Alapon

কোটা পদ্ধতিঃ কিছু কথা

  



সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা পদ্ধতি পুনর্মূল্যায়ন চেয়ে করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো.আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন।

আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইয়া।

এখলাস উদ্দিন ভুইয়া জানান, রিট আবেদনে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি-নাতনি, প্রতিবন্ধী, নারী, জেলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটাসহ সব ধরনের কোটা পদ্ধতি বাতিল চাওয়া হয়েছিল।

একই সঙ্গে কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করে ১৯৭২ সালের ৫ নভেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপন পুনর্মূল্যায়ন চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আবেদনে ভুল আছে বলে তা বাতিল করে দেয়া হয়।

গত ৩১ জানুয়ারি রিট আবেদনটি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আনিসুর রহমান মির, ঢাকাস্থ কুমিল্লা সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব দিদারুল আলম ও দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র সাব এডিটর আব্দুল ওদুদ।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে পশ্চাদপদ বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য কোটার পাশাপাশি নারী ও জেলা কোটা রয়েছে। সব মিলিয়ে কোটার সংখ্যা ৫৬ শতাংশ। নানা সময় দেখা গেছে সরকারের শেষ বছরে কোটা পদ্ধতি বাতিল বা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীদের একাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতেও এই আন্দোলন শুরু হয়েছে।

সবশেষ ৪ মার্চ রাজধানীর শাহবাগে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ’এর ব্যানারে। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পেলে সাধারণ প্রার্থীদের থেকে নিয়োগ দেয়া, কোটায় কোনো বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো একাধিক কোটার ব্যবহার না করা এবং সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছে।

নানা সময় দেখা গেছে আন্দোলনকারীরা মূলত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কোটার বিষয়টি মানতে চাইছে না। তাদের দাবি, এই ৩০ শতাংশ কোটার জন্য তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আপত্তি উঠায় এরও বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে দেশে।

১৯৭২ সালে এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, বেসরকারি, প্রতিরক্ষা, আধা সরকারি এবং জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা ও ১০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের জন্য কোটা প্রবর্তন করা হয়।

পরে বিভিন্ন সময়ে কোটায় সংস্কার ও পরিবর্তন করা হয়। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাদপদ জেলাগুলোর জন্য ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ চাকরি সংরক্ষিত রয়েছে।

রিট আবেদনে এই কোটাকে প্রথা সংবিধানের ১৯,২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছিল বলে রিটকারীদের আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূইয়া সাংবাদিকদেরকে জানান।

পঠিত : ৫১৮ বার

মন্তব্য: ০