Alapon

মুসলমানদের কে 'প্রতিক্রিয়াশীল' বলে গালি কেন?

মুসলমানদের কে 'প্রতিক্রিয়াশীল' বলে গালি কেন দেয় তার একটা যৌক্তিক দিক আপনাকে দেখাই। মাথা ঠান্ডা করে খেয়াল করেন। ধরেন শবে বরাতের রাত। সবাই চিল্লাচিল্লি শুরু করলেন এইটা বিদয়াত। এইটা বিশেষ কোন কিছু না। প্রতিরাতে ইবাদত করলেই সাওয়াব হয়। এইটা গুনাহ বিদয়াত এইটা খারাপ ব্লা ব্লা ব্লা।

লোকজন দিলো শবে বরাত ছেড়ে। ভালো কথা। এখন সমস্যা হলো তাহাজ্জুদ তো প্রতিদিনই বরকত ময়। তো জনাব আপনার ওয়ালে তো মাঝে মাঝে তাহাজ্জুদ কে জনপ্রিয় করতে কোন পোস্ট দেখি না। আপনি শুধু দেশে বিদেশে বিভিন্ন সময় যেসব ঘটনা ঘটে এর পক্ষ বিপক্ষে 'প্রতিক্রিয়া'ই দেখিয়ে যান কেমল। কাউকে ভালো কোন কাজে অনুপ্রাণিত করতে সময় নিয়ে সুন্দর করে ধারাবাহিক ভাবে কিছু উপস্থাপন করার সময় আপনার হয় না। সময় সুযোগ বুঝে সুন্দর পন্থায় কিভাবে আপনি মানুষের কাছে  ইসলামের কথাটা বলবেন সেটা নিয়ে ভাবার সময় আপনার নাই।

আপনি শুধু 'মান্দার গাছের' মতো ঘষাঘষি করে মানুষের হৃদয়কে রক্তাক্ত করতে পারেন। একটা ব্যাপার কী জানেন আপনি যখনই কারও সদিচ্ছা বা আগ্রহকে পা দিয়ে দলে আপনার মতটা জোরগলায় তার উপর চাপিয়ে দিলেন তখন সে কখনোই আপনার মতকে শ্রদ্ধা করতে পারবে না। কারণ আপনার আচরণ তার প্রতি কল্যাণকামীদের মতো মনে হয় নি।

একটা ধর্ষণ হলো। মুসলিমরা যদি একাট্টা হয়ে সবাই মিলে দাবী তুলে দোষীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে বাধ্য করতে পারেন তার জন্য চরমতম শাস্তি নিশ্চিত করতে পারেন। সেই নারী শুধু না সমাজের সব নারী ইসলামের প্রতি অনুরক্ত হয়ে যাবে। পরবর্তীতের পোষাক ও মানসিকতার পরিবর্তনেও সে ইসলামের মতকে পছন্দ করবে এটাই যৌক্তিক। এখন কি হচ্ছে সব দোষ ভিক্টিমের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে অপরাধী স্বাভাবিক ভাবেই আড়াল হয়ে যাচ্ছে। ফলাফলটা কী মেয়েটা তো বিচার পাচ্ছেই না অন্য নারীরাও দেখছে এইসব 'তথাকথিত' ইসলাম পন্থীরা কতোটা উগ্রভাবে তাদের দোষারোপ করে যাচ্ছে। তখন যদি তাদের কাছে ইসলামকে 'বর্বর ধর্ম' হিসেবে মনে হয় তবে সে দোষ কী তাদের একার?

গলাবাজি করে আর যাইহোক মানুষের হৃদয়ে ইসলাম প্রবেশ করাতে পারবেন না। যদি বিশ্বাস করেন ইসলাম কল্যাণের ইসলাম মুক্তির; তবে সব মানুষকেও তো সে বোধটা অনুধাবনের সুযোগ দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো কথা বলার সময়টা বুঝতে হবে। বিচারকের আসন থেকে চাপিয়ে দিয়ে নয় নির্যাতিতের দিক থেকে বুঝতে হবে যে কী করণীয়। নাহয় দিন শেষে সামগ্রিক ভাবেই ইসলাম সাধারণ শিক্ষিত মানুষের কাছে 'ভয়ংকর কিছু' তে পরিণত হবে শীঘ্রই।

আপনারা নাস্তিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বসে আছেন। কিন্তু অজ্ঞানতা আর পারিপার্শ্বিক কারণে কতো কোটি মানুষের বিশ্বাস যে ঐসব নাস্তিকের সাথে মিলে যায় তা কী জানেন? খেয়াল করুন আশে পাশে বুঝতে পারবেন। ইসলাম কোন উন্মাদনার নাম নয় যে নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করার সাথে সাথে পৃথিবীর আর সবার ঘাড়ে ছড়ি ঘোরানোর লাইসেন্স আপনি পেয়ে গেলেন! আগে নিজকে যথাযথ যোগ্য ও জ্ঞানী করে গড়ে তুলতে হবে। বিনয়ী হতে হবে। তবেই না মানুষ আওনাকে তাদের কল্যাণকামী বলে মনে করবে। তারপর হলো বিধান মানানোর ব্যাপার। আমরা চলনে বলনে পশুর মতো আর কাউকে বলবো তুমি এই বিধান পড়ে 'তাত্ত্বিক' মানুষের মতো আদর্শ মানুষে পরিণত হও। সেটা কিভাবে সম্ভব? তাছাড়া এটা কী আদৌ যৌক্তিক?

লিখেছেনঃ
আহমদ হাবিবুর রহমান

পঠিত : ৭২১ বার

মন্তব্য: ০