Alapon

মতিউর রহমান মাদানি তা’মিরুল মিল্লাত মাদরাসা এবং ইসলামি ছাত্র শিবির ও ছাত্রী সংস্থা প্রসঙ্গ"



মতিউর রহমান মাদানি। নাগরিক হিসেবে হিন্দুস্থানী। (তিনি একজন হিন্দুস্থানের নাগরিক , নট বাংলাদেশি ) একজন তাগুতপন্থী দরবারি আলিম। বাংলা ভাষাভাষি মানুষদের কাছে স্মরণকালের শ্রেষ্ঠ ঘৃণিত একব্যক্তি। তার অতি উগ্রতা-হিংসা-প্রতিহিংসার চাষাবাদের কারণে প্রত্যেকটি মাসলাকের লোকজন তাকে ঘৃণা করে। এবং আহলে হাদিস তথা সালাফিদেরও বিরাট একটি অংশ তাকে ঘৃণা করে। পছন্দ করে না। তাকে এবং তার কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত। সে আহলে হাদিসদেরও ক্ষতি করে যাচ্ছে। তার কারণে মানুষ অনেক ভালো মধ্যমপন্থি-উদারপন্থি-হকপন্থি আহলে হাদিসদের ভুল বুঝতেছে। আসোলে মতিউর রহমান সালাফি লেবাসধারি। একজন ভ্রান্ত মাদখালি আর হিংসুটে হুজুর। সত্যিকারের সালাফি নয়। তাকে এবং তার মুকাল্লিদদের দেখে সকল সালাফি তথা আহলে হাদিসদের ভুল বোঝার কোনো অবকাশ নেই। সে একজন ঘৃণাজীবী হিংসুক। তার হিংসা থেকে বয়োবৃদ্ধ আলিম শাহ আহমদ শফি ( রহঃ)-এর মতো লোকজনও বাদ যায়নি। বাদ যায়নি বিখ্যাত দা’ঈ ইলাল্লাহ তুমুল জনপ্রিয় মাজলুম মুফাসিররে কুরআন আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদি ( হাফিজাহুল্লাহ )-এর মতো সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলিমে দ্বীনও। অপমান করেছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ শরীয়াবিদ বিদগ্ধ আলিম উস্তাদ সাঈয়িদ কামালুদ্দিন জাফরী, মুফতি কাজী ইব্রাহিমসহ আরো বহু সংখ্যক আলিমকে। সে ফতোয়া হামলা থেকে রেহাই দেয়নি তরুণদের মাঝে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মোটিভেশনাল আলোচক-আলিম মিজানুর রহমান আজহারী এবং শায়খ আহমদুল্লাহদেরকেও।

তার ফাতরামি মূলক ফতোয়ার লিস্ট থেকে এমন কোনো সিংগেল আলিম এবং ইসলামের প্রতি অনুগত মানুষ পর্যন্ত বাদ যায়নি। তার ফতোয়া মতো শাসকের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা যাবে না। যে শাসকের সমালোচনা করবে তার আকিদা খারাপ। সে খারিজি। কিন্তু সে নিজেই স্বয়ং তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েফ এরদোয়ানকে ঘৃণিত ভাষায় সমালোচনা করেছে। সে পৃথিবীর কোনো শাসকের বিরুদ্ধে না বললেও মুসলমানদের প্রতি দরদী শাসক এরদোয়ানকে গোমরা-জাহেল বলে ফতোয়া ঝেড়েছে। অথচ ঈসরাঈল ফ্রান্সের ধৃষ্টতা নিয়ে সে মুখ খুলতে নারাজ। তাদের বিরুদ্ধে কখনো কিছুই বলতে শুনিনি। সেসবের কথা আর কী'বা বলবো। বললে বহু কথায়-ই বলতে হয়। কিন্তু যা বলতে চেয়েছি তা হলো এই সৌদি আরবের মক্তব ইসলামি সেন্টার দাম্মামে চাকুরিরত ঘোমটা পরিহিত এই শায়খ ইদানীং একটা বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে সারা বাংলাদেশ এবং বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ইসলামি বিদ্যাপিঠ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা নিয়ে। এবং ছাত্রীদের দ্বীন ঈমান আখলাক গঠনে সর্বাধিক অগ্রনী ভূমিকা পালনকারী ইসলামি ছাত্রী সংস্থা নিয়ে।

তাকে এক ছেলে জিজ্ঞেস করছে যে তামিরুল মিল্লাত মাদরাসা জামাতি হানাফি বেদয়াতি মাদরাসা। সে মাদরাসায় পড়ে তার দুই ছোটো বোন। একবোনকে সে বুঝিয়ে শুনিয়ে কথিত সহীহ আকিদায় এনেছে। এখন সে বোনের কি ছাত্রী সংস্থায় যোগ দেওয়া জায়েজ হবে কিনা?

