Alapon

bitter truth is that- We are more concern about halal food than halal income.

আমি যদি কাউকে গ্রিল করা মাংস খাইয়ে এরপর বলি এটা শুয়োরের মাংস ছিল। কেমন লাগবে?


অথবা খাবারের পর এক গ্লাস শরবত খাওয়ানোর পর বলি এটা লেমন ফ্লেভার্ড ঘোড়ার পেচ্ছাব। কেমন লাগবে?


কোন সন্দেহ নাই আমাকে নিয়ে পরদিনই ব্রেকিং নিউজ হবে।


আচ্ছা বাদ দেন। খুব সেন্সিটিভ ইস্যু এইসব। বাপদাদার ধর্ম যাবে।


আজকে জন্মনিবন্ধনের কাজে গেলাম সিটি কর্পোরেশন অফিসে। মূল গেটের সামনে বসা একজন লোক আমাকে দেখেই বলল - কি লাগবে?
প্রয়োজন বলতেই বলল, আসেন আমার সাথে।


নিয়ে গিয়ে একটা ফর্ম দিয়ে বলল এটা পূরণ করেন।


সাধারণত প্রাইভেট অর্গানাইজেশনে ক্লায়েন্ট দেখলে এভাবে কদর করে স্টাফরা। সরকারি অফিসে এই কদর দেখে খুশি হই নাই। আমি এইসব আলগা কদরের সাথে পরিচিত।


যাই হোক ফর্ম পূরণের পর বলল- ফি পাঁচশ টাকা, আর খরচাপাতি আরো পাঁচশ, নোটারি করা লাগবে।


এভাবে সব খরচাপাতি মিলায়ে দেড় হাজার টাকা গচায়ে দিয়ে আসতে হল। কিসের খরচাপাতি কোন রিসিট নাই। জানি চাইলেও দেবে না।


পরে মনে হল, আমি কত গাধা। নীলক্ষেতে গিয়ে দুইশ টাকায় জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট বানিয়ে নিয়ে আসতে পারতাম।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরেক জায়গা। একবার ফাইল ওপেন করতে গেলাম। স্টাফকে বললাম আমার প্রয়োজনের কথা। উনি বললেন এই কাগজটা আটটা ফটোকপি লাগবে।


জিজ্ঞেস করলাম, মেইন কপি দিলেই তো হয়। ফটোকপি কিসের জন্য?


- আমি বলসি, তাই লাগবে।


করে আসলাম ফটোকপি।


দেখলাম ফটোকপি করে আনার পরও আমার কাজে হাত দিচ্ছে না। বরং আমার পরে অনেকে এসে কাজ সেরে চলে যাচ্ছে।


পরে ভেবে দেখলাম আমি কত গাধা। সবার মত ফাইল বাড়িয়ে দেওয়ার আগে খরচাপাতি বাড়িয়ে দিলেই আর আটটা ফটোকপি করা লাগত না।


পরে আমার টাকা শ্রম সবই গেল।


সরকারি চাকুরিতে আসার পর থেকেই খুব ভালভাবে পরিচিত হই এই "খরচাপাতি" শব্দটার সাথে। এক অদ্ভুৎ ভদ্র ল্যাঙ্গুয়েজ।


মাসের বেতন নেব, খরচাপাতি লাগে।


শেষ বেতন প্রত্যয়ন পত্র নেব, খরচাপাতি লাগে।


ঈদ বোনাস তুলব, খরচাপাতি লাগবে।


আপনাকে প্রথমে কদর করবে। এরপর আপনি যদি খরচাপাতি না দেন আপনাকে আর চিনবেও না।


মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে এদেরকে এইসব খরচাপাতি দেওয়ার সাথে সাথে শুয়োরের গ্রিল আর ওয়াইন দিয়ে আপ্যায়ন করে আসি। পরে বলে দিব কি খাইয়েছি।


মাথা ভাংতে আসলে বলব, শুয়োর ওয়াইন এসব হারাম দেখেই তো ক্ষেপছেন? যে খরচাপাতি নিচ্ছেন ওষুধের মত তিন বেলা ডোজে, এই খরচাপাতি দিয়ে কেনা হালাল গরুর মাংস আর শুয়োরের গ্রিলের আদতে ফুড ভ্যালু সমান।


তাহলে কেন শুয়োরের গ্রিল বা ওয়াইনের টেস্ট থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা।


মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনি ঘুষের ব্যাপারে যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা যথেষ্ট সাহসিকতার বিষয়।


তবে আরেকটু এড করলে ভাল হত, আপনারা বাজার থেকে গরুর মাংস কেনার সময় একটু শুয়োরের মাংসও কিনবেন, তবে সহনীয় মাত্রায়।

পঠিত : ৪৩৮ বার

মন্তব্য: ০