Alapon

ন্যায়বিচারের জন্য কি ভাইরাল হতেই হবে?



আমাদের দেশটা এমন হয়ে গেল যে, এখানে কোনো বিষয় ভাইরাল না হলে আমরা তেমন একটা মাতামাতি করি না। ফলে ভুক্তভোগী ব্যক্তি/ব্যক্তিরাও তাদের ন্যায্য হিস্সাটুকু পায় না। হোক সেটা তাঁর অধিকার, বিচার কিংবা অন্য কিছু। এর জ্বলন্ত প্রমাণ বাইক পোড়ানো শওকত।

মাহবুবুর রহমান মিলন নামের এক ভদ্র লোকের পোস্টের মাধ্যমে ১০ জন মানবিক ব্যক্তি সখেদে বাইক পোড়ানো শওকতকে ১০টি বাইক দিতে চাচ্ছেন।

কিন্তু কথা হলো, একজন জেরবার ড্রাইভার শওকত আজ ভাইরাল হয়েছে বলেই তো ১০জন ব্যক্তি ১০টি বাইক দেবার জন্যে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু নিত্যনৈমিত্তিক আরও যে শত শত শওকত নীরবে এমনটা (!) সয়ে যাচ্ছেন—তাদের সমাধান কী?
নাকি তারাও ভাইরাল হবার অপেক্ষায় আছেন?

রোগ প্রতিকারের চেয়ে নাকি প্রতিরোধ অনেক সহজ। কিন্তু বর্তমানে সকল সেক্টরেই তার উলটো চিত্র দেখা যাচ্ছে। এই উলটো চিত্রের কিছু সুনির্দিষ্ট কারণও আছে।

—ঢাকা একটি ‘মেগাসিটি’। মেগাসিটি হলো এমন শহর, যেখানে ১ কোটির ওপর মানুষ বসবাস করে। যদিও ঢাকার বর্তমান জনসংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
তারপরেও জনসংখ্যা বিস্ফোরণের এই শহরে ট্র্যাফিক পুলিশ অপ্রতুল বললে কোনো অত্যুক্তি হবে না। আবার সব...

—অপরদিকে ঢাকায় পার্কিংয়ের তেমন কোনো জায়গা নেই। ফলে ইচ্ছে বা অনিচ্ছে রাইডারকে রাস্তায় পার্কিং করতে হয়। পার্কিংয়ের পরের ঘটনা তো আজকে দেখলেনই।

—আবার বসবাসের দিক দিয়ে বিশ্বের অস্বাস্থ্যকর শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ২য়।
এরপরেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ঢাকায় ছুটে আসছে জীবন-জীবিকার তাগিদে। কেননা, সবাই ভাবে ঢাকায় টাকা ওড়ে। কিন্তু বাস্তবে ঢাকায় এসে টাকার দেখা না পেলেও চাকার দেখা ঠিকই পায়। জনসংখ্যার চেয়ে যেন এখানে চাকাই বেশি। জানলে অবাক হবেন, ছোট্ট এই শহরের বুকে প্রতিদিন ৩ লক্ষ রিক্সা চলাচল করে। এই যখন অবস্থা তখন বাকি গাড়িঘোড়ার পরিসংখ্যান নাই-বা জানলেন।

কিছু দিন আগে জাতীয় দৈনিকে দেখলাম, উত্তরের মেয়র আতিকুর রহমান প্রাইভেটকার নিয়ে তাঁর অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেছেন। আসলে কি মেয়র অসহায়—আপনি কী মনে করেন?

এরও আগে রিক্সার ক্ষেত্রে আমরা উভয় মেয়রের প্রতিক্রিয়া দেখেছি। কিন্তু দিনশেষে সেগুলোর ফলাফল কী?

আমাদের সার্বিক সিস্টেম যতদিন চেঞ্জ না হবে, ততদিন এমন আরও কত অরাজকতা দেখতে হবে আল্লাহ মালুম।

- মাকামে মাহমুদ

পঠিত : ২৫০ বার

মন্তব্য: ০