Alapon

আরবে যেভাবে ডাক ব্যবস্থাপনা চালু হলো



উমার রা.। ইসলামের মূলনীতি রক্ষায় তাঁর প্রচেষ্টা ছিল অন্যরকম অনুপ্রেরণাদায়ক।
তাঁর নিয়োগকৃত বিভিন্ন গভর্নর, সেনানায়ক ও প্রতিনিধিগণ জনগণের সাথে কীরূপ আচরণ করছে তা তিনি জনগণ থেকে শুনতে চাইতেন। তারা কি বাদশাহ হয়ে গেছে নাকি জনগণের খাদেম হয়ে আছে তা তিনি নিজে পরখ করতেন। তিনি এই কাজকে আমানত মনে করতেন।

তাঁর নিয়োগকৃত গভর্নররা যদি কারো প্রতি জুলুম করে তিনি এটাকে নিজের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতেন ও এর বিরুদ্ধে শক্ত, যথাযথ পদক্ষেপ নিতেন।

তাকে প্রায়ই তাঁর সংবাদবাহকদের বিভিন্ন গভর্নরের কাছে রাষ্ট্রীয় কাজে পাঠাতে হতো। তিনি এই সংবাদবাহকদের কাজে লাগাতে চাইলেন জনগণের খবর জানতে। তিনি তাঁর সংবাদবাহকদের এই কাজে নিযুক্ত করেন।

তাঁর সংবাদবাহকরা যখন কোনো প্রদেশে যেতেন তখন মসজিদে দাঁড়িয়ে জানাতেন, আমি আমিরুল মুমিনিনের কাছ থেকে এসেছি। কয়েকদিন পর ফিরে যাবো। তোমরা যারা তাঁর কাছে কোনো খবর পাঠাতে চাও অথবা যেসব কথা তোমরা এই গভর্নরকে বলতে পারছো না সেসব কথা লিখে দাও। আমি তোমাদের চিঠি উমারের কাছে পোঁছে দেব।

জনগণের কথা শোনার জন্য উমার রা. এই দারুণ পলিসি গ্রহণ করেন। এই মাধ্যমে অনেক অভিযোগ জমা পড়ে। উমার রা. তদন্ত সাপেক্ষে সেইসব অভিযোগের জন্য গভর্নরদের ডেকে শাস্তি দিয়েছেন।

কয়েক বছরের মধ্যে এই চিঠি চালাচালি শুধু শাসক-জনগণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। জনগণ যে কোনো প্রদেশের জনগণের কাছে চিঠি লিখতে শুরু করলো। উমার রা.-এর সংবাদ বাহকেরা চিঠিগুলো মদিনায় নিয়ে আসতেন। সেখান থেকে আবার চিঠি তার গন্তব্য প্রদেশে চলে যেত।

এভাবে ডাক ব্যবস্থাপনা চালু হয়ে গেল বিনামূল্যে। উমার রা. যখন দেখলেন এই ডাক ব্যবস্থাপনা থেকে জনগণ উপকৃত হচ্ছে তখন তিনি এই ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিলেন। জনগণ এবার শুধু চিঠি পাঠানোতে সীমাবদ্ধ থাকে নি। তারা পণ্যও পাঠাতে শুরু করলো। আরবে চালু হয়ে গেল বিশ্বস্ত ডাক ব্যবস্থাপনা।

পঠিত : ২৫৬ বার

মন্তব্য: ০