Alapon

সূরা আল কাহাফ কথন এবং আমার কিছু চিন্তা...



আলহামদুলিল্লাহ দিয়ে শুরু এমন পবিত্র কুরআনে পাঁচটি সূরা রয়েছে।সেইদিক অনুসারে এটি তৃতীয় এবং ধারাবাহিকতা অনুসারে এটি আঠারো তম সূরা কুরআনের।কাহাফ শব্দের অর্থ গুহা।এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয় এবং এর আয়াত সংখ্যা ১১০ ।

"সেদিন আমি(আল্লাহ) আকাশকে গুটিয়ে ফেলবো, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর। যেভাবে আমি সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব; প্রতিশ্রুতি পালন আমার কর্তব্য, আমি এটা পালন করবই।"

সূরার আলোচনা শুরু করার আগে কেন এই সূরাটি নাযিল হয়েছে সেই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা দরকার।

কুরাইশরা হারিস ও মুঈতকে মদীনার ইয়াহূদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলে: তোমরা তাদের কাছে গিয়ে মুহাম্মাদ (সাsmile-এর অবস্থা সম্পর্কে তুলে ধরবে। কারণ ইয়াহূদী আলেমদের কাছে পূর্ববর্তী নাবীদের সম্পর্কে জ্ঞান ছিল, তাই তারা সত্য মিথ্যা বলতে পারবে। সুতরাং মুহাম্মাদ (সাsmile সম্পর্কে তাদের মতামত কী তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে। এই দু’জন তখন মদীনার ইয়াহূদী আলেমদের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তাদের সামনে মুহাম্মাদ (সাsmile-এর অবস্থা সম্পর্কে সব কিছু তুলে ধরে, তারা এদেরকে বলে: দেখ আমরা তোমাদেরকে একটা মীমাংসার কথা বলছি। তোমরা ফিরে গিয়ে মুহাম্মাদকে তিনটি প্রশ্ন করবে। যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন, তবে তিনি সত্য নাবী এতে কোন সন্দেহ নেই। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন, তবে তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। তোমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবে:

(এক) পূর্বযুগে যে যুবকরা বেরিয়ে গিয়েছিল তাদের ঘটনা কী? কেননা এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর ঘটনা।
(দুই) তাঁকে ঐ ব্যক্তির অবস্থা জিজ্ঞেস করবে যিনি সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি পূর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে এসেছিলেন।
(তিন) তাঁকে তোমরা রূহের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। যদি তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন, তবে তোমরা তাকে নাবী বলে স্বীকার করে নিয়ে তাঁর অনুসরণ করবে। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তবে জানবে যে, তিনি মিথ্যাবাদী। এরা দু’জন মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরাইশদেরকে বলে: “শেষ ফায়সালার কথা ইয়াহূদী আলেমগণ বলে দিয়েছেন। সুতরাং চল আমরা তাকে প্রশ্নগুলি করি।

অতঃপর তারা রাসূলুল্লাহ (সাsmile-এর কাছে আগমন করে এবং তাঁকে ঐ তিনটি প্রশ্ন করে। তিনি তাদেরকে বললেন: তোমরা আগামী দিন এস, আমি তোমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেব। কিন্তু তিনি ‘ইন্শা-আল্লাহ’ বলতে ভুলে যান। এরপর পনের দিন অতিবাহিত হয়ে যায়, কিন্তু তাঁর কাছে না কোন ওয়াহী আসে, না আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তাঁকে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানিয়ে দেয়া হয়। এর ফলে মক্কাবাসী ক্ষুব্ধ হয় এবং পরস্পর বলাবলি করে: দেখ কালকের ওয়াদা ছিল আর আজ পনের দিন কেটে গেল, তবুও সে জবাব দিতে পারল না। এতে রাসূলুল্লাহ (সাsmile দ্বিগুণ দুঃখে জর্জরিত হতে লাগলেন।

একদিকে কুরাইশদেরকে জবাব দিতে না পারায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে। অন্যদিকে: ওয়াহী আসা বন্ধ হয়েছে। এরপর জিবরীল (আsmile আগমন করেন এবং সূরা কাহ্ফ অবতীর্ণ হয়। এতেই ইনশা-আল্লাহ তা‘আলা না বলায় তাঁকে ধমকানো হয়, ঐ যুবকদের ঘটনা বর্ণনা করা হয়, ঐ ভ্রমণকারীর বর্ণনা দেয়া হয় এবং রূহের ব্যাপারে জবাব দেয়া হয়। (তাফসীর ইবনে কাসীর খ. ৫/পৃ. ১৪২)

