Alapon

কেন এই দাবি? ১৮+

দেখ সুয়েব সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াত,তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। বলা হয়েছে কেন?
.
_ রাত ১১.২০ হয়ে গিয়েছে কাল বলবো আজকে বাসায় ফিরতে হবে!
মিম কোন ভাবে মানতে রাজি নয় ওর আবদার এখনি বলতে হবে?
উওর দিতে
.
অবশ্য আমার আপত্তি নেই তবে এইখানে যে কথা গুলি বলবো কিছুটা লজ্জা পেতে পারে তাই বলতে চাইতেছি না। আরমান ভাইও জোর করলেন বলার জন্য!
অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম বলবো....
.
সূরা বাকারার ২২৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে- Your wives are a tilth for you, so go to your tilth, when or how you will
.
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্যক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শস্য-ক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন কর।
.
হঠাৎ করে এই আয়াতাংশ কারো সামনে পেশ করা হলে মনে হতে পারে যে এখানে পুরুষকে যখন ইচ্ছা তখন তার স্ত্রীর সাথে যৌনাচার অবাধ অনুমতি দেওয়াহচ্ছে-
.
এমনকি স্ত্রীর সুবিধা-অসুবিধার দিকেও তাকানোর কোন প্রয়োজন যেননেই।
.
যারাএই ধরণের ধারণার প্রচারণা চালান তারা সাধারণত এই আয়াতটি উল্লেখ করার পর তাদের ধারণার সাপোর্টে কিছু হাদিসও পেশ করেন,
.
যেমন- কোন স্ত্রী যদি তারস্ বামীর বিছানা পরিহার করে রাত কাটায় তবে ফেরেশতারা সকাল পর্যন্ত তাকে অভিশাপ দিতে থাকে।
.
(মুসলিম, হাদিসের ইংরেজি অনুবাদ-৩৩৬৬)
.
উপরি উক্ তআয়াতাংশ এবং এই ধরণের কিছু হাদিস পেশ করে,
.
অনেকই এটা প্রমাণ করতে চান ইসলাম কেবল পুরুষের যৌন অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে এবং নারীকে যৌন মেশিন হিসেবে যখন তখন ব্যবহারের ফ্রি লাইসেন্ সদিয়ে রেখেছে।
.
সোজা কথায় ইসলামে যৌন অধিকার যেন একতরফা ভাবে পুরুষের! আসলেই কি তাই?
.
পরিচ্ছেদ ২ ২.১ কুসংস্কারের মূলোচ্ছেদ কারি কুরআনের ২:২২৩ আয়াত সংক্রান্ত বিভ্রান্তির নিরসন মদিনার ইহুদিদের মধ্যে একটা কুসংস্কার এই ছিল যে,
.
কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে যোনিপথে সঙ্গম করত তবে বিশ্বাস করা হতো যে এরফলেট্যারা চোখ বিশিষ্ট সন্তানের জন্ম হবে।
.
.কিছুটা লজ্জা পেলো মিম আরমান ভাই মাথা নিচু করে বসে আছে
.
মদিনার আনসাররা ইসলাম পূর্ব যুগে ইহুদিদের দ্বারা যথেষ্ট প্রভাবিত ছিল।
.
ফলে আনসারগণও এইকুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিলেন। মক্কাবাসিদের ভেতর এই কুসংস্কার ছিল না।
.
মক্কার মুহাজিররা হিজরত করে মদিনায় আসার পর, জনৈক মুহাজির যখন তার আনসার স্ত্রীর সাথে পেছন দিক থেকে সঙ্গম করতে গেলেন, তখন এক বিপত্তি দেখা দিল।
.
আরমান ভাই মিমকে জিজ্ঞাসা করলেন এই ব্যাপারে কথা না বললে কি হয় না!
_ না সত্যিই যেটা সেটা অবশ্যই শুনতে সুয়েব তুমি বলতে থাকো
.
আনসার স্ত্রী এই পদ্ধতিকে ভুল মনে করে জানিয়ে দিলেন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অনুমতি ব্যতিত এই কাজ তিনি কিছুতেই করবেন না।
.
ফলে ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছে গেল।এ প্রসঙ্গেই কুরআনের আয়াত (২:২২৩) নাযিল হয়, যেখানে বুঝানো হচ্ছে-
.
সামনে বা পেছনে যেদিক দিয়েই যোনি পথে গমন করা হোক না কেন, তাতে কোন সমস্যানেই।
.
শস্যক্ষেত্রে যেদিক দিয়ে বা যেভাবেই গমন করা হোক না কেন তাতে শস্য উত্পাদনে যেমন কোন সমস্যা হয় না, তেমনি স্বামী তার স্ত্রীর যোনিপথে যেদিক দিয়েই গমন করুক না কেন তাতে সন্তান উত্পাদনে কোন সমস্যা হয় নাএবং এর সাথে ট্যারা চোখ বিশিষ্ট সন্তান হবার কোন সম্পর্ক নেই।
.
বিস্তারিত তাফসির পড়ে দেখতে পারেন। কাজেই এই আয়াতের উদ্দেশ্য ইহুদিদের প্রচারিত একটি কুসংস্কারের মূলোত্পাটন,স্ত্রীর সুবিধা অসুবিধার প্রতি লক্ষ না রেখে যখন তখন অবাধ যৌনাচারের অনুমোদন নয়।
.
যারা মনে করেন কুরআনে ইহুদি খৃষ্টানদের কিতাব থেকে ধার করা হয়েছে বা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদি খৃষ্টানদের থেকে শুনে শুনে কুরআন রচনা করেছেন,এই আয়াত তাদের জন্য বেশ অস্বস্তিকর বটে!
.
প্রকৃত মুক্তচিন্তার অধিকারীদের বরং এইআয়াতের প্রশংসা করার কথা ছিল,কিন্তু প্রশাংসার যোগ্য আয়াতটিকে সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে।

পঠিত : ৯১৩ বার

মন্তব্য: ০