এর জবাবে দাম্মামের মক্তবে সৌদি আরবের শ্রমিক জনতা কুলি-মজুর ভাইদেরকে দ্বীন শিক্ষা দেওয়া সেই শায়খ জবাব দিয়েছে যে, যদি সালাফি প্রতিষ্ঠান থাকে তা হলে সেখানে পড়ানো জায়েজ হবে না। এবং সংগঠন ( ছাত্রী সংস্থা) করলে তো আরো পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। গোমরাহ হয়ে যাবে। সুতরাং দেয়া যাবে না। এখন আমার কথা হলো যে,

১. বাংলাদেশে একমাত্র মতিউর রহমান ভারতীয় শায়খ-ই কি প্রশ্নোত্তর পর্ব করে? নাকি আরো অন্যান্য আলিমরাও করে? করলে তাদের কাছে এমন উদ্ভট প্রশ্ন আসে না কেনো? কেনো-ই বা শুধু তার কাছে এমন প্রশ্ন আসে? এসব কি সাজানো নাটকবাজি নয়? ইতরামি আর ফাজলামি নয়? এবং কয়দিন আগে একটা প্রশ্ন এমন এসেছে যে, সাঈয়িদ মওদূদী রহিমাহুল্লাহকে ইমাম মওদূদী বলা যাবে কিনা? কিছু কিছু লেখক অনলাইন এক্টিভিটিস্ট মওদূদীকে ইমাম মওদূদী বলে। জবাবে সে নিয়েছে বাদরামির আশ্রয়। অপকৌশলে অযথা ইরান আল্লামা সাঈদী প্রসঙ্গে চলে গেলো। এসব কি আদৌ কোনো জ্ঞান মূলক প্রশ্ন? নাকি বসে বসে মানুষের সাথে ফাজলামি করা?

২. যে লোক এই প্রশ্নগুলো করেছে, সে কি এতোটাই হার্ড মূর্খ যে তার বোনকে ছাত্রী সংস্থায় দিবে কি দিবে না তা শায়খের কাছে গিয়ে জানতে হবে? সে নিজেই তো পূর্বে ক্লিয়ার করে দিয়েছে যে, এটা হানাফি জামাতি বেদাতি মাদরাসা। তার মানে নিজেও জানে যে ছাত্রী সংস্থা খারাপ। তা হলে আবার শায়খের কাছে প্রশ্ন কেনো? বিষয়টি কিসের ইঙ্গিত বহন করে?

৩. আরো একটা বিষয় সে বুঝাতে চাইছে যে হানাফিরা খারাপ। ইমামুল আ'জম আবু হানিফার তাকলিদ করা খারাপ। বেদাত। কিন্তু সে নিজেই একটা স্কুল অফ থট ফলো করে। ইমামে আ'জম আবু হানিফার তাকলিদ করে না ঠিকাছে, কিন্তু মতিউর রহমানের মতো একজন অভদ্র সৌদি আমলার তাকলিদ করে। বড়ো আশ্চর্যের কথা, ইমাম আবু হানিফা একজন তাবেয়ি। সাহাবায়ে আজমাইনদের কিংবা তাদের ছাত্রদের থেকে ইলম অর্জনের অধিকারী। আর এদিকে মতিউর রহমান হলো এই যুগের একজন থার্ডক্লাশ হুজুর। হানাফি স্কুল অফ থট ফলো করা বিদ'আত আর মতিউর রহমানের তাকলিদ করা এবং তার মাজহাব ফলো করা সহীহ!

৪. বাংলাদেশের সরকার নিয়ন্ত্রিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমন আছে কি, যেখানে হানাফি ফিক্বহ পড়ানো হয় না কিংবা হানাফি না? তা হলে তার বিদ্বেষ প্রস্ফুটন কেনো মিল্লাতের প্রতি? ইসলামের ঐক্য রক্ষা করে রাষ্ট্রের অধীন একটি সুনির্দিষ্ট কারিকুলামে পড়াশোনা করা অধিক কল্যাণ নাকি আলাদা করে সালাফি নামে মসজিদ মাদরাসা গোরস্থান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়া এবং সেসবের মধ্যে পড়ায় বেশি কল্যাণ? মুসলমানদের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করাটা কি খারিজিয়াতের মধ্যে পড়ে না? এটা কি সর্বনিকৃষ্ট বিদ'আত নয়?

