Alapon

যতি চিন্হের ব্যবহার

কমা (পাদচ্ছেদ)


সাধারণত ১ (এক) উচ্চারণে যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটুকু সময় থামতে হয় কমার জন্যে।


(ক) বাক্যের অর্থবিভাগ দেখানোর জন্য কমা ব্যবহূত হয়। যেমন: সুখ চাও, সুখ পাবে পরিশ্রমে।


(খ) একাধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ একসাথে বসলে শেষটি বাদে সবগুলোর পর কমা বসে। যেমন: জবা, বেলি, হাসনাহেনা আমার প্রিয় ফুল।


(গ) সম্বোধনের পর কমা বসে। যেমন: সুমন, এদিকে এসো।


(ঘ) উদ্ধরণ চিহ্নের পূর্বে কমা বসে। যেমন: শিক্ষক বললেন, “আগামীকাল হরতাল।”


(ঙ) বার ও মাসের পরে কমা বসে।


যেমন: ১লা বৈশাখ, শনিবার, ১৪২২ সন।


সেমিকোলন (অর্ধচ্ছেদ)


কমা অপেক্ষা বেশি বিরতির দরকার হলে সেমিকোলন ব্যবহূত হয়। যেমন: আগে চেনা পথে যাও; পরে অচেনা পথে যেয়ো।


দাঁড়ি (পূর্ণচ্ছেদ)


বাক্যের পরিসমাপ্তি বোঝানোর জন্য দাঁড়ি ব্যবহূত হয়। যেমন: মৃত্যুতে সব অহংকার ধুয়ে মুছে যায়।


বিস্ময় চিহ্ন (বিস্ময়সূচক চিহ্ন)


অবাক, বিস্ময় বা হূদয়াবেগ প্রকাশ পেলে বাক্যের শেষে এই চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন: ছি ছি! তুই এতো নীচ।


কোলন (দৃষ্টান্তচ্ছেদ)


অপূর্ণ বাক্যের পরে একটি পূর্ণ বাক্য এলে কোলন চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন : প্রতিজ্ঞা করলাম : আর মিথ্যা বলবো না।


ড্যাশ (বাক্যসঙ্গতি চিহ্ন)


পৃথক ভাবাপন্ন দুই বা ততোধিক বাক্যের সমন্বয় বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন: শিশির— না, এ নামটা আর


ব্যবহার করা চলিল না।


কোলন ড্যাশ (ছেদ বাক্যসঙ্গতি চিহ্ন)


উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত বোঝাতে কোলন এবং ড্যাশ একসাথে ব্যবহূত হয়। যেমন: কাল তিন প্রকার :- অতীত কাল, বর্তমান কাল ও ভবিষ্যত্ কাল।


হাইফেন (শব্দ সংযোগ চিহ্ন)


সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে দেখাবার জন্য হাইফেন ব্যবহার করা হয়।


যেমন: এ আমাদের শ্রদ্ধা-অভিনন্দন, আমাদের প্রীতি-উপহার।


লোপ চিহ্ন


কোনো বর্ণ বিশেষের লোপ বোঝাতে বিলুপ্ত বর্ণের জন্য এই লোপ চিহ্ন ব্যবহূত হয়।


যেমন: মাথার ’পরে জ্বলছে রবি (’পরে = ওপরে)


পাগড়ি বাঁধা যাচ্ছে কা’রা? (কা’রা = কাহারা)


উদ্ধৃতি চিহ্ন


বক্তার বক্তব্য উক্তি এই চিহ্নের অন্তর্ভুক্ত হয়। যেমন: তিনি বললেন, “তোমরা চলে যাও।”


ব্র্যাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন


এই তিনটি চিহ্নই প্রধানত গণিতে ব্যবহূত হয়। তবে প্রথম বন্ধনীটি বিশেষ ব্যাখ্যামূলক অর্থ সাহিত্যে ব্যবহূত হয়ে থাকে। যেমন: ত্রিপুরায় (বর্তমানে কুমিল্লা) তিনি জন্মগ্রহণ করেন।


