Alapon

বাজারে এসেছে নতুন ইলেকশন মডেল



নির্বাচন, ভোট ইত্যাদিতে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বহু দেশের রোল মডেল। এইতো সেদিন আমাদের নির্বাচন কমিশনার হুদা রাশিয়ায় গিয়ে পুতিনকে জিতিয়ে দিয়ে এসেছে। সেখানে আমাদের লেটেস্ট মডেল আঠারোর মতো করে আগের রাতেই ভোট কাস্ট করা হয়েছে।

এখন ২০২১ সাল। আর কতকাল ১৮ মডেল চলবে? নতুন মডেল আনার জন্য ইলেকশন কমিশন দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন।

আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। আপনারা না জানার কারণ ইলেকশন কমিশন আপনাদের কষ্ট দূর করে দিয়েছে। আপনারা এখন কষ্ট না করে ঘরে বসেই নিজের ভোট দিতে পারেন। ইলেকশন কমিশন সেই ভোট নিজের মনে করে আন্তরিকতার সাথে ভোট দিয়ে থাকে।

মূল কথায় আসি। শরিয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নে মহা সমারোহে আনন্দ উতসব সহযোগে নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে ১১ নভেম্বর নির্বাচন হওয়ার কথা। আপনারা জানেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারনে এখন দেশে কোনো বিরোধী দল নেই। তাই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ছাড়া কোনো দল নেই।

কিন্তু আওয়ামীলীগের মধ্যে তো অনেকেই মেম্বার চেয়ারম্যান হতে চায়। এখানেই বিপত্তি। চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪৮ জন ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১২ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেন।

২৭ অক্টোবর ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৩৯ জন মেম্বার প্রার্থী ও ৯ জন মহিলা মেম্বার প্রার্থী হুট করে জানতে পারেন তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তারা বলে, আমরা তো প্রত্যাহার করি নি তবে কেন প্রত্যাহার দেখানো হচ্ছে? পরে তাদের সবাইকে তাদের নিজ নিজ স্বাক্ষর দেখিয়ে নিশ্চিত করা হয় যে তারা আসলেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।

এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ১ জন চেয়ারম্যান, ৯ জন মেম্বার ও ৩ জন মহিলা মেম্বারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী ঘোষণা করেন চিতলিয়া ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।

এই স্বাক্ষর জালিয়াতীর মূল সমন্বয়ক আলমগীর হোসেনকে প্রত্যাহারকারী প্রার্থীরা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, 'এমপি স্যারের সাথে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে চিতলিয়া ইউনিয়নে কোনো নির্বাচন হবে না, সবাই সিলেক্টেড হবে। এই কথা এমপি মহোদয় বলেছেন।'

এবার এই কথা নিয়ে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি কি একথা বলেছি? আমার তো এই কথা বলার কথা না! বললেও এখন ভুলে গেছি। আমার আবার সব কথা মনে থাকে না।

সাংবাদিক ও নির্বাচন পর্যবেক্ষক মহলে নির্বাচনের এই নতুন ভার্সন নিয়ে বেশ হইচই পড়ে যায়। তারা ইতোমধ্যে এই মডেলের ফিচার ও সুবিধা নিয়ে প্রবন্ধ লেখা শুরু করেছেন। শিরোনামগুলো হলো,

"নতুন মডেলে নির্বাচনী খরচ অনেক কম হবে"
"যুগান্তকারী আবিষ্কার : নির্বাচনী সহিংসা এবার বন্ধ হবে"
"২১ ভার্সনে বেঁচে যাচ্ছে সময় ও ব্যয়"
"নতুন নির্বাচনী মডেল পেয়ে গর্বিত চিতলিয়াবাসী"
"নতুন নির্বাচনী মডেলকে বিশ্বসেরা হিসেবে স্বীকৃতি জানিপপের"
"নতুন মডেলের সফল পাইলটিং হলো চিতলিয়াতে"
"চিতলিয়ার নাম গিনেস বুকে রেকর্ড করার জন্য যাচ্ছেন নতুন চেয়ারম্যান"
"অবিশ্বাস্য সুবিধা সম্বলিত মডেল : প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ"

সবচেয়ে চেতনা জাগানিয়া নিউজ করেছে দৈনিক শেষের আলো। তারা বলেছে, নতুন মডেল নিয়ে ব্যস্ত ইসি : রপ্তানির প্রস্তুতি।

এই বিষয়ে জানার জন্য ইসি বস হুদাকে প্রশ্ন করলে তিনি ভুবনভুলানো হাসি দিয়ে বলেন, এই সব হচ্ছে মমতাময়ী আম্মুজানের ইশারা। আমি তো গোলাম মাত্র। তিনি আরো বলেন, নিশ্চিত থাকেন আগামী বছর পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হবে এই চিতলিয়া মডেল নিয়ে।

তিনি আরো যোগ করেন, উন্নত বিশ্বের নামে বেকুবেরা করে ভ্যাক্সিনের ব্যবসা আর আমরা করি নির্বাচনী ব্যবসা। ইতোমধ্যে প্রায় সব রাষ্ট্র থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমি কাউকে তেমন একটা পাত্তা দিচ্ছি না। এই বিষয়ে মোদি দাদার পরামর্শ ছাড়া ব্যবসা করা ঠিক হবে না। আমরা নিয়ম মেনে যথাযথভাবেই এগুচ্ছি। বিজয় আমাদের হবেই।
জয় বাংলা।

পঠিত : ৩৬০ বার

মন্তব্য: ০