উন্নয়নশীল দেশ প্রসঙ্গে কিছু কথা
তারিখঃ ৩০ নভেম্বর, -০০০১, ০০:০০
১- উন্নয়নশীল হওয়া আমাদের জন্য কোনভাবে উপকারী নয়। এতে রপ্তানী আয় কমে যাবে এবং বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার জন্য শর্তগুলো কঠিন হয়ে যাবে। সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে গিয়ে ভ্যাট আদায় অনেক বাড়িয়ে দিবে। ভোগান্তি হবে জনগণের।
২- আমাদের কেউ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেনি। জাতিসংঘ বলেছে বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ প্রথমবারের মত উন্নয়নশীল হওয়ার শর্তগুলো পূরণ করেছে। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে ছয় বছর। তাহলে তারা বিবেচনা করবে।
জাতিসংঘের ওয়েবসেইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত পাচঁটি দেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, বতসোয়ানা, কাবো ভার্দে, গিনিয়া, মালদ্বীপ এবং সামোয়া।
ভেনুয়াতু এবং অ্যাঙ্গুলা আগামি তিন বছরের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নাম লেখাবে।
বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং লাও পিপল’স ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের শর্তাবলী পূরণ করলেও তাদেরকে উত্তরণের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করার জন্য দ্বিতীয়বার এই শর্তাবলী পূরণ করতে হবে। আর উন্নয়নশীল দেশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির জন্য ছয় বছর এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
৩- সরকার উন্নয়নশীল হয়ে গেছি বলে আগেই প্রচার করছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার জন্য। যদিও ওরা ইলেকশনের উপর নির্ভর করে না তদুপরি ইলেকশন উপলক্ষে কিছু কথা বলতে হয় সেই কথায় উন্নয়নশীল উন্নয়নশীল বলে জিকির করবে।
৪- আরেকটা ব্যাপার থাকতে পারে সেটা হলো সরকার এখন থেকেই উন্নয়নশীল হয়ে গেছি বলে সব জায়গায় ভ্যাট আরোপ করতে পারে।
৫- উন্নয়নশীল হয়ে গেছি বলে আজ উৎসব হবে। উৎসবকে ঘিরে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হলো। ব্যাগ নিষিদ্ধ হলো। আরো আরো কড়াকড়ি তৈরী হলো। জনগণ আতঙ্কে জরুরী প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিল।
এটা তো উৎসব হওয়ার কথা। বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার হওয়ার কথা মানুষের। কিন্তু হচ্ছে তার উল্টো। কারণ এদেশে উৎসব মানেই নিরাপত্তাহীনতা। এদেশে ৭ মার্চের ভাষণের উতসবে নারী নির্যাতিত হয়, ১৭ মার্চে শিশু দিবসে নারী নির্যাতিত হয়। পহেলা বৈশাখের মিছিলের সীমানা করে দিতে হয়, নইলে সেখানেও তাহাররুশ চলে।
আর মানুষে মানুষে খুন খারাবি তো চলছেই। উৎসবের দিনগুলোতে অন্যায় অপরাধ বেড়ে যায়। রাষ্ট্রীয় গুম খুনের জন্য তো স্পেশাল বাহিনী আছেই। তারাও গুম খুন করছে দেদারছে। তাদের সহায়তা করার জন্য ডাক্তাররা আছে তারা সার্টিফিকেট দেয় কোন নির্যাতন ছাড়াই মানুষ সব এমনি এমনি মারা যাচ্ছে। নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন খালি চোখে দেখা গেলেও ডাক্তার ময়নাতদন্ত করে কিছু খুঁজে পায় না।
যে দেশে মানুষের নিরাপত্তার বেহাল দশা। আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিতে সে দেশে যে কেমন উন্নয়ন হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।
মন্তব্য: ০