Alapon

আজ শেখ মুজিবের বাকশাল দিবস



আজ ২৫ জানুয়ারি। বাকশাল দিবস।
১৯৭৫ সালের এই দিনে সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিব বাংলাদেশ থেকে জনগণের শাসন তুলে দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করে। সকল সংসদ সদস্যকে বাকশালে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়। শেখ মুজিবের বাংলাদেশের বাদশাহ হওয়ার খায়েশ ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বামপন্থীরা নস্যাত করে দেয়। এরপর বাকশাল আপনাআপনি বিলুপ্ত হয়।

১৯৭৫ সালের এইদিনে তৎকালীন আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এতদসংক্রান্ত বিলটি [সংবিধান (চতুর্থ সংশোধনী) আইন ১৯৭৫] উত্থাপন করেছিলেন। একই দিনে তা অধিকাংশ সংসদ সদস্যদের ভোটে পাস হয়েছিল। একই দিনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান তা অনুমোদনপূর্বক কার্যকর করেছিলেন।

সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর উল্লেখযোগ্য দিকগুলো ছিল:
* এ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছিল। এই দলের নাম রাখা হয়েছিল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে সকল সাংসদকে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। অন্যথায় সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাওয়ার বিধান সংবিধানে সংযোজন করা হয়।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে সরকারি চাকুরিজীবীরা রাজনীতি করার সুযোগ প্রদান করা হয়। তাদের বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার প্রবিধান করা হয়। এতকাল সরকারি কর্মকর্তাদের রাজনীতি করা নিষিদ্ধ ছিল।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ ব্যতিরেকে সকল রাজনৈতিক দলকে বেআইনী ঘোষণা করা হয়।

* এই সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে থাকার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছিল।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে সকল বিচারপতির নিয়োগ ও অপসারণের মকল ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংকুচিত করা হয়েছিল। বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকার বলবৎ করার যে অধিকার বিচার বিভাগের ছিল তা রদ করা হয়েছিল।

* সংবিধনের এ সংশোধনীর মাধ্যমে সরকারের সাংগঠনিক কাঠামোতে উপ-রাষ্ট্রপতির পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে উপরাষ্ট্রপতি নিয়োগের ও অপসারণের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছিল।

* এই বিধান যোগ করা হয়েছিল যে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণে বাধ্য থাকবেন না।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে ২৫ জানুয়ারি, ১৯৭৫ হতে সংসদের মেয়াদ আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়।

* এ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনের পদ্ধতি আরও জটিল করা হয়েছিল।

পঠিত : ২২৩ বার

মন্তব্য: ০