৫. এরপর আরো অভিযোগ হচ্ছে সেটা জামাতি প্রতিষ্ঠান। এটা একটা ডাহামিথ্যে কথা। এটা যেই যুক্তিতে জামাতি প্রতিষ্ঠান হয়, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের অধিকাংশ আলিয়া মাদরাসা-ই জামাতি প্রতিষ্ঠান। কারণ আলিয়া মাদরাসাগুলোতে ইসলামি ছাত্র শিবিরের কাজ করতে অতো একটা বাধা নেই। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম সহজ। সে হিসেবে মিল্লাতও তার ব্যতিক্রম নয়। এটা অনেক বড়ো একটা প্রতিষ্ঠান। যেকোনো মুসলমান শিক্ষার্থীই এখানে পড়াশোনা করতে পারে। আমার পরিচিত বন্ধুমহলের অনেকেই মিল্লাতে পড়েই আহলে হাদিস শায়খ বনে গেছে। অনেকে আবার মিল্লাতে পড়েও ছাত্রলীগের গুণ্ডাপাণ্ডা হয়েছে। নেতাও হয়েছে। আমার ফ্রেন্ড, বড়ো ভাই, ছোটো ভাই এবং সহপাঠীদের মধ্যে অনেকেই লীগের নেতা আছে। একাধিক ফ্রেন্ড আমাদের সাথে মিল্লাতে পড়াবস্থাতেই যাত্রাবাড়ি ডেমরা কদমতলী কেরানিগঞ্জের ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে কাজ করছে। আমার রুমমেট এক বড়ো ভাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার লীগের সহসভাপতি ছিলো। আছে ছাত্রদলের নেতাও। সে হিসেবে শিবিরের নেতাও আছে। এবং যেহেতু আলিয়া মাদরাসা এবং ভালো প্রতিষ্ঠান সেহেতু শিবিরের কর্মী সমর্থক সবচেয়ে বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

সালাফি শায়খ প্রফেসর মুখতার আহমেদসহ অসংখ্য অগণিত সালাফি শায়খ এখানের ছাত্র। মতিউর শায়খের বন্ধু, এক সময়কার জামায়াতের রুকন (বর্তমানে বহিষ্কৃত ) প্রফেসর আবু বকর জাকারিয়া হুজুরের দুই ছেলে আব্দুর রহমান মজুমদার এবং আব্দুল্লাহ মজুমদারও এই মিল্লাতেরই ছাত্র। এখানে পড়ে ফোকাসে কোচিং করেই ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে। এবং অসংখ্যা কওমি দেওবন্দি-সালাফি শিক্ষক আছে মিল্লাতে, এর প্রমাণ ভূরি ভূরি! আছে অসংখ্য মাক্কী মাদানি ও আজহারী উস্তাদও।

৬. যদি ছাত্র শিবিরের প্রাধান্যটাই জামাতি প্রতিষ্ঠানের প্রমাণ হবার জন্য যথেষ্ট হয়, তা হলে বাংলাদেশের অনেক পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও সে যুক্তিতে জামাতি প্রতিষ্ঠান। যেমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, আই আই ইউ সি, বি আই ইউ, মানারাতসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। সেসবে একসময় ইসলামি ছাত্র শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য আর নিয়ন্ত্রণ ছিলো। তা হলে সেগুলোও তো জামাতি প্রতিষ্ঠান। এবং এসবগুলো প্রতিষ্ঠানেই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সালাফি জামাতি দেওবন্দি শিক্ষক রয়েছেন।

৭. প্রশ্ন করা হয়েছে মিল্লাতে পড়া জায়েজ হবে কিনা? শায়খও নাজায়েজ ফতোয়া দিয়েছে। কিন্তু আমার আশ্চর্য লাগে, এরা কি কখনো প্রশ্ন করেছে যে স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে পড়া জায়েজ কিনা? আর শায়েখও কখনো সেসবে অধ্যয়ন করা নাজায়েজ ফতোয়া দিয়েছে বলে দেখি নি। কথা হলো যদি সেসবে অধ্যয়ন করা নাজায়েজ-ই না হবে, তা হলে শুধু সালাফি প্রতিষ্ঠান না হবার অপরাধে (!) একটি স্বনামধন্য দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে পড়াটা নাজায়েজ হবে কোন যুক্তিতে? শায়খ এবং তার মুকাল্লিদদের প্রশ্ন কিংবা কাজে কি বুঝা যায় যে তারা আসলে মুসলিম? কিংবা মুসলমানদের কোনো উপকার করতেছে??

