Alapon

প্রচারবিমুখ এক বিজ্ঞানী চলে গেলেন

বাংলাদেশের একজন বিজ্ঞানী মারা গেছেন। কোন রূপকথার বিজ্ঞানী নন, সত্যিকারার্থে বিজ্ঞানী। তার নাম ডা. রফিকুল ইসলাম। তিনি ওরস্যালাইনের আবিষ্কারক।

ওরস্যালাইন একেবারে সাধারণ একটা ঔষধ তাই না? গ্রামের মুড়ি মুরকির দোকানেও পাওয়া যায়। এই সাধারণ ওরস্যালাইন আবিষ্কার করে ১৯৭১ সালে প্রায় এককোটি বাংলাদেশী শরণার্থীর মাঝে ডায়রিয়ার প্রকোপ থামিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭১ সাল, আজকের মত অহরহ এন্টিবায়োটিকের বালাই ছিলনা তখন। ভিটে হারানো এক কোটি বাঙ্গালীর তো তখন ভাতই জুটে না ঔষধ খাবেন কীভাবে? পাবেনও বা কোথায়?

 

আধা লিটার পানিতে এক মুঠ চিনি বা গুড় এবং তিন আঙ্গুলের এক চিমটি লবণের মিশ্রণ। ঘরে বসে ডায়রিয়ার পানিশূণ্যতা দূরীকরণের উত্তম পন্থা। অথবা প্যাকেটজাত খাবার স্যালাইন যা একই ভাবে ডায়রিয়ায় পানিশূণ্যতার ঝুঁকি কমায়। এই পদ্ধতিগুলো এখন আমাদের সবারই জানা। এই সাধারণ পদ্ধতিটিই বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের ডায়রিয়ায় পানিশূণ্যতাজনিত প্রাণহানির সংখ্যা কমিয়েছে। আর এই পদ্ধতিটির আবিষ্কারক ডা. রফিকুল ইসলাম।

 

আজকে যখন ইয়েমেন বা আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোতে ডায়রিয়ায় হাজার হাজার শিশু মারা যাচ্ছে তখন ১৯৭১ সালে এই বিজ্ঞানী ডা. রফিকুল হাতে তৈরি ওরস্যালাইন আবিষ্কার করে লাখো মানুষকে ডায়রিয়ায় মৃত্যুঝুঁকি থেকে বাঁচিয়েছেন। ডা. রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে ইংল্যান্ড থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে সরাসরি ভারতে চলে যান বাংলাদেশী শরণার্থীদের চিকিৎসার লক্ষ্যে।

 

ডা. রফিকুল ইসলাম ১৯৩৬ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সোমবার সকালে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

 

আমরা তাঁকে চিনিনা, কারণ তিনি কল্পকাহিনী লিখেননি, নিজের মানবপ্রেম ও দেশপ্রেম দিয়ে বাস্তবতাকে গড়েছেন। প্রয়াত বিজ্ঞানী ডা. রফিকুল ইসলামের আত্মার শান্তি কামনা করছি, আল্লাহ তাঁকে তাঁর নেক কাজের যথোপযুক্ত পুরস্কার দান করুন। আমীন। 

পঠিত : ৫৫৯ বার

মন্তব্য: ০