মহান রবের প্রশংসা দিয়ে সূরাটির আলোচনা শুরু। এরপর আল্লাহ তা'আলা তারপর আল্লাহ তা'আলা বলেন কুরআন হলো সঠিক পথের দিশারী, যেখানে কোন সন্দেহ নেই।
সৎ কাজের জন্য রয়েছে উত্তম পুরষ্কার, যেখানে তারা চিরকাল স্থায়ী হবে। আল্লাহ তা'আলার কোন শরিক নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়।কোন অন্যায় কাজে পূর্ব পুরুষদের অনুসরণ করা যাবে না।

এরপর আল্লাহ তা'আলা রাসূল (সাঃ) কে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, "কাফের-মুশরিকরা কুরআন ও হাদিসের ওপর ঈমান আনেনি বলে দুঃখ, চিন্তা ও করে নিজেকে ধ্বংস করে দিওনা।
শুরুতে আমরা দেখেছি তিনটি প্রশ্নের জবাবে এই সূরাটি নাযিল হয়। এই সূরাটিকে আমরা অংশকে ভাগ করতে পারি।

প্রথম অংশ: সূরার ৯-২৬ নং আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা “আসহাবে কাহ্ফের” ঘটনা উল্লেখ করেছেন। এটা ছিল একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা। কাহফ বলা হয় পাহাড়ের গুহাকে। সেখানে এই যুবকরা লুকিয়ে গিয়েছিল। আর “রকীম” দ্বারা উদ্দেশ্য কী এ নিয়ে অনেক মতামত পাওয়া যায়।গুহায় অশ্রয়গ্ৰহণকারীরা ছিল কয়েকজন যুবক।তারা সত্য দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে হিদায়াত লাভ করে। এই যুবকরা তাঁদের দীনকে রক্ষা করার জন্য নিজেদের কওমের নিকট থেকে পালিয়ে গিয়ে গুহায় আশ্রয় গ্রহণ করে। এই ভয়ে যে, না জানি তাঁদের কওমের লোকেরা তাঁদেরকে তাঁদের দীন থেকে বিভ্রান্ত করে ফেলে। সেখানে তাঁরা প্রার্থনা করেছিল যে, হে আল্লাহ তা‘আলা! আপনার পক্ষ থেকে আমাদের ওপর রহমত অবতীর্ণ করুন। আমাদেরকে আমাদের কওম হতে লুকিয়ে রাখুন এবং আমাদের এই কাজের পরিণতি ভাল করুন। অতঃপর তাঁরা সেখানে ঘুমিয়ে পড়ে আর এই ঘুমন্ত অবস্থায়ই বহু বছর অতিবাহিত হয়ে যায়।

এরপর আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে জাগ্রত করেন। আর তখন তাদের মধ্যে কোন প্রকারের পরিবর্তন সাধিত হয়নি। তারা ঘুমানোর সময় তাদের দেহ, চুল, চামড়া যেরূপ ছিল ঘুম থেকে ওঠার পরও সেরূপই রয়েছে। তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল। আচ্ছা বলত, আমরা কত সময় ঘুমিয়ে ছিলাম?

উত্তরে বলা হয়: একদিন বা একদিনেরও কিছু কম। কেননা, সকালে তারা ঘুমিয়ে গিয়েছিল, আর যখন জেগে ওঠে তখন ছিল সন্ধ্যা। তাই তারা সূর্যের ওপর অনুমান করে এ কথা বলেছে। অবশেষে এর সঠিক সিদ্ধান্ত আল্লাহ তা‘আলার দিকে ন্যস্ত করে। অতঃপর তারা তাদের ক্ষুধা মিটানোর জন্য তাদের মধ্য থেকে একজনকে মুদ্রাসহ বাজারে পাঠায় কিছু খাদ্য ক্রয় করে আনার জন্য এবং তাকে বলে দেয়, সে যেন খুব সতর্কতার সাথে কাজ করে। যতদূর সম্ভব জনগণের দৃষ্টি এড়িয়ে চলতে হবে, যাতে কেউ আমাদের খবর জানতে না পারে। কারণ যদি তারা আমাদের খবর জানতে পারে তাহলে কঠিন শাস্তি প্রদান করবে আর আমাদের দীনের ব্যাপারে বিভ্রান্ত করে ফেলবে। কারণ বাদশা দাকইয়ানুস, সে ছিল শির্কী মনোভাবাপন্ন এবং সে মূর্তিপূজা করত।

