Alapon

সার্টিফিকেট যথেষ্ট নয়, ভালো মানুষ হতে হবে।চতুর্থ এবং শেষ পর্ব।

ভালো মানুষ বানাতে পরিবারের ভূমিকা:-
একজন শিশুর পড়াশোনার হাতেখড়ি পরিবার থেকেই হয়।যদি শিশু পরিবার থেকে ভালো কিছু শিখতে পারে তাহলে পরবর্তীতে তাকে এই শিক্ষা ভালো মানুষ বানাতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।দুঃখের বিষয় হলো বর্তমানে মর্ডান ফ্যামিলি গুলোতে আকাশ সংস্কৃতির ভয়াল থাবার কারণে শিশুদের মস্তিষ্কের উপর এর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে।ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা হিন্দি ভাষায় কথা বলে অনায়াসে।কিন্তু বাংলা কথা বলতে তাদের দাঁত ভাঙ্গার অবস্থা সৃষ্টি হয়।সিরিয়াল গুলো দেখে মায়েরা স্বামীদের সাথে প্রায়ই ঝগড়ায় লিপ্ত হয়।এর প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয় পরিবারের ছোট সন্তানরা।ফলে তাদের মধ্যে জম্ম নেয় চরম হতাশা।শিশুটি বড় হলে এই হতাশা তাকে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে সাহায্য করে।এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে।পরিবারে দেশীয় ও মার্জিত সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে হবে।সন্তানের সমস্যা গুলোর ব্যাপারে মনোযোগ রাখতে হবে।সন্তানের সহপাঠীদের ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।তা না হলে সন্তান বিপথগামী হবে সহজেই।কেননা মানুষ সঙ্গীর অনুসরণ করে বেশি।আজকাল দেখা যায় মা-বাবার অলসতাকে পুঁজি করে সন্তান তথ্য প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারের মাধ্যমে মারাত্মক অপরাধে নিজেকে জড়িয়ে নিচ্ছে।বিভ্রান্তমূলক লেকচার শুনে কেউ নাম লেখাচ্ছে উগ্রবাদে।আবার অনেকে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা অশ্লীল ওয়েব কন্টেন্ট গুলো দেখে উৎসাহিত হচ্ছে ইভটিজিং,ধর্ষনের মতো সমাজবিরোধী কাজে।সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করলে সে বুঝবে সৎ সঙ্গীর গুরুত্ব। কেননা আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,"হে মুমিনগণ,আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও"(সুরা তাওবা-১১৯)
তাই সন্তানকে ভালো মানুষ বানাতে হলে পারিবারিক ভাবে নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্হা করতে।
এখন আধুনিক যুগ।শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে আরো হবে।গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার সৃষ্টি হচ্ছে।আবিষ্কার হচ্ছে বিজ্ঞানের লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন অজানা রহস্য।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যুগে যুগে শিক্ষা ব্যবস্হার যে ক্রমবিকাশ হয়েছে তার সঠিক প্রতিফলন ঘটেছে রাসূল সা. এর নবুওত প্রাপ্তির পর সৃষ্টি হওয়া সোনালী সমাজে।এর পরে অতিক্রম হয়েছে বহু যুগের।হয়েছে সমাজের নানা উত্থান পতন।কিন্তু সাধন হয়নি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।এ যুগে শিক্ষার মূল ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে সেক্যুলারিজমকে।যার প্রেক্ষিতে শিক্ষা ব্যবস্হায় নামে মাত্র ধর্মীয় শিক্ষার বিতরণ হচ্ছে।এই বিষয়ে আমেরিকার বিখ্যাত শিক্ষাবিদ প্রফেসর জেফ্রি লং বলেন,"পৃথিবীর মানুষ যতবেশি শিক্ষিত হচ্ছে ধর্ম থেকে ততবেশি দূরে সরে যাচ্ছে"।পরিতাপের বিষয় হলো আজকে শিক্ষাকে শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের মাধ্যম হিসেবে নেওয়ায় নৈতিকতা অর্জনের পথ কে আমরা ভুলতে বসেছি।এই শিক্ষার মাধ্যমে জাগতিক চাহিদার ১০০%পূরণ হলেও অনাদরে,অবহেলায় থেকে যাচ্ছে আত্মিক চাহিদা।নৈতিকতাহীন শিক্ষা গ্রহণ করে যেসব মস্তিষ্ক উর্বর হচ্ছে সবগুলোই বস্তুতান্ত্রিক চেতনা লালন করছে।আত্মার খোরাক পূরণে ব্যর্থ এসব মস্তিষ্ক।তাই শান্তির পৃথিবীতে অশান্তির দাবানল বৃদ্ধি পাচ্ছে।অতএব আমাদেরকে শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের নেশা ভুলে গিয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করার শপথ নিতে হবে।তাহলেই মিলবে কাঙ্খিত মুক্তি।জাতি পাবে ভালো মানুষ।
শেষ...

পঠিত : ১৭৮ বার

মন্তব্য: ০