Alapon

জয়তু জাফর ইকবাল স্যার

শুনলাম আজ নাকি প্রিয় ডক্টর জাফর ইকবাল স্যারের শুভ জন্মদিন। এই উপলক্ষে দুষ্টু পোলাপানরা সারাদিন ধরে স্যারকে নিয়ে আজেবাজে ট্রল করছে। শোনো, তোমরা যারা স্যারকে নিয়ে আজেবাজে ট্রল করছ, তোমাদের কাছে আমার প্রশ্ন! স্যারের মতো এমন মাল্টি ট্যালেন্টেড কতজন আছে এদেশে? জাফর স্যার এমন একজন গুণী লোক যিনি একুশে বইমেলার সময় হয়ে যান দেশসেরা লেখক; SSC, HSC-সহ সকল পাবলিক পরীক্ষার সময় হয়ে যান দেশের একমাত্র বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ; শাহবাগে আন্দোলনের সময় হয়ে যান মুক্তিযোদ্ধা।

জীবন্ত কিংবদন্তি এই জাফর স্যার হলেন, এমন এক লেখক যার বেশিরভাগ লেখাই বিদেশি লেখকরা নকল করেছে। যেমন— জাফর স্যার "অবনীল" নামক একটি বই প্রকাশ করেছেন ২০০৫ সালে। আর বইটি হুবহু নকল করে ২০০০ সালে জিম হুইট ও কেন হুইট নামে দুই ভাই মিলে "পিচ ব্লাক" নামক একটি হলিউড সিনেমা বানিয়ে ফেলেন। ১৯৯৯ সালে স্যার আরেকটি বই লেখেন "নিতু তার বন্ধুরা"। এ বইটি নকল করে দানি দেভিতো নামে এক ভদ্রলোক " ম্যাটিল্ডা" নামে একটি হলিউড সিনেমা বানিয়ে ফেললেন ১৯৯৪ সালে। সিনেমাটি বাজেটের চেয়েও ৬৫ কোটি ডলার বেশি ব্যবসা করে।

ঠিক তেমনি ২০০৫ সালে বের হওয়া জাফর স্যারের "আমি তপু" দশ বছর আগে ১৯৯৫ সালে ডেবিড পোলজার নামে আমেরিকান এক সাহিত্যিক নকল করেন। তার বইটির নাম দেন "আ চাইল্ড কল্ড ইট"। ২০০০ সালে বের হওয়া "মেকু কাহিনী" বইটি নকল করে ১৯৯৪ সালে প্যাড্রিক রিড জনসন নামে এক হলিউডের পরিচালক বানিয়ে ফেললেন বিশ্ব বিখ্যাত শিশুতোষ সিনেমা "বেবিজ ডে আউট"।

অথচ, নিন্দুকেরা এজন্য উল্টা জাফর ইকবাল স্যারকে টিপ্পুনী কাটে। লেখার জন্য গল্পের প্লট মাথায় আসার সাথে সাথেই যে উনি লিখে ফেলবেন সে সুযোগ সবসময় থাকে না। স্যার তো আর আমাদের মতো নিষ্কর্মা নন, সারাবছর উনার কত ব্যস্ততা সেটা তো শুরুতেই বলেছি। তাছাড়াও ড্রোন বানানো, বৃষ্টিতে ভেজা, ছাত্রীদের সাথে চেতনা আদান-প্রদান করা,,, এজন্য গল্পের প্লট উনার মাথায় থাকতো আর তিনি সেটা লিখে ফেলার ছয়- সাত বছর আগেই ইউরোপ- আমেরিকার লেখকরা লিখে ফেলতো। আপনারা তো জানেনই, ব্লুটুথ, Share it এর মাধ্যমে ডাটা আদান-প্রদান করা যায়। ঠিক ব্লুটুথ, Share it-এর মতো এক ধরণের ডিভাইস ইউরোপ- আমেরিকানরা তৈরি করে শুধুমাত্র জাফর স্যারের কাহিনীর প্লট চুরি করার জন্য। পাশ্চাত্যরা সে কথা গোপন রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। ডিভাইসের মাধ্যমে তারা জাফর স্যারের Mind Read অর্থাৎ মাথায় থাকা গল্পের প্লট চুরি করে ইউরোপ- আমেরিকায় নাম ফুটাতো। কিন্তু ডিবি মনিরুলের তদন্তের আগেই জাতি জেনে যায় আসল সত্য, প্রকাশ হয়ে যায় জাফর স্যারের লেখা নকল করা ইউরোপ- আমেরিকায় নাম ফাটানো লেখক সাহিত্যিকদের নকলবাজির কাহিনী। কথায় বলে, চোরের দশদিন আর গৃহস্থের একদিন।

অবাক করা ব্যাপার হলো, স্যারের লেখা নকল করে কত লোক অস্কার পেল, নোবেল পেল কিন্তু স্যারকে কেউ একটা নোবেল দিল না। নোবেল তো দূরের কথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা পদক'টাও স্যারের কপালে এখনো জুটলো না। যে জাতি গুণীদের কদর করতে জানে না সে জাতি কিভাবে সমৃদ্ধি লাভ করবে? নোবেল কমিটির মতো স্বাধীনতা পদক কমিটিতেও স্বাধীনতা বিরোধি শক্তির কোনো লোক ঢুকে পড়ল কিনা ভেবে দেখা দরকার।

জন্মদিনে স্যার এত্তগুলো শুভেচ্ছা, জয়তু জাফর ইকবাল স্যার।

পঠিত : ৪৮২ বার

মন্তব্য: ০