীবনের প্রথম দেখলাম। যাইহোক, আবু ত্বহা আদনান ভাইকে বহনকারী গাড়িটি এখনো আত্মগোপনে আছে! সম্ভবত তার মান অভিমান এখনো ভাঙ্গানো সম্ভব হয়নি। আর সেকারণেই গাড়িটি এখনো ফিরে আসেনি।

যাইহোক, এবার আসল কথায় আসি। আবু ত্বহা আদনানকে যে ডিজিএফআই গুম করেছিলো, এ কথা সকলেই আন্দাজ করেছিলো। কারণ, বাংলাদেশে এই কাজটি ডিজিএফআই নিয়মিতই করে থাকে। কিন্তু আন্দাজটা সত্যিই হয়ে যায় তখনই, যখন আবু ত্বহা আন্দানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি ট্র্যাক করে লোকেশন দেখায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টস্থ ডিজিএফআই হেডকোয়ার্টার! আর তার ট্র্যাকিং লোকেশনের ছবি যেদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, সেদিন সন্ধ্যাবেলায় আবু ত্বহা আদনানকে তার শ্বশুরের বাসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল আবু ত্বহা আদনানকে আদালতে তোলা হলে তিনি স্বীকারক্তি দেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তারপর আদালত তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে বলেন। তারপর রাত ১১ টায় তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

এখন প্রশ্ন হলো, আবু ত্বহা আদনান কি আদৌ সত্যটা প্রকাশ করবেন, তাকে কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং কোথায় রেখেছিলো?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো, না! আবু ত্বহা আদনান সাহেব এই কথা কোনোদিন মিডিয়া বা পাবলিকের সামনে প্রকাশ করবেন না। কারণ, তাকে ছেড়ে দেওয়াই হয়েছে এই শর্তে যে, তাকে কে বা কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো এবং কোথায় রেখেছিলো, এই কথা কাউকে বলা যাবে না। এমনকি পরিবারের লোকদের কাছেও বলা যাবে না। আর যদি এ কথা প্রকাশ পায়, তাহলে তাকে পুনরায় তুলে নিয়ে আসা হবে এবং ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে কিংবা আজীবনের তরে গুম করে ফেলা হবে।

আমি এই কথা এতো নিশ্চিত হয়ে বলতে পারছি একারণেই যে, আড়াই মাস গুম থাকা এক ব্যক্তির থেকে আমি এটা জানতে পেরেছি। সঙ্গত কারণেই তার নাম উল্লেখ করছি না। কিন্তু নিশ্চিত করে বলছি, গুমকৃত ব্যক্তিদের সাথে এমন কথা বলেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তাই আমি অনেকটাই নিশ্চিত যে, আবু ত্বহা আদনান কোনো কিছুই প্রকাশ করবেন না। আর এভাবেই বাংলাদেশ গুমের দেশে পরিণত হচ্ছে।

পঠিত : ৩৩১ বার

মন্তব্য: ০