প্রশ্ন: ড্যাশ চিহ্ন কী? এর বিভিন্ন ব্যবহার দেখাও।


উত্তর: একটি বাক্যের বিভিন্ন ভাবকে সুস্পষ্ট ও সার্থকভাবে নির্দেশ করার জন্য যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাকে ড্যাশ (-) চিহ্ন বলে। মূলত যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে পৃথক ভাবাপন্ন দুই বা তার বেশি বাক্যের সমন্বয় বা সংযোগ বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়।


ড্যাশ চিহ্নের বিভিন্ন ব্যবহার


(ক) উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন— সমাস ছয় প্রকার। [বর্তমানে অবশ্য যেমন, যথা প্রভৃতি শব্দের পরে কোলন (smile ব্যবহূত হয়।]


(খ) অসম্পূর্ণ বাক্যের শেষে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন: ‘বটে রে—’


(গ) সংলাপের শুরুতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন: —হ, গীত না তর মাথা।


(ঘ) দুটো বাক্যের সংযোগের মাঝে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহূত হয়। যেমন: তোমাদের সম্মান কমবে না— বরং বাড়বে।


যথাস্থানে বিরাম চিহ্ন বসানোর কিছু উদাহরণ


প্রশ্ন:উঠানের শেষে তুলসী গাছটা আবার শুকিয়ে উঠেছে তার পাতায় খয়েরি রং সেদিন পুলিশ আসার পর থেকে কেউ তার গোড়ায় পানি দেয়নি সেদিন থেকে গৃহকর্ত্রীর ছলছল চোখের কথাও আর কারো মনে পড়ে নি


উত্তর:উঠানের শেষে তুলসী গাছটা আবার শুকিয়ে উঠেছে। তার পাতায় খয়েরি রং। সেদিন পুলিশ আসার পর থেকে কেউ তার গোড়ায় পানি দেয় নি। সেদিন থেকে গৃহকর্ত্রীর ছলছল চোখের কথাও আর কারো মনে পড়ে নি।


প্রশ্ন:রঙের খেলা খেলিতে খেলিতে তাহার উদয় রং ছড়াইতে ছড়াইতে তাহার অস্ত যৌবন সূর্য যেথায় অস্তমিত দুঃখের তিমির কুন্তলা নিশীথিনীর সেই তো লীলাভূমি


উত্তর:রঙের খেলা খেলিতে খেলিতে তাহার উদয় রং ছড়াইতে ছড়াইতে তাহার অস্ত। যৌবন-সূর্য যেথায় অস্তমিত, দুঃখের তিমির-কুন্তলা নিশীথিনীর সেই তো লীলাভূমি।


প্রশ্ন:আমি তাহার হাতখানি তুলিয়া ধরিয়া বলিলাম হৈম আমার উপর রাগ করিয়ো না আমি তোমার সত্যে কখনো আঘাত করিব না আমি যে তোমার সত্যের বাঁধনে বাঁধা


উত্তর: আমি তাহার হাতখানি তুলিয়া ধরিয়া বলিলাম, “হৈম আমার উপর রাগ করিয়ো না। আমি তোমার সত্যে কখনো আঘাত করিব না, আমি যে তোমার সত্যের বাঁধনে বাঁধা।”


প্রশ্ন:মা রাগ করিয়া বাবার কাছে তাঁহার বধূর মূঢ়তা এবং ততোধিক একগুঁয়েমির কথা বলিয়া দিলেন বাবা হৈমকে ডাকিয়া বলিলেন আই বড় মেয়ের বয়স সতেরো এটা কি খুব একটা গৌরবের কথা তাই ঢাক পিটিয়ে বেড়াইতে হইবে


উত্তর:মা রাগ করিয়া বাবার কাছে তাঁহার বধূর মূঢ়তা এবং ততোধিক একগুঁয়েমির কথা বলিয়া দিলেন। বাবা হৈমকে ডাকিয়া বলিলেন, “আই বড় মেয়ের বয়স সতেরো, এটা কি খুব একটা গৌরবের কথা, তাই ঢাক পিটিয়ে বেড়াইতে হইবে?”


