Alapon

গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া?





এটা বাংলাদেশের একটি পারফেক্ট প্রতীকী ছবি। দুর্নীতি দিয়ে হাসিনা এভাবেই বাংলাদেশকে ভঙ্গুর করে দিয়েছে।

বাংলাদেশে হাসিনা সরকার গঠন করার পর ২০১০ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ নামে প্রজেক্ট গ্রহণ করে। এই প্রজেক্টের আওতায় গৃহহীনদের সরকারিভাবে ঘর করে দেওয়ার কথা রয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ নামকরণ হওয়ার কারণ এর আগে যারা উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘর হারিয়েছে তাদের জন্য গঠিত প্রকল্পের নাম আশ্রয়ণ।

আগেরটা আশ্রয়ণ হওয়ায় এবারেরটা হয়েছে আশ্রয়ণ ২। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এ তিন সংস্থার সমন্বয়ে, জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, নির্বাচিত অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং সুধিজনের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্স গত দশবছরে যাচাই বাছাই করেছে। গৃহহীন পরিবার চিহ্নিত করেছে। এতটুকু করতে তাদের বহু বছর লেগেছে। আশ্রয়ণ-২ সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করেছে সরকার। ঘর এবং জমি নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১ জন।

অপরদিকে জমি আছে, ঘর নেই এমন পরিবারের সংখ্যা ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি। সর্বমোট আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি পরিবারকে পর্যায়ক্রমে বাসস্থান নির্মাণ করে দেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে। দুই শতক জমির ওপরে নির্মিত প্রতিটা ঘরের নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। দুই কক্ষ বিশিষ্ট ঘরের সঙ্গে একটি রান্নাঘর, একটি সংযুক্ত টয়লেট ও ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা রাখা হয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন যারা রয়েছে তাদের দুই শতক ঘরের জমির মালিকানাও দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীন বিধবা, অসহায়, বয়স্ক, দুস্থ এবং প্রতিবন্ধীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রায় ৬৬ হাজার পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ ঘরগুলো উপকারভোগীদের দেওয়া হবে। এতক্ষণ পর্যন্ত যা বলা হয়েছে এগুলো সব কিতাবের কথা।

যাই হোক এখন সময় এসেছে গৃহহীনদের ঘর বুঝিয়ে দেওয়ার। এই বছর থেকে বড় আকারে শুরু হয়েছে ঘর হস্তান্তরের। এই বছর ২২ জেলায় প্রায় লাখ খানেক ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘর হস্তান্তর করার সময় বলা হয়েছে এটা নাকি হাসিনার উপহার! টাকার উৎস জনগণ। সেই টাকায় লুটপাট করে গরীবদের নিম্নমানের ঘর দেওয়া হয়েছে আর বলা হচ্ছে শেখ হাসিনার উপহার।

এখন এসব ঘর সম্পর্কে যেসব অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে...

১। এইসব ঘরের বরাদ্দ দিতে স্থানীয় এমপি, আওয়ামী গুণ্ডারা গরীবদের কাছ থেকে ঘুস নিয়েছে। যারা ঘুস দিতে সক্ষম হয়েছে তারাই বরাদ্দ পেয়েছে। যারা বেশি গরীব তারা ঘুসও দিতে পারে নি, ঘরও পায় নি।

২। হস্তান্তরের আগেই কয়েক স্থানের ঘরগুলো ভেঙে পড়েছে।

৩। ঘর বুঝে পাওয়ার পর বেশিরভাগ ঘরেই ফাটল দেখা গেছে। অনেক স্থানে ভেঙে পড়েছে। সাংবাদিকরা তাদের ভিডিওতে দেখিয়েছেন হাতের ধাক্কায় ঘরগুলো পড়ে যাচ্ছে।

৪। ঘর ভেঙে আহত হয়েছেন বরাদ্দ পাওয়া গরীব মানুষ।

৫। সবচেয়ে ভয়ংকর অবস্থা হয়েছে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর। এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বেশির ঘর নষ্ট হয়ে গেছে বা ভেঙে গেছে।

এই কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল এই প্রকল্পে সরকার ঠিকাদার নিয়োগ করেনি। প্রতিটি উপজেলার ইউএনও-র তত্ত্বাবধানে কাজটি হয়েছে। তারা স্থানীয় ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজটি করিয়েছে। খেয়াল করে দেখুন যদি কেন্দ্রীয়ভাবে ঠিকাদার নিয়োগ করা হতো তবে আমরা ঠিকাদার কর্তৃপক্ষকে দোষ দিতে পারতাম। প্রতিটি উপজেলায় ঠিকাদার আলাদা হলেও সবাই একইসাথে নিম্নমানের ঘর কীভাবে তৈরি করলো!

মূলত এখানে দুর্নীতি হয়েছে ওপর মহল থেকে। মাত্র ৪০০ বর্গফুটের প্রতিটি আধাপাকা ঘরের জন্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। এই টাকা দিয়ে বেশ মজবুত ঘরই তৈরি করা যেত। কিন্তু সবাই মিলে জনগণের টাকা লুটপাট করায় এই দশা হয়েছে।



ছবিতে একটি ঘরের ছবি ও আশ্রয়ণ ২ প্রকল্পের কালপ্রিটের ছবি দেওয়া হয়েছে। আর মেইন কালপ্রিট তো হাসিনা। তাকে আপনারা চিনেন, তার ছবি দিলাম না।

পঠিত : ৩১৪ বার

মন্তব্য: ০