ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর জনসম্পৃক্ত হওয়া সময়ের দাবি...
তারিখঃ ৯ নভেম্বর, ২০২১, ১১:৫১
ফেসবুক মারফত জানতে পারলাম, জামায়াত ইসলাম তেলের দাম বৃদ্ধিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করছে। ঠিক আন্দোলন নয়, প্রতিবাদ মিছিল করেছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত প্রতিবাদ মিছিল করেছে। শুধু মিছিল করেই জামায়াতের দায়িত্ব শেষ?
না, শেষ নয়। বরং জামায়াতের উচিত, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে অহিংস আন্দোলন গড়ে তোলা। দেশব্যাপী এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া। তারপর সেই আন্দোলনে নিজেদের কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করা। কারণ, এই দাবি শুধু জামায়াতের নয়; দেশের আপামর জনসাধারণের।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, জামায়াত ইসলাম পন্যের দাম বৃদ্ধি বা তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি কেন্দ্রীক বিষয়গুলোতে দুই একটা মিছিল করেই নিজের দায়িত্ব শেষ বলে-বিবেচনা করে। অন্তত জামায়াতের অতীত ইতিহাস তা-ই বলে। কিন্তু দেশের ইসলামি ঘরাণার রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের উচিত ছিল এই ইস্যুগুলোতে অনেক বেশি সম্পৃক্ত হওয়া। এই দাবিগুলো নিয়ে রাজপথে নিয়মিত সরব থাকা।
জামায়াতের সমালোচনাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘জামায়াত তাদের দলীয় এজেন্ডা নিয়ে রাজপথে যতো সরব, জনসাধারণের এজেন্ডা নিয়ে ঠিক ততোটাই নীরব!’
এই অভিযোগ শুধু জামায়াতের ক্ষেত্রে নয়, দেশের অন্যান্য ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রেও শোনা যায়।
যেমন আমাদের চরমোনাই পীর সাহেবের ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক। চরমোনাই পীর সাহেবের দল বিভিন্ন ইস্যুতে কথায় কথায় লং মার্চ বা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করলেও, দ্রব্য মূল্য কেন্দ্রী বিষয়গুলোতে তাদের লং মার্চ বা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে তেমন একটা দেখা যায় না। এই ক্ষেত্রে তারা জামায়াতের চেয়েও পিছিয়ে। তেলের দাম বৃদ্ধি বা নিত্য পন্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে এখন পর্যন্ত চরমোনাই পীর সাহেবের তেমন কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বক্তব্য দিলেও তা মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় পাওয়া যায়নি।
বিরোধীদের শুনতে খারাপ লাগলেও এক কথা সত্য, দেশের ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি। আর বৃহৎ দল হওয়ার কারণে জামায়াতের দায়িত্বটাও বেশি। জামায়াতের উচিত, জনসম্পৃক্ত এইসব দাবি নিয়ে রাজপথে অনেক বেশি সরব থাকা। লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। সেইসাথে অন্যান্য ইসলামি দলগুলোকে এই আন্দোলনে সামিল করার চেষ্টা করা।
অভিযোগ রয়েছে, ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো জনসম্পৃক্ত নয়। সেই তুলনায় বাম দলগুলো জনসম্পৃক্ত দাবি নিয়ে রাজপথে সর্বদা একটিভ। সময় এসেছে জনতার এই ধারণা ভেঙ্গে দেওয়ার। এই ধারণা যতো তাড়াতাড়ি ভাঙ্গবে, ইসলামি দলগুলোর সাথে সাধারণ জনতার সম্পৃক্ততা তত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্য: ০