প্রশ্ন:দিন কাটিয়া যায় জীবন অতিবাহিত হয় ঋতুচক্রে সময় পাক খায় পদ্মার ভাঙন ধরা তীরে মাটি ধসিতে থাকে পদ্মার জল ভেদ করিয়া জাগিয়া ওঠে চর অর্ধশতাব্দীর বিস্তীর্ণ চর পদ্মার জলে আবার বিলীন হইয়া যায়


উত্তর:দিন কাটিয়া যায়। জীবন অতিবাহিত হয়। ঋতুচক্রে সময় পাক খায়, পদ্মার ভাঙ্গন-ধরা তীরে মাটি ধসিতে থাকে, পদ্মার জল ভেদ করিয়া জাগিয়া উঠে চর, অর্ধ-শতাব্দীর বিস্তীর্ণ চর পদ্মার জলে আবার বিলীন হইয়া যায়।


প্রশ্ন: কমলাকান্ত জোড়হাত করিয়া বলিল বাবা কার ক্ষেতে ধান খেয়েছি যে আমাকে এর ভিতর পুরিলে চাপরাশি মহাশয় কথাটা বুঝিলেন না ছড়ি ঘুরাইয়া বলিলেন তামাশার জায়গা এ নয় হলফ পড় কমলাকান্ত বলিল পড়াও না বাপু


উত্তর: কমলাকান্ত জোড়হাত করিয়া বলিল, “বাবা, কার ক্ষেতে ধান খেয়েছি যে, আমাকে এর ভিতর পুরিলে?” চাপরাশি মহাশয় কথাটা বুঝিলেন না। ছড়ি ঘুরাইয়া বলিলেন, “তামাশার জায়গা এ নয়— হলফ পড়।” কমলাকান্ত বলিল, “পড়াও না বাপু।”


প্রশ্ন: এবার হৈম ইশারার মানে বুঝিল স্বর আরো দৃঢ় করিয়া বলিল বাবা এমন কথা কখনোই বলিতে পারব না মা গলা চড়াইয়া বলিলেন তুই কি আমাকে মিথ্যাবাদী বলিতে চাস হৈম বলিল আমার বাবা তো কখনোই মিথ্যা বলেন না


উত্তর:এবার হৈম ইশারার মানে বুঝিল। স্বর আরো দৃঢ় করিয়া বলিল, “বাবা এমন কথা কখনোই বলিতে পারব না।” মা গলা চড়াইয়া বলিলেন, “তুই কি আমাকে মিথ্যাবাদী বলিতে চাস?” হৈম বলিল, “আমার বাবা তো কখনোই মিথ্যা বলেন না।”


প্রশ্ন:জ্ঞানতৃষ্ণা তার প্রবল কিন্তু বই কেনার বেলা সে অবলা আবার কোনো কোনো বেশরম বলে বাঙালির পয়সার অভাব বটে কোথায় দাঁড়িয়ে বলছে লোকটা এ কথা


উত্তর:জ্ঞানতৃষ্ণা তার প্রবল, কিন্তু বই কেনার বেলা সে অবলা, আবার কোনো কোনো বেশরম বলে, “বাঙালির পয়সার অভাব।” বটে? কোথায় দাঁড়িয়ে বলছে লোকটা এ কথা।


প্রশ্ন:দুর্নীতি প্রতিরোধ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয় দুর্নীতি রোধ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন গণমাধ্যম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য দলনিরপেক্ষ স্বাধীন ও সক্রিয় দুর্নীতি দমন কমিশন প্রয়োজন


উত্তর:দুর্নীতি প্রতিরোধ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১৯৪৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। দুর্নীতি রোধ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে স্বাধীন গণমাধ্যম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য দলনিরপেক্ষ স্বাধীন ও সক্রিয় দুর্নীতি দমন কমিশন প্রয়োজন।

পঠিত : ৮৩৫ বার

মন্তব্য: ০