Alapon

কেন পার্বত্য ডিলিং আলাদা?



এই দেশেই একটা সময় গিয়েছে, যখন পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে তুমুল আলোড়ন হয়েছিলো। এরপর এক বিশাল সময় পূর্ণ-নিরবতার। এরমাঝে আমাদের প্রজন্মটি প্রি-স্কুলিং বয়স থেকে অনার্স পড়ুয়া সময়ে উপনীত!

এই দীর্ঘ নিরব সময়টায় পাহাড়ে এক র‍্যাডিকেল পরিবর্তন এসেছে। হঠাত করে, কিছু মানুষ এমন অবস্থায় পেয়েছেন যে, একে বলা যায়, খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া!

'কীভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে আলাদা যুদ্ধ করে বিচ্ছিন্ন করতে হবে'- যাতীয় ব্লগ লিখা হয়েছে প্রকাশ্যে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একাধিকবার আন্তর্জাতিক লবিং ও মানব র‍্যালি করেছে খোদ জাতিসংঘের সামনে!

এ সবকিছু হয়ে এসেছে, দরিদ্র বাংলার ঘামের উপার্জনে কোটা সুবিধা নিয়ে কম যোগ্যতা সত্বেও উচ্চশিক্ষা পাওয়া একদল নিমকহারামের দ্বারা! এরাই প্রথমে দেশীয় শিক্ষার গন্ডি পেরিয়ে পশ্চিমা উচ্চকোটার সুবিধায় উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষন পেয়ে যাবতীয় বিচ্ছিন্নতার কাজ এগিয়েছে।

এদেরই ব্যাকআপ হল, সশস্ত্র উপজাতিয় জেএসএস, ইউপিডিএফ, জেএসএস সংস্কার, ইউপিডিএফ সংস্কার এবং কিছু ছোট ছোট সশস্ত্র দল। এরা হেন কোন অপরাধ নেই যা এই দেশের গহীন পাহাড়ে না করেছে। উন্নয়নরত বিদেশী প্রকৌশলী টিমকে অপহরন থেকে শুরু করে দূর্গম পাহাড়ের নীরিহ উপজাতিদের মাচার একমাত্র লাউটি, খোপের একটি মুরগিতেও কর আরোপ করে ভয়াবহ জীবনের জন্ম দিয়েছে।

বাস্তবতা হল, পার্বত্য বাঙালীদের চেয়ে কম কষ্ট ভোগ করে না উপজাতীয় সাধারন জনগন। বাঙালীরা জীবন রক্ষার্থে নিজেদের সম্পদ ফেলে পালিয়ে শহরমুখী হলেও সাধারন উপজাতি জনগন থেকে গেছে সন্ত্রাসীদের গ্রিবের ভেতর একদম গহিনে!

ফলে, তারা প্রতিনিয়তই টর্চারের শিকার হচ্ছে। এইসব টর্চারের নানান ফরমেশন আছে।

হুট করে সন্ত্রাসীদের কোন দল এসে কোন বাড়িতে হাজির হলে তাদেরকে রাজার ভোগ দিয়ে তুষ্ট করতে না পারলে খবর হয়ে যায় অসহায় পরিবারের। থাকতে দিতে হয় রাতে!

কোন উপজাতিয় মেয়ে একটু সুন্দর ভাবে বেঁচে ফেরার আশায় কোন বাঙালি ছেলের সাথে প্রনয়ে জড়ালে, সেই মেয়ের ইজ্জতের দুই পয়সার দাম থাকে না। সেটা একদম সামাজিক ভাবে! সবার সামনে ধর্ষণ, এমনকি রাতে খুন করে ফেললেও কারও টু শব্দ করার সুযোগ নেই। সবাই বুঝে, কিন্তু শব্দ করে না! আর এইসবই করা হয়, কথিত স্বাধীনতা অর্জনের নামে!

কতটা গহীনে কতটা জিম্মি হলে এক বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তা উপলব্ধি করতে হলে 'একটু তলিয়ে দেখার' মানসিকতা থাকতে হবে। একটু সময় লাগিয়ে ফেসবুকে খুঁজলে উপজাতিদের নানান আইডিতেই এমনতর হাজার হাজার প্রুভ পাওয়া যাবে।

শহরগুলোতে উপজাতি মেয়েদের বাঙালি প্রনয় ঠেকাতে নিয়জিত আছে জেএসএস বা ইউপিডিএফের বিশেষ নিরাপত্তা গার্ড। এদের কাজই হল, উপজাতি মেয়েদের খোঁজ রাখা, সাইজ করা!

