আল কুদস ফিলিস্তিনেরই রাজধানী
তারিখঃ ৩০ নভেম্বর, -০০০১, ০০:০০
১.
স্রেফ সংবাদমূলক কিছু লেখা আমার আদত না। তবে, গতকাল একটি সংবাদ দেখে তা পোষ্ট করার ইচ্ছা দমন করতে পারলাম না। গোটা দুনিয়া যখন ইসরাইল এবং ট্রাম্প বিরোধী প্রতিবাদ সংগ্রামে উত্তাল ঠিক তখন গতকাল বাহরাইনের একটি প্রতিনিধিদল ৪ দিনের সফরে ইসরাইল গিয়ে পৌঁছেছে। তারা সেখানে ইসরাইলের উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে। দলটির বক্তব্য হচ্ছে তারা বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ বিন ঈসা আলে খলীফার নির্দেশে ইসরাইলের জন্য শান্তি, সাম্য, উদারতা ও সহাবস্থানের বার্তা নিয়ে এসেছেন। পরে দলটি ইসরাইলের চ্যানেল-২ এর কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আল-আকসা যিয়ারত করতে যায়। কিন্তু, পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আল-আকসার প্রহরীরা তাদেরকে আল-আকসায় ঢুকতে দেয় নি। এতে তারা চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। কেমন অসভ্য দেখেন এসব প্রহরীরা। মেহমানদের সাথে এমন আচরণ? এদের জন্য আরবরা কেন কাঁদবে?
তবে, পর্যবেক্ষকদেরর ধারনা, আশেপাশের কোন 'বড় ভাইয়ের' ইশারা ছাড়া এই কাজ করার মতো বুকে পাটা পিচ্চি বাহরাইনের হয়নি। বেচারা হুদাই গিনিপিগ হইলো।
২.
সৌদি আরবের এমবিসি টেলিভিশনের সংবাদ পাঠিকা, জর্দানী নাগরিক আলা আল-ফারিস ট্রাম্পের ঘোষণার প্রতিবাদে এই টুইটটি করেছেন--
"ট্রাম্প তার ঘোষণার জন্য এই সময়টা এমনিই নির্ধারন করে নি; বরং আমাদের এখানে তার সদ্যসমাপ্ত সফরেই সে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল যে, আরবরা আজকে নিন্দা করবে, কিন্তু আগামীকাল ঠিকই 'হাল্লা খামীস' গান ধরবে।"
বেচারির এই টুইটের শাস্তি কি হয়েছিল জানেন? তাকে সাথে সাথেই সৌদী টেলিভিশন থেকে বহিষ্কার করা হয়। শুধু তাই নয়, আরও শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
৩.
যেদিন ট্রাম্প ঘোষণা দেন ওই দিন গোটা টুইটার কুদসময় থাকলেও শায়খ আরিফী তার টুইটারে সবাইকে মোজার উপর মাসেহ করার মাসআলা শিখিয়েছেন। তিনি টুইট করেছেন--
"পাতলা মোজার উপর মাসেহ করা জায়েজ হওয়ার ব্যাপারে ওলামাদের বিভিন্ন মত আছে। তবে, গ্রহনযোগ্য রায় হচ্ছে, মাসেহ করা জায়েয হবে। কারণ, এই বিধানটি নাজিল হয়েছে মূলত ওজুকারী ব্যাক্তির সহায়তার জন্য।"
ব্যাপার সেটা না। ব্যাপার হচ্ছে কোন এক ইখওয়ানী রাফেজী দুষ্টু বেয়াদব শায়খ আরিফীর টুইটের নিচে রিটুইট হিসেবে লেবাননের প্রসিদ্ধ গায়িকা ও নায়িকা হায়ফা ওয়াহবীর এই টুইটটি এ্যাড করে দিয়েছে। ট্রাম্পের ঘোষণার দিন হয়ফা আল-আকসার ছবি টুইট করে তার উপর লিখেছেন-- "কুদস ফিলিস্তিনের চিরস্থায়ী রাজধানী।"
মানুষ এত্তো দুষ্টু হয় ক্যামনে?
৩.
বুঝতেই পারছি আপনারা হতাশ হচ্ছেন। না হতাশ হওয়ার কারণ নেই। কুদসের জন্য কাঁদার মতো আরব এখনও আছে। দেখেন--
লেবাননের প্রসিদ্ধ শিল্পী এলিসা টুইট করেছেন-
"তোমার জন্য হে নামাজের নগরী আমি নামাজ পড়ি। তোমার জন্য হে মুগ্ধকর নগরী, হে নগর-পুষ্প, হে কুদস, হে কুদস, হে কুদস, আমি ইবাদাত করি।"
লেবানানের প্রসিদ্ধ আরেক শিল্পী নাওয়াল আল যোগবী "ইয়া কুদস" নামে একটি গান গেয়েছেন। গানের এই অংশটি তিনি টুইট করেছেন--
"সালাম (শান্তি) হে পবিত্র ভূমি, যাকে শান্তির জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, কিন্তু কোন দিন সে শান্তি দেখে নি। কুদস ফিলিস্তীনের রাজধানী।"
লেবাননের আরেক শিল্পী রাগেব আলামা টুইট করেছেন--
"কুদস ফিলিস্তীনের চিরস্থায়ী রাজধানী। কেউ তা চায় বা না চায়।"
আরেক শিল্পী এমেল হেজাযী টুইট করেছেন--
"হে আরব, তোমাদের কুদস বিক্রি মুবারক হোক। কুদস আমাদের। কুদস লড়ে যাবে।"
মিসরী অভিনেত্রী উসরা আল লুজী টুইট করেছেন--
"হায়, যদি আমরা আসল কাজে মনোযোগ দিতাম! কুদস ফিলিস্তীনের রাজধানী। কুদস আমাদের।"
সো, মুমিন ভাই। চিন্তার কোন কারন নাই। কুদসের জন্য কান্না করার মতো কিছু চোখ এখনো অবশিষ্ট আছে। আলহামদুলিল্লাহ!
মন্তব্য: ০