৮. এছাড়া সে ছাত্রী সংস্থা করলে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে বলে অভিযোগ করেছে। কিন্তু ফেমিনিজম, নারীবাদী আর সেক্যুলারজিম, অশ্লীলতা প্রমোটকারী, পর্দার বিধানকে তূচ্ছতাচ্ছিল্যকারী, যার তার সাথে যৌনতায় কিংবা "আমার দেহ আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো" এই সমস্ত কুফুরি শ্লোগান শিখিয়ে ইউনিভার্সিটির সহজ-সরল তরুণিদেরকে রাস্তায় নামিয়ে এনে স্রেফ পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের কারিগর জাতীয়তাবাদী পুজিবাদী সমাজতন্ত্রের নাস্তিক্যবাদী সংগঠনগুলো করলে মনে হয় জান্নাতের টিকেট কনফার্ম হয়ে যাবে, সে জন্য কখনো এই লোকটা সে সমস্ত সংগঠনগুলো নিয়ে সতর্ক না করে মেয়েদের দ্বীন ঈমান আদব আখলাক গঠন-পরিগঠনের কারিগর একটা পূণ্যবতী ছাত্রীদের সংগঠন নিয়ে কটুক্তি করেছে। বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে সেক্যুলারদের সুরে সুর মিলিয়ে।

ছাত্রী সংস্থা করে খুব নগন্য সংখ্যক মেয়ে হয়তো গোমরা হয়েছে (যেমন ফামা মা.ম এরকম দু চারজন), কিন্তু এরচেয়ে বেশি ভালো মুসলিমাহ তারা উপহার দিয়েছে। ছাত্রী সংস্থায় এসে কোনো মেয়ে পথভ্রষ্ট হয়েছে বলে আমি খুব একটা জানতে পারলাম না। অবশ্য আমি জানার তেমন একটা সুযোগও নেই। কারণ একে তো আমি ছাত্র দ্বীতিয়ত আমার চৌদ্দগোষ্ঠিতেও ছাত্রী সংস্থা করেছে বা করে এমন কেউ-ই নেই। এবং বাপ চাচা নানা-দাদাদের মধ্যেও কেউ নেই জামায়াত সংশ্লিষ্ট। যাইহোক, এটা ভিন্ন আলাপ। ছাত্রী সংস্থার জবাব ছাত্রী সংস্থা দিবে, আমি শুধু একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মতিউর রহমান মিয়ার বিবেকহীন লাম্পট্য আর মিথ্যে প্রতারণায় ঘেরা কথাটার একটু পর্যালোচনামূলক প্রতিবাদ করলাম আরকি!

৯ . এবার আসি আরো একজন শায়েখের বক্তব্যে। তিনি বলেছেন যে মিল্লাতে কোনো বিশেষ দলের শিক্ষা দেওয়া হয় না। কথাটা শতোভাগ সত্য। কিন্তু তিনি মতিউর রহমান গীবতকারী শায়খের পক্ষে বলতে গিয়ে বলেছেন — তাকে ( মতিউর রহমান সাহেবকে) মিসগাইড করা হয়েছে। কিন্তু এখানে একটা সুক্ষ্ম কারচুপি রয়েছে। মতিউর সাহেব একজন নিজ ভাষায় বড়ো মাপের শায়েখ। তিনি কীভাবে একজন সাধারণ মানুষের দ্বারা মিসগাইড হবে?

প্রশ্নকারী বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন করেছে। কিন্তু উত্তর দাতা মহান হুজুর কি বিভ্রান্তিহীন উত্তর দিয়েছে? আর পৃথিবীর সকল বিভ্রিন্তিময় প্রশ্ন তাদেরকেই কেন করা হয় ? এর কারণ কী?

আশার বিষয় হচ্ছে তা’মিরুল মিল্লাত নিয়ে এই লোকটার এমন বিভ্রান্তি নিয়ে স্বয়ং আমাদের সালাফি শাইখরাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। আল্লামা সাঈদিকে নিয়ে মিথ্যে আর বানোয়াট সমালোচনার পরে সবচেয়ে বেশি তোপের মুখে এখনই সে পড়েছে। এর পূর্বে কারাবন্দি মাজলুম আলিম আল্লামা সাঈদিকে নিয়ে মিথ্যাচার করায় এভাবেই গণরোষ আর তোপের মুখে পড়েছে মতিউর রহমান মাদানি সাহেব।

