Alapon

গণতন্ত্রের স্বরূপ

প্রধান বিচারপতি মোল্লা আব্দুল হাকিম হক্কানি হাফিজাহুল্লাহ বলেন, আধুনিক গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার পক্ষে মৌলিকভাবে শরয়ী কোন দলিল নেই। এর সাথে উম্মতে ইসলামীরও কোন পরিচয় নেই। যদি এর ভিতর কল্যান থাকতই, তবে আল্লাহর রাসুলের সাহাবায়ে কেরাম এই পদ্ধতি থেকে বিরত থাকতেন না। এটি সুনিশ্চিতভাবে কুফফারদের আবিষ্কৃত জাহেলি গণতান্ত্রিক নিজামের অংশ। সুতরাং মুসলিমদের জন্য এর উপর আমল করা কোনভাবেই উচিত নয়।

এরপর তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ার কিছু ফাসাদ তুলে ধরেন। এর মধ্যে অন্যতম হলঃ
১। এই প্রক্রিয়া মুসলিমদের ভিতর নিকৃষ্ট বিভেদ ও নিন্দনীয় তাআসাব্বুত তথা দলাদলি সৃষ্টি করে। এই ধরণের গোত্রপ্রীতি ও দলাদলিলকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জাহেলি দূর্গন্ধময়  আহবান বলে আখ্যায়িত করেছেন। ( সহিহ বুখারি, ৪৯০৫)

২। প্রচলিত গণতান্ত্রিক নির্বাচন জ্ঞানী আলেম ও জাহেল ফাসেক, পুরুষ ও নারী, মুমিন ও কাফের- এসবের মাঝে সমতার ভিত্তিতি অনুষ্ঠিত হয়। সকলকেই এখানে এক পাল্লায় রাখা হয়। এটি ইসলামের শিক্ষা থেকে বিকৃত-বিচ্যুত পদ্ধতি। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, আপনি বলুন! যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান? ( সুরা যুমার, আয়াত ৯)

সুতরাং সৎ, সম্মানিত এমনকি প্রত্যেক মুমিনের জন্যই এই ধরণের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রবেশ করা উচিত নয়। কারণ এতে প্রবেশকরণ মূলত এর হর্তাকর্তাদের সহায়তা করা। তাছাড়া এই নির্বাচন প্রক্রিয়ার ( ইসলামী দলগুলোর নয়) মৌলিক উদ্দেশ্য হল, মানবরচিত বিধিবিধানকে বিচারক বানানো। আর আমরা মুসলিমরা মানবরচিত বিধানকে বিচারক বানাতে পারি না। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা কি জাহেলিয়াতের বিধান কামনা করে, মুমিনদের জন্য বিধানদানে আল্লাহ অপেক্ষা উত্তম আর কে আছে! ( সুরা মায়েদা, আয়াত ৫০)

এরপর তিনি এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহর বিখ্যাত তাফসির তুলে ধরেন।

সূত্রঃ আল ইমারাতুল ইসলামিয়্যাহ ওয়া নিযামুহা, ৭৪-৭৬ পৃ।

মূলত এটাই হল প্রচলিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মৌলিক বিধান। ইসলামী দলগুলো বিভিন্ন ব্যাখ্যা আর কারণ দর্শানোর মধ্য দিয়ে এতে অংশগ্রহণ করে থাকে। সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য আর কতটা না- সেটা পরের বিষয়। কিন্তু এসব তাবিলাতের আড়ালে সাধারণ মুসলিমদের কাছে মৌলিক বিধান প্রচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাবিলের মাধ্যমে গ্রহণ করা বিষয়ই মৌলিক আক্বিদা আর কর্মে পরিণত হচ্ছে।

পঠিত : ৮৬০ বার

মন্তব্য: ০