আর তাঁরা এই মূর্তিপূজোকে মানতে পারেনি বলেই তাদের দীন রক্ষার জন্য গুহায় আশ্রয় নেয়, যাতে তাদের দ্বারা কোন শির্ক না হয়ে যায়। আর আল্লাহ তা‘আলা এ বিষয়ে তাদের মনকে আরো দৃঢ় চিত্ত করে দিলেন যাতে তারা ভয় না পায়। আল্লাহ তাদের এ গুহায় সূর্যের মাধ্যমে আলো প্রবেশ করাতেন। মানুষেরা মনে করত যে, তারা জাগ্রত; মূলত তারা জাগ্রত ছিল না, তারা ছিল ঘুমন্ত। আর আল্লাহ এ অবস্থায়ই তাদের পার্শ্ব পরিবর্তন করাতেন ডানে ও বামে। আর তাদের সাথে একটি কুকুর ছিল। ঐ কুকুরটি তার সম্মুখের পা দু‘টি গুহার দ্বারে প্রসারিত করে রেখেছিল। মানুষেরা এই দৃশ্য দেখলে ভয় পেত। এটি ছিল একটি ভয়ানক দৃশ্য। তারা সে গুহায় ঐ ঘুমন্ত অবস্থায় তিনশত নয় বছর ছিল। আর তাদের সংখ্যা ছিল প্রথমে বলা হয় তিনজন ও চতুর্থজন ছিল তাদের কুকুর। পরবর্তীতে তা খণ্ডন করে বলা হয় পাঁচজন ষষ্ঠজন ছিল তাঁদের কুকুর। তবে তাদের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা ই ভাল জানেন এবং তারা কত বছর ঐ ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন তা-ও একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন। এভাবেই আল্লাহ স্বীয় ক্ষমতার বলে মানুষকে গুহাবাসীদের অবস্থা অবহিত করালেন। যাতে তারা আল্লাহ তা‘আলার ওয়াদা ও কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার সত্যতার জ্ঞান লাভ করে। কুরআনুল কারীমে একজন নাবীর ঘটনা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তিনি হলেন ইউসুফ (আsmile, এ ছাড়া কোন ঘটনার বিশদ বর্ণনা কুরআনে আসেনি। প্রত্যেক কাহিনীর ঐ অংশটুকুই বিভিন্ন স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে । সুতরাং এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা অনর্থক, কোন প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন থাকলে আল্লাহ তা‘আলা নিজে অথবা রাসূলুল্লাহ (সাsmile তা বলে দিতেন।ভবিষ্যতের কোন কাজের ব্যাপারে অবশ্যই ইনশাআল্লাহ তা'য়ালা বলতে হবে।

সূরার ২৭-৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা গুহাবাসীর ঘটনা বর্ণনা করার পর তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি যেন তাঁর প্রতি যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা তেলাওয়াত করেন। এখানে তেলাওয়াতের অর্থ হল ওয়াহী অনুসরণ করা, আদেশ-নিষেধগুলো পালন করা। মানুষের মাঝে দ্বীনি তাবলীগ করতে হবে তবে বৈধ পন্থায়, অবৈধ পন্থায় নয়। নিজেকে সৎ লোকদের সংস্পর্শে রাখতে হবে। যারা অসৎ লোক তাদের অনুসরণ করা যাবে না। যারা কুফরী করবে তারা জাহান্নামে যাবে আর যারা ভাল কাজ করবে তারা জান্নাতে যাবে এবং সেখানে অফুরন্ত নেয়ামত লাভ করে।

দ্বিতীয় অংশ:সূরার ৩২-৪৪ নং আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা দু’ ব্যক্তির উদাহরণ দেয়ার মাধ্যমে যারা গর্ব-অহঙ্কার ও আল্লাহ তা‘আলার সাথে শির্ক করে তাদের পরিণাম এবং যারা আল্লাহ তা‘আলার প্রশংসা করে ও তাঁর শুকরিয়া আদায় করে আর তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে না তাদের প্রতিদানের কথা তুলে ধরেছেন। তাহল আল্লাহ তা‘আলা এক ব্যক্তিকে দুটি উদ্যান দান করেছিলেন আর ঐ উদ্যানকে খর্জুর বৃক্ষ দ্বারা পরিবেষ্টিত করে দিয়েছেন এবং এ দু’ বাগানের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল শস্যক্ষেত্র। উভয় বাগান থেকে ফল আসত আর তার ফাঁকে ফাঁকে ছিল নহর প্রবাহিত। এই সকল কারণে বাগানের মালিক অহঙ্কারী হয়ে পড়ে এবং আল্লাহ তা‘আলার সাথে শরীক করে ও কিয়ামতকে অস্বীকার করে বসে। এমনকি সে অহঙ্কার করে বলে যে, আমি যদি আমার প্রতিপালকের নিকট প্রত্যাবর্তন করি তবে আমাকে তার চেয়ে আরও উত্তম জিনিস দেয়া হবে।

কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তার এই অহঙ্কারের কারণে তার সকল কিছু ধ্বংস করে দিলেন। তখন আল্লাহ তা‘আলার এই আযাব থেকে কেউ তা রক্ষা করতে পারেনি এবং সেও পারেনি। সেক্ষেত্রে সে যদি গর্ব-অহঙ্কার না করত এবং আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক না করত ও আল্লাহ তা‘আলার শুকরিয়া আদায় করত তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তার এই সমস্ত জিনিস ধ্বংস করতেন না। বরং তাকে তার চেয়েও আরো উত্তম জিনিস দান করতেন। সকল ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার হাতে।