শেষ পর্যায়ে এসে যা বলতে চাই, তাও হলো বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যতোদিন শিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, ততোদিন ছাত্র সমাজ পথহারা হবে না। চাঁদাবাজ নেশাখোর মেয়েবাজ টেন্ডারবাজ আর সন্ত্রাসী হবে না। এই কথাটাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি খালেদা জিয়াকে বলেছিলেন। তখন সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ছাত্রদলের অরাজকতা চলছিলো। তাদেরকে স্বয়ং তৎকালিন দেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিলো না, এখন যেভাবে শুরুতে ক্ষমতায় আসার পরে ছত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরে ওঠে নি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সে জন্যই তিনি বলেছিলেন ছাত্র শিবিরের হাতে এক মাসের জন্য ছাত্রদলের দায়িত্ব দেওয়া হোক। তা হলে শিবির-ই তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। আসোলেই তা সত্য। ছাত্র শিবির তার উন্নত আচরণ আর মাধুর্যময় ব্যবহার দিয়েই ছাত্রদের প্রভাবিত করতে পারে। অস্ত্র নয়, ভালোবাসা দিয়েই তারা ছাত্রসমাজের হৃদয় জয় করে তাদের সংগঠনে সংঘবদ্ধ করে। আমি ছাত্র শিবিরকে খুব কাছ থেকে দেখবারর সুযোগ হয়েছে তো......

যতোদিন পর্যন্ত তামিরুল মিল্লাত মূল ক্যাম্পাসে ছাত্র শিবিরের খুব মজবুত অবস্থান ছিলো, ততোদিন এর পড়াশোনা আর রেজাল্ট ছিলো খুবই ভালো । ১২/১৩ সালের দিকে আমাদের জুনিয়র এক বেইস সেখানে ছত্রলীগের কমিটি খুলেছে। প্রশাসনিক অপতৎপরতায় যখন শিবিরের ছেলেদের হয়রানি করে সাধারণ ছাত্রদের আতঙ্কিত করা শুরু করা হয়েছে, তখন থেকে মেইন ক্যাম্পাসের চেয়ে টঙ্গী ক্যাম্পসের পড়াশোনার মান উন্নত হওয়া শুরু করেছে। বাংলাদেশের জমিনে মিল্লাত-ই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা জাতির সবদিকেই যোগ্য ম্যান পাওয়ার সফলভাবে সাপ্লাই দিতে সক্ষম হয়েছে। আল-হামদুলিল্লাহ !

সুতরাং এমন একটা প্রতিষ্ঠান নিয়ে সেক্যুলার কিংবা ইসলাম বিরোধী শক্তির অপতৎপরতা আর অতিমাত্রায় চুলকানি থাকাটা স্বাভাবিক হলেও একজন ইসলামের সাধারণ অনুসারী শায়খের ক্ষেত্রে মোটেও স্বাভাবিক নয়। তবে কি মতিউর রহমান সাহেব ইসলাম বিরোধী কারো গুপ্তচর হিসেবে কাজ করছে না তো? আমি কিন্তু বাংলাদেশের কোনো আলিমকে ইহুদি-খৃষ্টানদের দালাল মনে করি না। কিন্তু এইলোকটাকে সন্দেহ হয়।

কেউ একজন একবার আমাকে বলেছে,
“ মতিমিয়া একজন অমুসলিমদের অনুচর যা তার বক্তব্য থেকেই প্রমাণ পাওয়া যায়। তার যত ওয়াজ নসিহত আছে সবই মুসলমানদের সমালোচনা ও বিষোদগার কুৎসা রটনা করে প্রচার করেছে কিন্তু অমুসলিমদেরকে কোন আলোচনা সমালোচনা তো করেইনি এমনকি সুমহান ইসলামের দাওয়াত পর্যন্ত দিতে দেখা যায় না। আমি দুনিয়ার কাউকে ইহুদিদের এজেন্ট হিসেবে সন্দেহ করি না, কিন্তু এই মতিউর রহমান নামক টাউট শায়খকে করি। মতি মাদানী ভারতের নাগরিক। ভারতের প্রসঙ্গে সে কথা বলছে না কেন,অথচ বাংলাদেশ নিয়ে তার এত মাথাব্যথা কেন? এতে বুঝা যায় যে, সে ইসলামবিরোধী কোন এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে। র এর এজেন্ট ও হতে পারে। আবার মোসাদের লোক হওয়াও অস্বাভাবিক নয়”।
বিষয়টি সত্যিই সন্দেহজনক এবং তদন্তের দাবি রাখে। আল্লাহ এই সমস্ত শায়খের বিভ্রান্তি থেকে উম্মাহকে হেফাজত করুন তাদেরকেও হিদায়াতের আলো নসীব করুন। আ-মী-ন !

#I_Am_Proud_To_Be_a_Millatians
#Boycott_Motiur_Rahman_Madani

পঠিত : ১০৮৬ বার

মন্তব্য: ১

২০২১-০৮-২৭ ২২:২৫