Alapon

পাকিস্তানিদের খুশি করাই ছিলো জিয়া, খালেদা জিয়া এরশাদের এজেন্ডাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো পাকিস্তানী জান্তার এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ছিলো বলে অভিযোগ করে বলেছেন, তারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর যে এজেন্ডা ছিলো ভিন্নভাবে সেটাই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘এ দেশ দরিদ্র থাকুক, এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক। আর বাংলাদেশ যদি ব্যর্থ রাষ্ট্র হয় তাহলে পাকিস্তান খুশী হবে।’ তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর এ দেশের মানুষ কষ্ট ভোগ করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই জনগণ বুঝতে পারে সরকার মানে জনগণের সেবক।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী হিসেবে পাকিস্তানকে খুশী করাই ছিলো জিয়া, খালেদা জিয়া এবং এরশাদের এজেন্ডা।

শেখ হাসিনা গত ২৪ মার্চ বিকেলে জাতীয় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা গণহত্যায় যুক্ত এবং যারা মদদ দানকারী উভয়েই সমান দোষে দুষ্ট। তাদের এই অপকর্মের কথা জাতি যেনো ভুলে না যায়। আর প্রজন্মে পর প্রজন্ম যেন এই কথাটা মনে রাখে- কারা এবং কেনো এই দেশে গণহত্যা ঘটিয়েছিল এবং তাদের বিচার যেনো এই মাটিতে চলতেই থাকে। তাদের কোন ক্ষমা নেই। তাদের বিচার হবেই।
শেখ হাসিনা বলেন, গণহত্যায় মদদদানকারীরা ঘৃণার পাত্র। এই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। কারণ আমাদের মা-বোনদের ওপর যেই অত্যাচার চালানো হয় তা আমরা চোখে দেখেছি। যা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।
২৫ মার্চের নির্মমতার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বাড়ির আশপাশে সব বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ৩২ নম্বরের বাড়িতে আক্রমণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অথচ আমাদের দেশেরই কোন কোন নেতা-নেত্রী, এমনকি খালেদা জিয়া নিজেই সন্দিহান- ৩০ লাখ লোক নাকি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয় নাই। তারা তো নিজেরাই মানুষ খুন করে অভ্যস্ত, তারা তো নিজেরাই মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তাদের পক্ষে এটা বলাটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় আদৌ তারা বিশ্বাস করে কি-না, আমার সন্দেহ।
তিনি বলেন, প্রত্যেক জায়গায় যারা গণহত্যায় শামিল ছিল তাদের মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা বড় বড় পদ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। এই গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জিয়াউর রহমান মন্ত্রী বানিয়েছিল, আবার খালেদা জিয়াও বানিয়েছিল। যেনো তারা আর লোক খুঁজে পেলো না। ওই গণহত্যাকারীরাই ছিল তাদের পেয়ারের লোক।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। পাকিস্তানের পাসপোর্টসহ বাংলাদেশ থেকে চলে গিয়েছিল গোলাম আযম, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেই গোলাম আযমকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে। বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন করে ওই যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার সুযোগ তৈরি করে দেয় জিয়াউর রহমান।
দেশে এক সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বলাটাও যেন অপরাধ ছিল কারণ সে সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন পাকি (পাকিস্তান) প্রেমে যারা হাবুডুবু খেয়েছে তাদেরও উপযুক্ত জবাব বাংলার মানুষকে দিতে হবে। তাদেরও শাস্তি দিতে হবে। তাদের ওই পাকি প্রেম ভুলিয়ে দিতে হবে। এই বাঙালি যদি এটা না পারে তাহলে নিজেদের অস্তিত্ব থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসংগে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যে আলোকে বলেন, আমাদের কেউ যে দাবায়ে রাখতে পারবে না, সেটা আমরা বিশ্বে প্রমাণ করেছি। আমরা আজ উন্নয়নশীল দেশ।

তিনি বলেন, এই উন্নয়নশীল দেশের যে মর্যাদা আমরা অর্জন করেছি সেটা ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো এবং সেই সময়টায় বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত। আর ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। সেভাবেই ইনশাল্লাহ দেশকে আমরা গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলের নেতা-কর্মীদের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেব না মিলিয়ে দেশের জন্য কাজ করে যাবার আহবান জানিয়ে
পাকি-প্রেমীদের উপযুক্ত শিক্ষা আমরা দিতে বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যেমন বাংলাদেশ বিশ্বে মর্যাদা পেয়েছে তেমনি যখন বাংলাদেশের সন্মান আরো বাড়বে, তখন হয়তো সেই পাকি-প্রেমীরা হাবুডুবু খেতে খেতে ডুবেই যাবে- সেটাই আমরা চাই।

পঠিত : ৩৬৬ বার

মন্তব্য: ০