সূরার ৪৫-৫৯ আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলা তার রাসূল(সাঃ) নির্দেশ দিচ্ছেন তিনি যেন বলে দেন দুনিয়া অতি সংক্ষিপ্ত, তারপরে তিনি কিয়ামতের ভয়বহতা বর্ণনা করেন এরপর আল্লাহ তা'আলা ইবলিসের ঘটনা ও আল্লাহ তা'আলা এক, তার কোন শরিক নেই, কুরআন হলো সত্যবাণী।অধিকাংশ মানুষ আযাব আসার পর ঈমান আনে যদিওবা সেই সময় ঈমান আনলে কোন কাজে আসবে না।

তৃতীয় অংশ:সূরার ৬০-৮২ নং আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আsmile-এর দু’ সমুদ্রের মিলনস্থলে খাজির (আsmile-এর সাথে যে সাক্ষাত হয়েছিল এবং তাদের মাঝে যে ঘটনা ঘটেছিল সে ঘটনা আলোচনা করেছেন।

সূরার ৮৩-৯৯ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা‘আলা বাদশা ‘যুল-কারনাইন’ এর ঘটনা উল্লেখ করেছেন। যার সম্পর্কে ইয়াহূদীদের কথামত মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ (সাsmile-কে জিজ্ঞেস করেছিল। সে দ্বিতীয় জিজ্ঞেসার উত্তর এটি। তিনি একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশা, সৎ মু’মিন ব্যক্তি ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে পৃথিবীতে রাজত্ব ও কর্তৃত্ব দান করেছিলেন এবং তাঁকে ক্ষমতা দিয়েছিলেন যে, তুমি যেখানে খুশি সেখানে ভ্রমণ করতে পারবে। তিনি পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যদেশসমূহ জয় করেছিলেন। এসব দেশে তিনি সুবিচার ও ইনসাফের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সূরার ১০০-১০৬ নং আয়াতে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলা কাফিরদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করবেন উক্ত আয়াতগুলোতে তারই বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

১০৭-১০৮ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নামীদের কথা বর্ণনা করার পর উক্ত আয়াতগুলোতে যারা সৎ আমল করবে তাদের পুরস্কারের কথা বর্ননা করছেন। যারা ঈমানের সাথে সৎ আমল করবে তাদের আপ্যায়নস্বরূপ জান্নাতুল ফিরদাউস প্রদান করা হবে, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।

সারসংক্ষেপ: সূরাতে নাবী (সাsmile-কে সান্ত্বনা প্রদান, তারপর আসহাবে কাহফ-এর বর্ণনা, অতঃপর দুটি বাগানের মালিকের দৃষ্টান্ত, তারপর দুনিয়ার উপমা এবং সবশেষে যুলকারনাইন ও ইয়া’জূজ-মা’জূজের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে আরো কয়েকটি বিষয় আলোচনা করে সূরাটি শেষ করা হয়েছে।

কেন কাহ্ফ নামকরণ?
অত্র সূরাতে বাণী-ইসরাঈলের গুহাবাসিন্দা তথা “আসহাবুল কাহ্ফ” সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ফলে একে “সূরাতুল কাহ্ফ” নামে নামকরণ করা হয়েছে।

কোন আয়াতগুলি মুখস্থ থাকা জরুরি?
সূরার ১ম ও শেষ ১০ আয়াত।

কি ফযীলত আছে এই সূরার?
সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করলে বাড়িতে শান্তি ও বরকত নাযিল হয়। এ সূরার প্রথম ও শেষ দশ আয়াতের ফযীলতের ব্যাপারে হাদীসগুলো এভাবে বর্ণিত হয়েছে: যে ব্যক্তি সূরা কাহ্ফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করবে, সে ব্যক্তি দাজ্জালের ফিৎনা থেকে সুরক্ষিত থাকবে। (নাসাঈ হা: ৮০২৪, তিরমিযী হা: ২৮৮৬, সহীহ) সহীহ মুসলিমে শেষ দশটি আয়াত মুখস্তের এ ফযীলত বর্ণনা এসেছে (হাদীস নং ৮০৯)। যে ব্যক্তি জুমআর দিন সূরা কাহ্ফ পড়বে, তার জন্য আগামী জুমআহ পর্যন্ত একটি বিশেষ জ্যোতি আলোকিত হয়ে থাকবে। (সহীহুল জামে হা: ৬৪৭০)

মো: মুহিব্বুল্লাহ রোহান

পঠিত : ৩৪৭ বার

মন্তব্য: ০