Alapon

কোমল পানিয়োর ক্ষতির মাত্রা ধারনার বাহিরে!!!

সাম্প্রতিক গবেষণায় চিকিৎসকেরা জানতে পেরেছেন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কারও যদি প্রতিদিন কোল্ড ড্রিঙ্ক খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে বাবা বা মা হাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। কারণ... গবেষণাটি অনুসারে শুধু কোল্ড ড্রিঙ্ক বা সোডা নয়, মিষ্টির মাত্রা বেশি রয়েছে এমন যে কোনও ধরনের পানীয় বেশি মাত্রায় খেলে স্পার্ম কাউন্ট যেমন কমে, তেমনি মেয়েদের শরীরেও এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে প্রেগন্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনা চোখে পরার মতো কমে যায়। যারা সন্তান নেওয়ার কথা ভাবছেন, তারা দয়া করে এই ধরনের পানীয় খাওয়ার থেকে নিজেদের বিরত রাখুন। সেই সঙ্গে অতিরিক্তি ওজন কমিয়ে ফেলার পাশাপাশি মাত্রাতিরিক্ত কফি পান, অ্যালকোহল সেবন এবং ধুমপানের মতো কু-অভ্যাস থেকে দূরে থাকুন।
গবেষকরা আরও লক্ষ করেছেন যেসব মহিলারা দিনে মাত্র এক বোতল কোল্ড ড্রিঙ্ক পান করেন, তাদের সন্তান ধারণ করার ক্ষমতা প্রায় ২৫ শতাংশ কমে যায়, যেখানে পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে প্রায় ৩৩ শতাংশ। এবার বুঝতে পারছেন তো এই ধরনের ঠান্ডা পানীয়গুলি কতটা ভয়ঙ্কর। তবে এখানেই শেষ নয়! ভাববেন না কোল্ড ডিঙ্ক শুধু প্রসবের ক্ষেত্রেই বাঁধা দান করে। এই ধরনের পানীয় খাওয়া অভ্যাস থাকলে আরও নানাভাবে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। যেমন...
১. শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়: আমাদের মধ্যে অনেকেরই পিপাসার সময় প্রথম পছন্দ কোল্ড ড্রিঙ্ক। এমন অভ্যাস কিন্তু একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এই ধরনের পানীয়তে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মস্তিষ্কের কাছে সিগনাল যায় যে শরীরে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে একের পর এক নানা ধরনের সমস্য়া দেখা দিতে শুরু করে।
২. হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়: প্রতিদিন ২ ক্যান কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আর হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৫০ শতাংশ। তাহলে বুঝতেই পারছেন তো এমন ধরনের পানীয় হয়তো আপনাদের তেষ্টা মেটায়, মানসিক শান্তিও দেয়। কিন্তু বাস্তবে আপনাকে হার্টকে একেবারে অকেজ করে দেয়।
৩. কোষের মারাত্মক ক্ষতি হয়: ডায়েট সোডা এবং বেশিরভাগ কোল ড্রিঙ্কেই সোডিয়াম বেঞ্জোএট নামে একটি উপাদান থাকে, যা কোষের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।
৪. হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে: কোল্ড ড্রিঙ্কের স্বাদ বাড়াতে তাতে ফসফরিক অ্যাসিড নামে একটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই উপাদানটির মাত্রা শরীরে বৃদ্ধি পেলে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে। আর ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যেহেতু হাড়ের স্বাস্থ্যের সরাসরি য়োগ রয়েছে, তাই এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই হাড়ের ক্ষতি হতে শুরু করে। তাই এবার থেকে কোল্ড ড্রিঙ্ক পানের আগে এই বিষয়টি মাথা রাখতে ভুলবেন না যেন!
৫. রক্তচাপ বেড়ে যায়: ডায়েট সোডা এবং কোল্ড ড্রিঙ্কে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। তাই তো এমন ধরনের পানীয় বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা খুব বেড়ে যায়। ফলে ব্লাড প্রেসার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই কারণেই প্রেসারের রোগীদের কোল্ড ড্রিঙ্ক খেতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।
৬. টাইপ-২ ডায়াবেটিস হতে পারে: ঠান্ডা পানীয় পান মানেই লাইফ স্টাইল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়া, এই ধারণাটি বাস্তবিকই সত্য কিন্তু! কারণ বেশ কিছু গবেষণা পত্র ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণ করে ছেড়েছে যে, কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে শুধু কোলেস্টেরল বা হার্টে অ্যাটাকের সম্ভবনাই বাড়ে না, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাকাও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আসলে কোল্ড ড্রিঙ্কে প্রচুর মাত্রায় আর্টিফিশিয়াল সুইটনার ব্যবহার করা হয়, যা নানা দিক থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে।
৭. ওজন বৃদ্ধি করে: যেমনটা আগেও আলোচনা করেছি যে এই ধরনের পানীয়তে ক্যালোরি মাত্রা খুব বেশি থাকে। ফলে কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা বেশি মাত্রায় খেলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বিগড়ে যাওয়ার কারণে আরও নানা ধরনের রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়।
৮. কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: প্রতিদিন কোল্ড ড্রিঙ্ক খেলে চোখে পরার মতো কোলেস্টেরলের বৃদ্ধি ঘটে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। শুধু তাই নয়, একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে কোল্ড ডিঙ্ক খাওয়ার সঙ্গে স্ট্রোকেরও একটা যোগ রয়েছে। তাই সাবধান!
৯. দাঁতের ক্ষতি হয়: ডায়েট সোডায় অ্যাসিডিক এলিমেন্ট খুব বেশি থাকে। যে কারণে এই ধরনের পানীয় খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নানাবিধ দাঁতের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।
১০. শরীরের অস্বস্তি বাড়ে: কোল্ড ড্রিঙ্কের সঙ্গে অ্যালকোহল মিলিয়ে পান করলে শরীরের উপর বিরূপ প্রভাব পরে। তাছাড়া ডায়েট সোডায় এসপার্থেম নামে একটি উপাদান থাকে, যা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। তাই এবার থেকে ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার আগে একবার ভাববেন, আপনি বিষ পান করছেন না তো!
১১. কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যায়: বেশি মাত্রায় কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ডায়েট সোডা খেলে কিডনি ফাংশন ব্যাহত হয়। সেই সঙ্গে কিডনি স্টোনের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আসলে এই ধরনের পানীয়, ইউরিনে অ্যাসিড এবং খনিজের ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। যে কারণে কিডনি স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। 

কপিপোষ্ট 

পঠিত : ৭৮১ বার

মন্তব্য: ০