নওমুসলিম যারা হবার সাহস করে, তারা মূলত শহরের কাছাকাছি কিংবা কোন প্রশাসনিক বেইজমেন্টের আশপাশের বসবাসকারী উপজাতি। এছাড়া নিশ্চিত মৃত্যুকে বেছে নেয়ার মত সাহস বা প্রাথমিক ইমানও স্বাভাবিকভাবে উপজাতিদের মাঝে জন্মায় না, সেভাবে ইসলামকে না বুঝার কারনে।

ঐতিহাসিক ভাবে উপজাতিরা ধর্মীয় ভাবে অগ্নি বা প্রকৃতিপুঁজারি ছিলো। পরে তাদের অতিত রানী একটু উন্নত পরিচয় পাবার আশায় তাদের নিয়ে প্রথমে হিন্দু ও পরে বৌদ্ধ হন। এভাবেই উপজাতিদের বেশির ভাগ বৌদ্ধ ধর্মে যান৷ বর্তমানে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাশ থেকেই উপজাতিদের নেতারা 'পশ্চিমা ধর্ম হিসেবে' খ্রিষ্টানিজম প্রোমোটে নিরব থাকে।

'খ্রিষ্টবাদের বদলে জুম্মাল্যান্ডের চুক্তি।'

আর এই যায়গায় নওমুসলিমরা খুব অসহায়। একদিকে, প্রকাশ্য খুনীবাহিনী, আর অন্যদিকে আন্তির্জাতিক প্রভাব বলয়। উপজাতিরা মুসলিম হওয়া মানে সন্তু+পশ্চিমা উভয় গোষ্ঠীর কমন স্বার্থে আঘাত।

পশ্চিমা গোষ্ঠী কেবল রাজনৈতিক ভাবেই নয়, অর্থনৈতিক, জাতিসংঘের মিশন সহ নানান যায়গা থেকে হুমকি তৈরি করে বলেই পার্বত্য নিয়ে ডিলিং-টা আর বাংলাদেশের ডিলিং এর মত নয়!

--------

আজকের বাংলাদেশ, পার্বত্য ইস্যুতেই প্রথম আলো পুড়িয়েছে, বিবিসিকে আঘাত করেছে, সিএইচটি কমিশনের নোংরা বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রোমোটিংকে প্রকাশ্যে প্রতিহত করে সামনে এসেছে। এই বাংলাদেশ পার্বত্য নিয়ে সচেতন।

কথা হল, একটা মসজিদ অবশ্যই অতিগুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ইট পাথরের মসজিদের চেয়ে পার্বত্য নিয়ে গোটা বাংলার তরুন প্রজন্মের মনে একটি 'শক্ত চেতনার মসজিদ' নির্মান সবার আগে জরুরি।

জরুরি হল, পার্বত্য ঘিরে গড়ে ওঠা বহুদিনের অন্ধকারের একটি কৃত্রিম ভয়ের আবহ ভেঙে নিজের দেশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে এনজয়ের যায়গা থেকে বাংলাদেশ মনে করে, আপাতত বাহ্যিক চোখ বন্ধ রেখেই এগিয়ে যাওয়া।

আপনি নিজে যখন বিশ্বাস করবেন- 'বাংলাদেশটা আপনার'।
তখন জাতিংঘও বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে- 'বাংলাদেশটা আপনারই। আর, উপজাতিরাও বাংলাদেশের অংশ।'

প্রিয় ভাইয়েরা! শুধু সচেতনতাই পারে হারিয়ে যাবার আগেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশের পতাকাকে আরো শক্ত ভাবে পুঁতে দিতে!

পার্বত্য ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পজিটিভলি সাপোর্ট করুন! আপামোর জনতার সচেতন শক্তিতে শক্তিশালী করুন। নিজেও হয়ে যান বাংলার অতন্দ্র পাহারাদার।

পঠিত : ৩৭০ বার

মন্তব্য: ০